জয় বাংলা
Dear Diary,
This is my first night class on Technology at DREXEL UNIVERSITY, USA.
The things I ALREADY LEARNT about technology are:
- MS Word, typing, editing, printing
- Checking and replying email
- Online connecting
- PowerPoint presentaion
- Developing Software
- Webpage designing
- All technology that might be helpful in ELT
- All techniques and method(s), technologies that would be helpful in English Language Learning and Teaching.
x
The things I WANT TO LEARN in future are:
The things I HOPE TO LEARN are:
That's all for today.
Babul Nokrek (Megh)
চলো, আর কষ্ট না কুড়াই...
অনেক দূর চলে গ্যাছি অযথা পথ ভুলে...
ফেলে আসা পথে; চলো ফিরে যাই...
আর কষ্ট না কুড়াই...
জোছনার জলে ভিজে ভিজে
বাঁধিয়েছি প্রশস্তির অসুখ...
চলো আর না ভিজি ঐ বৃষ্টিতে...
যদিও ঘুড়ি উড়াইথাকে না সাথে লাটাই...
চলো ফিরে যাই..আর কষ্ট না কুড়াই...
যে পথে সবাই চলেরৌদ্র-তাপে, শীতল-বরিষায়..
চলো চলে যাই...
আর কষ্ট না কুড়াই...
যাওয়া হয়নি যে পথে
এতকিছু ভাববার বয়স নয় তখনো
ঠিকানা কি ভুল ছিলো? বুঝিনি এখনো.....
যে পথে হয়নি যাওয়া, আমায় কি পিছু ডাকে?
জানি না নিজেই আমি, কি করে বলি তোকে?
..যে পথে যাইনি আমি, সে পথও আমারি রয়
ভড় দুপুরেও কেমন কেমন উত্তাল হাওয়া বয়?..
পথে পথে, দিবা-রাতে, হয় যদিও দেখা
কথা বলি সঙ্গোপনে আজও একলা একা! ..
তুই ক্যানরে সে পথ হলি বল শুধু অকারণে?
চলেই যদি যাবি বন্ধু, বাসা বাধিস কেন মনে?..
কেন বসে গান করিস? ভরা জোছনায়?
কেন ফিরে ফিরে আসিস হিদয় আঙ্গিনায়?..
যে পথ ফেলে আসি, হাটি কেনো ঐ পথে?
ভুলিতে পারি না সে পথ, আজও কোনমতে!
মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী : ঘুম নেই আবিমায়----
গারো আদিবাসীরা প্রথম কবে মধুপুর, ভালুকা, ফুলবাড়িয়া, শ্রীপুর, ধনবাড়ি এবং মুক্তাগাছা থানায় পদার্পন করেছিল তা কেউই বলতে পারে না। তবে স্মরনাতীত কাল থেকে তারা এখানে বসবাস করে আসছে তা হলফ করেই বলা যায়। এক বন বিশেষজ্ঞের অভিমত, “মধুপুর এলাকাটি অসম্ভব রকম গভীর অরণ্যে আচ্ছাদিত ছিলো, এখানে কারোর পক্ষে বসবাস করা অসম্ভব ছিলো। এই গভীর অরণ্যে যাদের পদচিহ্ন প্রথমে পড়েছিলো তারা অবশ্য অবশ্যই গারো ছিলো তা নিশ্চিত করেই বলা যায়।” বন বিশেষজ্ঞের কথায় যুক্তি আছে।কিন্তু ঐসব আদিবাসীদের অস্তিত্ব আজ হুমকির সম্মুখীন। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল এদের সর্বহারা করার কাজে সর্বদাই ব্যস্ত।
এরসাথে যোগ হয়েছে সরকারী পর্যায়ের নিরন্তর অশুভ ফাঁদ পাতা ষড়যন্ত্র, একের পর এক নীল নকশা প্রণয়ন ও তার অমানবিক বাস্তবায়ন। এই করুন বাস্তবতার শিকার আবিমার জনগন পাকিস্তানী শাসনামলেও হয়েছে, ৭১’ এর পরেও হয়েছে এখন পর্যন্ত হচ্ছে।
মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, আবিমা এলাকায় আইয়ুব সরকার যে বিমান বাহিনীর জন্য ফায়ারিং রেঞ্জ করার মধ্য দিয়ে সেখানে গারোদের উচ্ছেদের জন্য নীলনকশা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে এমন অমানবিক ও নিষ্ঠুর ঘটনা এ বাংলার মাটিতে হয়েছে বলে আমার জানা নেই। ১৯৯৬ সালে রাজবাড়ি গ্রামের গারো আদিবাসীদের যে প্রথমে উচ্ছেদ নোটিশ দেয়া হয় সেখানে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রামবাসীদের গ্রাম ছেড়ে দিতে নিষ্ঠুর নির্দেশ দেয়া হয়। হাজার হাজার বছর ধরে তারা যে ভোগ দখল করে আসছিল সে সকল জমির, আনারস বাগানের, আম-কাঁঠাল বাগানের ক্ষতিপূরণ তাদের দেয়া হয়নি। তাদের প্রত্যেক পরিবারকে ২০০ থেকে ৭০০ টাকা করে শুধুমাত্র তাদের ঘরবাড়ির ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। ঐ বাজারে একটা ঘর তুলতেই ১০,০০০-২০,০০০ টাকার মত খরচ করতে হয়েছে আদিবাসীদের।তাদেরকে তৎকালীন পাক সরকার পূনর্বাসনের ব্যবস্থাও করেনি। তৎকালীন জেলা প্রশাাসকের কাছে আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক নির্দেশ দিয়েছিলেন উচ্ছেদিত ১১ পরিবারের জন্য ৩৩ একর জমির বরাদ্দ দিতে।
মাননীয়া প্রধনিমন্ত্রী, শুনে অবাক হবেন আমিন যখন জমি বরাদ্দ করার জন্য ঐ ১১টি পরিবারের কর্তাদের নিয়ে আমলীতলা গ্রামে গেল তখন দেখা গেল - আরেক আদিবাসী গ্রামের গারোদের ধানের জমিই তাদেরকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আদিবাসীরা অতটা স্বার্থান্বেষী নয় তা উচ্ছেদিত জনগণ প্রমাণ করে প্রতিবেশীর গারোদের জমি প্রত্যাখ্যান করে। তৎকালীন সরকার আসলে চেয়েছি, ষড়যন্ত্র করেছিলেন কিভাবে এক গ্রামের গারো আদিবাসীদের সাথে অন্য গ্রামের আদিবাসী ভাইদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম বাধানো যায়। তাদের ঐ অশুভ চক্রান্ত ব্যর্থ হয়েছিলো ৩৩ একর ভূমির ভাগের মধ্য দিয়ে। ‘ত্যাগই প্রকৃত সুখ’- তা ধর্মে আমরা পাই।কিন্তু ত্যাগেও যে অসুখ তা ঐ ১১ আদিবাসী পরিবার প্রমাণ করেছে। তাদের সেই ৩৩ একর জমির প্রমাণ পত্র ঐ আমিন কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে।
মাননীয়া বঙ্গবন্ধুকন্যা, গণপ্রজাতন্ত্রের মানসকন্যা, জননেত্রী শেখ হাসিনা, আপনি পারবেন ঐ ৩৩ একর জমি তাদের হাতে বুঝিয়ে দিতে? রাজবাড়ি থেকে ১১ গারো পরিবারকে উচ্ছেদ করা হলে তারা টাংগাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাঝামাঝিতে টেলকী নামক গ্রামে এসে পূনরায় বসতিস্থাপন করলো। কেউ কেউ জমি ক্রয় করলো, কেউ কেউ আত্মীয়দের জমিতে থাকলো। কিন্তু সেখানেও তাদের সুখ স্থায়ী হলো না। শুরু হলো ’৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধ। গারো আদিবাসী গ্রাম জ্বালিয়ে ছাড়খার করে দিল বর্বর পাক হানাদার বাহিনী। গুলি করে নির্বিচারে মেরে ফেললো তাদের পোষা গৃহপালিত গরু-ছাগল, শূকর সবকিছু। ওদের অপরাধ তারা মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছিল।কেউ কেউ গোপনে যুদ্ধে যোগ দিয়েছিল।
আমার প্রশ্ন যারা নিজেদের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে মুক্তি বাহিনীদের সাহায্য করেছিল তাদের আপনি কি বলবেন? যারা মুক্তি বাহিনীদের চাঁদা তুলে আহার যুগিয়েছে তাদের কি নামে অভিহিত করবেন? আমি জানি আপনি তাদের “মুক্তিযোদ্ধাই” বলবেন।’৭১- এ সবকিছু হারিয়ে রাজবাড়ি থেকে উচ্ছেদ হওয়া আদিবাসী গারোদের নতুন গ্রামে বসতি স্থাপন করলো টেলকির এক কিলোমিটার দক্ষিণে। নাম দেওয়া হলো নয়াপাড়া। কিন্তু সৈরশাসক এরশাদের তা সইল না। ১৯৮৪ সালে পূনরায় প্রথমবারের মত ২৪ ঘন্টার মধ্যে নয়া পাড়া ছাড়ার হুকুম জারি করলেন। জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের নেতা সর্বজন শ্রদ্ধেয় স্বর্গীয় পরেশ চন্দ্র মৃ, মিঃ অন্বেষণ চিরান, মিঃ মাইকেল সিমসাং, মিঃ পনেশ নকরে ক সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এর প্রতিবাদ করলেন। কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না। ফায়ারিং রেঞ্জের পরিমান বৃদ্ধির নাম করে অবর্ণনীয় অত্যাচার, উৎপীড়ন করে বিনা ক্ষতিপূরণে তাদের তৃতীয়বারের মত উচ্ছেদ করা হলো ১৯৮৬ সনে। এরই মধ্যে সেখানে ১৫ পরিবারের মত ছিলো। আপনার জ্ঞাতার্থে আমি তাদের প্রতি একটি প্রেরিত শেষ নোটিশটি তুলে দিলাম-
চ/গড়. ১০১(১০) উঃ. ১৭/৭/৮৬ এল.এ. কেছ নং ৩৬।৮৫-৮৬৮। প্রতি থৈলেশ মারাক,
পিতাঃ বজিন্দ্র সাংমা, সাং নয়াপাড়া।
এতদ্বারা আপনাকে জানানো যাইতেছে যে, মধুপুর উপজেলাধীন বেরীবাইড মৌজায় ১৮২ নং দাগের বনবিভাগের জমিতে যে ঘর দরজা ছিল উহা বিমান বাহিনীর বোম্বিং রেঞ্জের জন্য সরাইবার প্রয়োজন হয়। আপনার ঘর দরজার ক্ষতিপূরণ বাবদ ৪,৮৯৬/০০ টাকা প্রদান করা হইয়াছে। কিন্তু দেখা যায় যে আপনি এযাবৎ উক্ত জমিতে অবস্থিত ঘর দরজা খালি করেন নাই।
অতএব আপনাকে আগামী ২/৮/৮৬ তারিখে উক্ত ঘর দরজা নিম্ন স্বাক্ষরকারীর কিট খালি অবস্থায় বুঝাইয়া দেওয়ার জন্য বলা গেল। অন্যথায় আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হইবে।
সীল মোহর
ভূমি হুকুম দখল অফিসার
টাংগাইল
দেশবাসীর সকলের কাছে আমার প্রশ্ন ৪,৮৯৬/= কি হিসাবে একটা পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হলো। এ টাকায় তো একটা ছোট্ট ঘরও তোলা যাবে না। এক খন্ড জমিও কেনা যাবে না। তাদের ঘর বাড়ির টিন পর্যন্ত তারা জোর করে রেখে দিয়েছিল। তাদের বাড়ি ঘর অক্ষত অবস্থায় রেখে আসতে হয়েছিল। একজন বালক নিজের লাগানো একটা তেজপাতা গাছ কেটে ফেলে ছিলো এসবের প্রতিবাদে। তাকে আটক করে বলা হয়েছিল “তুমি এই গাছটা জোড়া লাগিয়ে বাঁচিয়ে তুলবে, তা না করতে পারলে তোমাকে এখান থেকে যেতে দেব না।” তাদের রেকর্ডভূক্ত জমির কাগজ পত্রও হিসাবের নাম করে নিয়ে নেওয়া হযেছে কিন্তু আর ফেরত দেয়া হয়নি। এক গারো দালাল তাদের এ কাজে সহায়তা করেছে। সে বলেছে, “রেকর্ডভূক্ত জমির কাগজ পত্র আমি ফেরত দিয়েছি।তৎকালীন জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হলে তিনি তাদের বলেন, “আপনারা বন বিভাগের লোকদের সাথে কথা বলে নিজেদের ব্যবস্থা করে নিন।”
বন বিভাগের লোকদের সাথে কথা বলা হয়েছে ঘর বাড়ি উঠানোর জন্য জমি ক্রয় করে ঘুষ ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার করে অনেকেই দিয়েছে কিন্তু তাতে লাভ হয়নি।নতুন ঘর তোলার অপরাধে বন উজার করার মিথ্যা অভিযোগে একেক জনের নামে ৫/৭টা করে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। মিঃ পনেশ নকরেক সেই ছেলে যে ছেলে তেজপাতা গাছ কেটে ছিলো। তার নামেই এখন ৭টা মিথ্যা মামলা। এ পর্যন্ত তাকে তার সব জমি ৮ বছরের জন্য বন্ধক দিতে হয়েছে ৬০ হাজার টাকায়। মামলা ব্যয় বহন করতে গিয়ে তার বাবা লক্ষাধিক টাকা খরচ করেও পার পায়নি। তাদেও সাথে কথা বলে জানা গেছে এ পর্যন্ত দু’দুবার জেলের ভাত খেয়েছে।
মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী মিথ্যা মামলায় জর্জরিত আবিমার এমন অনেক পনেশ নকরেক। কাঠ চোরের অভিযোগে ৬৫ বছরের বৃদ্ধাকে পর্যন্ত ৮২ দিন জেল খাটতে হয়েছে। মধুপুর থানা ছাত্রলীগের সাবেক গারো যুবনেতা চলেশ রিছিলকেও ৮২ দিন জেলে থাকতে হয়েছে, বন বিভাগের মিথ্যা মামলায় টাকা খরচ করতে হয়েছে কয়েক লক্ষ।
মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, আমার এক জ্যাঠাত ভাই মিঃ শিরিন নকরেক আজ ৪৪টি মিথ্যা মামলার আসামী হয়ে ৬-৭ বছর যাবৎ জেল খাটছে। আরো আপনার সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি মিঃ বিহেন নকরেক নামে এক গারো আদিবাসীকে লহরিয়া বিটের বনরক্ষীরা মিথ্যা অভিযোগে পেছন থেকে রাইফেল দিয়ে নৃশংস ভাবে গুলি করে হত্যা করেছে। প্রথিতযশা সাংবাদিক ফিলিপ গাইন এ নিয়ে ১২ই ডিসেম্বর সংখ্যায় সাপ্তাহিক Dhaka Courier পত্রিকায় “Organised Forest Plunders go Unpunished: Killing of Mandi Man Bihen Nokrek Justified” শিরোনামে লিখেছিলেন। পরবর্তীতে তার “The Last Forest of Bangladesh” বইটাতেও তা প্রকাশ করেন। আমি সেখান থেকেই কিছু লাইন উদ্ধৃতি দিচ্ছি, “Bihen Nokrek (35) of Joynaga chha, a remote village in the Madhupur forest was shot to death by the forest Department gurds in the wee hours on April 10, 1998. A one member judicial inquiry Committee headed by a Magistrate, gave only a final report which, according to a FD source, said that the fire [that killed Bihen Nokrek] was justified.”
মিঃ বিহেন নকরেকের ছয়জন ছেলে-মেয়ে এবং তার স্ত্রী এখন অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর ভাবে দিন কাটাচ্ছে মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী।আরো দেখুন প্রধানমন্ত্রী, “Jiren Nokrek and others of Joynagachha Village complained that the F D has filed a number of false cases against Jiren and other witnesses in order to handicap them from running the Bihen’s Murder case.”
আর একটু উদ্ধৃতি দিচ্ছি,“Bihen’s wife Jonilo Dalbot wanted justice but was quilled by the F. Departments promises of compensations. Jonilo complained that she has not received any compensation either in cash or kind as promised by the F D. she now realizes that it was nothing but a bluff of the F D."
মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, লহরিয়ার বিট অফিসার রফিকুল ইসলাম এরপর এখন যে বিট অফিসার আছেন, জবাইদ আলী, তিনি অভিযোগ করে বলেছেন যে বিহেন এবং অন্যান্যরা বনে গভীর রাতে কাঠ চুরি করতে গিয়েছিল। চুরেরা ছিলো সংখ্যায় বনরক্ষীদের থেকে অনেক। তিনি দাবি করেছেন, [যদিও তিনি স্পটে ছিলেন না] যে প্রথমে তারা বনরক্ষীদের ধারলো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করেছেন এবং তারা নিরুপায় হয়ে প্রান রক্ষার তাগিদে গুলি করেন। যদি তাই হয় তবে বিহেনের গুলি তো সামনে বুকের দিকে থেকে বিদ্ধ হবার কথা, পেছন দিক থেকে বিদ্ধ হলো কেন?
মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, আপনাকে মধুপুর, ফুলবাড়িয়া, মুক্তাগাছা এবং ভালুকা থানার অন্তর্গত গারো আদিবাসীদেরঅর্থনৈতিক দুর্দশার নিখুঁত চিত্র আমি তুলে ধরতে পারবো না। তবে এমনটি একটি গ্রামের চিত্র তুলে ধরতে পারবো যা থেকে আপনি সামগ্রিক অর্থনৈতিক চিত্র ধারণা করতে সক্ষম হবেন। গ্রামের জনগনের বৃহত্তর স্বার্থে গ্রামের নাম গোপন রাখলাম পাছে স্বার্থান্বেষী মহলের একাদশে বৃহস্পতি হয়। গ্রামটি মাঝারি রকমের, উন্নতও নয় আদিবাসী অন্যান্য গ্রামের তুলনায় অনুন্নত ও নয়। গ্রামের রাস্তা কাঁচা যা বর্ষাকালে বীভৎস রূপ ধারণ করে। বিদ্যুতের ওয়াবদা লাইন গ্রামের প্রায় উপর দিয়েই সাঁ সাঁ চলে গেছে; কিস্তু সে গ্রামে বিদ্যুৎ এখনও যায়নি। গ্রামের সামগ্রিক চিত্র অনুগ্রহপূর্বক লক্ষ্য করুনঃ
জনসংখ্যাঃ পুরুষ মহিলা
গারো ২১০ ২০৩
মুসলিম ১৩ ১৬
কোচ ৩ ৪
সর্বমোট জনসংখ্যা= ৪৪৯
পরিবারঃ গারো ৭২
মুসলিম ৫
কোচ ২
শিক্ষাঃ প্রাথমিক ১১৫
মাধ্যমিক ৪৬
কলেজ ৫
বিশ্ববিদ্যালয় ৩
পারিবারিক আয়ের উৎসঃ কৃষি ৩০
চাকুরি ২২
ব্যবসা ৪
অন্যান্য ৩২ (দিনমজুর)
ঋণঃ ক্রেডিট ৭৯,০০০.০০
মহাজন ২৮০,৫০০.০০ [চক্র বৃদ্ধি হার সুদে পরিশোধ যোগ্য]
সমবায় ৩৭১,৬৫০.০০
অন্যান্য ২৭,০০০.০০ [আত্মীয়ের কাছে ধার]
মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, অনেকেই ঋণের কথা বলতে লজ্জা বোধ করেন কাজেই ঋণের পরিমান কিন্তু দ্বিগুনও হতে পারে।
বন্ধকী জমিঃ জমির পরিমানঃ টাকা
নীচু জমিঃ ২৩.৮৫ একর ৫২২,০০০.০০
উচু জমিঃ ১০.৮ একর ৭২,০০০.০০
মেয়াদীঃ ৪৫.৮ একর ৩৭৯,৮০০.০০
আপনার সদয় অবগতির জন্য আরো জানাচ্ছি এসব বন্ধকী জমি, মেয়াদী জমিগুলো রেখেছে মহাজন শ্রেনী, শোষক শ্রেনী, প্রভাবশালী লোকজন যাদের ৯৯.৯৯% বাংগালী। আবার এদের ৯০% জমি লাগিয়েছে মিথ্যা মামলার খরচ বহন করতে। গারো নেতা মাংসাং সাহেবের একটি মিথ্যা মামলায় ৫০ হাজার খরচ হয়েছে। তাহলে যার ৪৪টি মামলা আছে তার খরচ কত হবে বলবেন কি?
এই হলে দরিদ্র আদিবাসীরা জমি বন্ধক, মেয়াদী, ঋণ নেয়া ছাড়া আর কি করবে আপনিই বলুন?
আপনাকে একটা গোপনীয় তথ্য দেই যা ওপেন সিক্রেট ব্যাপারের মত। আপনার বেশ কজন গুণধর মন্ত্রীরা কিন্তু গারো এবং কোচ আদিবাসীদেও ভোটে নির্বাচিত হন। টাংগাইল - ১ আসনের কথা বলি। সেখানে আপনার নৌকা ধানেরশীষ থেকে ১২,০০০ ভোটের ব্যবধানে পাশ করেছে। এই এলাকার ১৬,০০০ ভোট আদিবাসীদের। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি ১৬ হাজারের মধ্যে ১৫,০০০ ভোট নৌকায় পড়ে এবং এক হাজার ভোট ধানের শীষে।আপনি আদিবাসী জনগনের প্রতি মনোযোগ না দিলে আগামীতে ঠিক উল্টো চিত্রও দেখতে পারেন নির্বাচনের ফলাফলে।
আর একটি কথা বলার লোভ সামলাতে পারছিনা। ১৫,০০০ ভোটের মধ্যে ৬ হাজার কিন্তু যুবসংঘ এবং সংগঠনের হাতে। আপনার সরকার যদি তাদের দাবি উপেক্ষা করতে থাকেন আগামী নির্বাচনে কিংবা নির্বাচনে আদিবাসী নিরপেক্ষ প্রার্থী দাঁড় করিয়ে আপনার সাড়ে সর্বনাশ করবে না তারও কিন্তু গ্যারান্টি নেই।
এক হাজার ভোট কিন্তু প্রতিবাদী গ্রুপের যারা মনে করে শেখ হাসিনার কথা, কাজ খালেদার কথার মূল্যমানের সমান। মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, আমাদের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী কিন্তু আদিবাসী গ্রামে গিয়ে জলছত্র-বেরীবাইদ, জলছত্র-শোলাকুড়ি, পিরোজপুর-অরণখোলা রাস্তা পাকা করে দেবার কথা ঘোষণা করেছেন গত ১৩ই ডিসেম্বর। স্বদম্ভে একথাও ঘোষণা করেছেন, “আমি দুই নম্বরী রাজনীতি করি না।” আদিবাসী জনগন চায় আমাদের সুযোগ্য মন্ত্রী সাহেব কাজেই তা প্রমাণ করুন যাতে করে আমরাও তাকে নিয়ে গর্ব করতে পারি।
কাজ চলছে কেচো গতিতে। মাঝে মাঝে কাজ স্থগিত থাকে। জলই-টেলকী-গায়রা-কাকড়াগুনি-বেদুরিয়া-জয়নাগাছা-চুনিয়া-পীরগাছা রাস্তা পাকা করা জরুরী, কারণ সেখান থেকে ভোট পাবেন ১০০ তে ১০০। মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, গত ইউপি, নির্বাচনে গারো আদিবাসী নেতা শ্রদ্ধেয় বেনেডিক্ট মাংসাং ৯নং অরণ খোলা থেকে দাঁড়িয়েছিলেন। আপনারা বলেছেন ইউপি, কোন রাজনৈতিক দলের নির্বাচন নয়। আমরা বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু আপনার দল বিশ্বাসের মূলোৎপাটন করেছে। লীগ থেকে ফজলু সাহেব কে দাঁড় করিয়ে ১২টা বাজিয়েছেন জনপ্রিয় নেতা মাংসাং সাহেবের যিনি টাংগাইল এক আসনের সংসদীয় নির্বাচনে নৌকার জয় সূচক ১২,০০০ ভোট সংগ্রহ করে দিয়েছিলেন। গারোদের ভোট দু’ভাগ করে দেওয়ার ফলে ফজলু সাহেবও ডিগবাজি খেয়েছেন। এতে বেনেডিক্ট সাহেবের ১২টা বাজলেও আপনারাও কিন্তু ১৩টার চেয়ে কম বাজেনি! আমার মনে হয় না মিঃ আবুল হাসান চৌধুরী সাহেব তাঁর নির্বাচনী এলাকায় আবার আস তে পারবেন! মনে হয় না তিনি আবার এই আসন থেকে এম, পি হতে পারবেন!
থাক ওসব রাজনীতি বুলি। আমিতো রাজনীতি করিও না বুঝিও না অতশত হিসাব। অন্যান্য প্রসঙ্গ না হয় অন্যান্য পত্র পত্রিকার মারফতে লেখার চেষ্টা করব, পরীক্ষা টা শেষ করি আগে!
এমন হাজারো দুঃস্বপ্নের মতো পাহাড়সম বেদনার করুন কাহিনী আমি বলে যেতে পারি একের পর এক। আমি জানি, আপনার সে সব পড়ার কিংবা শোনার সময় নেই।
প্রধানমন্ত্রী, আবিমার গারো আদিবাসীরা শান্তিতে নেই, সুখ বলে যে শব্দ আছে তা তাদের জীবনে অনুপস্থিত। যা আছে তা বেদনার, শোষণের, বঞ্চনার, জমি হারানোর, সংস্কৃতি হারানোর, উচ্ছেদের, মিথ্যা মামলার, আর জীবন দেবার ইতিহাস। মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, আবিমায় ঘুম নেই। আমরা কবে শান্তিতে ঘুমাতে পারবো জানা নেই। কিছু দিনের মধ্যে আবিমার আদিবাসীরা প্রেস ক্লাবে এসে যে বিক্ষোভ প্রদর্শন করবে না তার গ্যারান্টি আমি আপনাকে দিতে পারবো না। প্রখ্যাত কলামিষ্ট মিঃ সঞ্জীব দ্রং এরম ত আমারও কেন জানি মনে হয় “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আদিবাসীদের দুঃখ না বুঝলেও ব্যক্তি হাসিনা আদিবাসীদের দুঃখ বুঝবেন...."
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ
১) সালমিখাং যুবসংঘ
২) কুসুম হাদিমা
৩) মিঃ রিকসাং মাংসাং
৪) মিঃ বজিন্দ্র সাংমা
৫) মিঃ মাইকেল সিমসাং
৬) মিঃ পনেশ নকরেক
৭) মিঃ বেনেডিক্ট মাংসাং
৮) মিঃ প্রশান্ত রুগা ও
৯) মিঃ পান্থ দফো
সৌজন্যে ঃ ইঞ্জিনিয়ার প্রাঞ্জল নকরেক
১৯৯৭ সালে দৈনিক আজকের কাগজ আদুরী ম্যাগাজিন-এ প্রকাশিত
কলাম লেখক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজী সাহিত্যে বি, এ, (সম্মান) পড়ছিলেন।