Thursday, June 13, 2013

মান্দি ছেলে মেয়েদের জন্য একটি গল্প....


মান্দি ছেলে মেয়েদের জন্য একটি গল্প....

by Babul D Nokrek (Notes) on Saturday, June 8, 2013 at 6:24pm
একটি পূরনো দিনের গান আছে, ‘‘পৃথিবী বদলে গেছে...”

আমাদের সমাজের অনেক কিছুই বদলে গেছে। সময়ে সব বদলাবে, তাই তো নিয়ম। আমরা আর পিছিয়ে থাকতে চাই না। মান্দি সমাজের মেয়েরা বদলে ফেলেছেন নিজেদের। কর্মমূখী শিক্ষায় তারা অনেক খানি এগিয়ে...


আমাদের ছেলে মেয়েদের জন্য একটি গল্প বলি। গল্পটি সকল মান্দি ছাত্র, ছাত্রী, শিক্ষক, শিক্ষিকা এবং অভিভাবকদের জন্যও...


এক দেশে এক কৃষক এবং কিষাণী ছিলেন...

১৯৪৪ সালের ১৩ ই জুন তাদের ঘর আলো করে একটি ছেলের জন্ম হয়। এর পর আরো জম্ম হয় পাচ ছেলে মেয়ের। তারা এত গরীব ছিলেন যে, তাদের সন্তানদের জন্য দুবেলা ঠিকমত খাবার জুটাতেও তাদের খুব পরিশ্রম করতে হত। ছোট ব্যবসা ছিল তাতেও লোকসান দিয়ে বাবা অনেকটা দেউলিয়া হয়ে যান। তাদের অবস্থা তখন এত খারাপ ছিল যে, টয়লেটের পর হাত ধোওয়ার জন্য সাবান কেনার টাকাও তাদের ছিল না। তথাপি তারা অনেক কষ্টে এই বড় ছেলেকে পড়াশুনা করান...

ছেলেটি প্রতিদিন ৮ কিলোমিটার পথ পায়ে হেটে স্কুলে যাওয়া আসা করে পড়াশুনা করতেন। তারপর ইংরেজি শেখার জন্য আরো প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেটে যেতেন প্রতিদিন। তার রেজাল্ট একটার পর একটা ভালো হতে থাকলো। ছাত্র অবস্থাতেই তিনি গ্রামে বিখ্যাত হয়ে উঠলেন। তিনি যেমন ভাল ছাত্র ছিলেন, তেমনি ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী, নম্র, ভদ্র...

পড়াশুনা করে ছেলে বড় হয়ে স্নাতক পাস করে সরকারী চাকুরীর জন্য পরীক্ষা দিলেন। সারা দেশে প্রথম হয়ে সবাইকে চমকে দিলেন। তিনি প্রথমে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কূটনীতিবিদ হিসেবে যোগদান করেন। এভাবেই গরীব কৃষকের সেই ছেলেটি তাদের পরিবার, গ্রাম, দেশ এমন কি পৃথিবীর জন্য অনেক যশ খ্যাতি বয়ে নিয়ে আসেন। এক সময় তাদের এই এক কৃষকের ছেলে পৃথিবী শাসন করতে শুরু করলেন। বলতে পারেন কে সেই পৃথিবীর সব থেকে ক্ষমতাধর ব্যক্তি?


সেই ছেলে আর কেউ নন, আমাদের সবার পরিচিত, যার নাম পৃথিবীর সকল মানুষ জানেন, তিনি জাতি সংঘের মহাসচিব বান কি মুন।


মহামান্য বান কি মুনের বাবা ছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের অতি সাধারণ এক দরিদ্র কৃষক...

বান কি মুন ছিলেন ৬ ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড়। বান কি মুন-এর কাছ থেকেই শোনা যাক তার শৈশবের কষ্টকর দিনগুলোর কথা,‘‘...আমার শৈশব কেটেছে খুবই দারিদ্র্য পীড়িত অঞ্চলে। বিদ্যালয় ছিল আমাদের বাড়ি থেকে চার কিলোমিটার দূরে। আমাদের বিদ্যালয়ে মাথার উপর ছাদ ছিল না। গাছের নীচে বসে ক্লাশ করেছি।... আমাদের আর্থিক অবস্থা এত খারাপ ছিল যে, টয়লেটের পর হাত ধোওয়ার জন্য সাবান কেনার মত টাকা আমাদের ছিল না। লতা, পাতা দিয়ে আমরা নিজেদের পরিচ্ছন্ন রাখতাম। আদিম ব্যবস্থার মধ্যে আমরা বড় হয়েছি।... এ অবস্থা থেকে আমি আজ জাতি সংঘের মহাসচিব হয়েছি।...আপনারা হাল ছাড়বেন না। আশা হারাবেন না। আপনারাও জয়ী হবেন ...”


ঠিক এখন, আমাদের বাস্তবমুখি, কর্মমূখী এবং উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করা প্রয়োজন যা নিজের জন্য, পরিবারে জন্য, সমাজের জন্য, দেশের জন্য সর্বোপরি পৃথিবীর মানুষের কল্যাণের জন্য কাজে আসবে। বাস্তবমূখী, কর্মমূখী শিক্ষা আমাদের স্বপ্ন দেখায়, সামনের দিকে এগিয়ে যাবার অনুপ্রেরণা যোগায়। স্বপ্ন বলতে আমাদের জন্য যেনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকতা, ওয়ার্ল্ড ভিশন, কারিতাস অথবা কোন বেসরকারী সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মী হওয়া হয়ে উঠেছে...

অবশ্যই এগুলোও স্বপ্ন এবং এদেরও খুব প্রয়োজন। কিন্তু এগুলোর পাশাপাশি আমরা কেন সরকারী চাকুরী করার স্বপ্ন দেখি না ? কেন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখি না? কেন স্বপ্ন দেখি না আকাশে উড়বার? আমাদের ছেলে-মেয়েরা কেন স্বপ্ন দেখবে না অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজ, বাথ, মনাস, নটর ডেম, পেন, হার্ভাড, ড্রেক্সের্ল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশুনা করার? কেন স্বপ্ন দেখবে না PhD করার?


আমাদের স্বপ্ন দেখতে হবে; স্বপ্ন দেখাতে হবে। আমরা যেন আকাশে উড়ার স্বপ্ন দেখি। জাতি সংঘে আমাদের প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্ন দেখি। লেখক, সাংবাদিক, কলামিস্ট, কবি, বুদ্ধিজীবি, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ডাক্তার, প্রকৌশলী, আইন জীবী, শিল্পপতি, রাজনীতিবিদ হওয়ার স্বপ্নও যেন দেখি। দেশের এমপি, প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি হবারও স্বপ্ন দেখি। ডজন খানেক এডভোকেট প্রমোদ মানকিন আজ আমাদের বড় প্রয়োজন...

সর্বজন শ্রদ্ধেয় বিশপ পনেন পল কুবি, প্রাক্তন এম,পি এডভোকেট প্রমোদ মানকিন, মি: সুভাস জেংচাম, মি: থিওফিল হাজং, মি: মৃগেন হাগিদক, অধ্যাপক সমরেন্দ্র রিছিল, মি: সঞ্জীব দ্রং, অধ্যাপক রেমন্ড আরেং প্রমূখগণ কি আমাদের মনে সেই সব স্বপ্নের বীজ বপন করতে পারবেন?


জাতি সংঘের মহাসচিব হবার স্বপ্ন কি আমরা দেখতে পারি না? কেন নয়?

একজন গরীব কৃষক কত শ্রম, সময়, দরদ, যতন, ভালোবাসা দিয়ে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে বান কি মুন কে পৃথিবীর মানুষের জন্য গড়ে তুলেছিলেন! যে স্কুলের ছাদ নেই এমন ভাঙা স্কুলের ছাত্র হয়েও কত চেষ্টা আর অধ্যাবসায়ী হলে একজন গরীব কৃষকের ছেলে জাতি সংঘের মহাসচিব হতে পারেন!


বান কি মুনের বাবা-মায়ের মত বাবা-মা আমার দুখিনী সমাজেও জম্ম নিক....

বান কি মুনের মত সন্তান এদেশেও যেন জম্ম নেয়, যেন দারিদ্রতাকে পদদলিত করে সকল বিপত্তি জয় করতে পারে; কাজ করতে পারে সমাজের জন্য, জীবনের জন্য, সারা পৃথিবীর মানুষের কল্যাণের জন্য। বিধাতার কাছে এই প্রার্থনা করি। ঈশ্বর এই ছোট মানুষের প্রার্থনা শুনবেন বলেই বিশ্বাস।


বান কি মুন কি আমাদের মান্দি ছেলে-মেয়ে, ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-অভিভাবক সকলের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারেন না?

(Note:***I think this article was written just after Mr Ban Ki-moon took over office as the eighth Secretary-General of the United Nations on 1 January 2007 for the first term. That's why some of the  points or information of articles might seem irrelevant! Please ignore where find such....Some of you have already pointed it out! Special thanks for those...

Actually, one of my x-students sent it on 8 June 2013 saying that 'The article is still a source of inspiration for me!' I am posting this article as he asked me to do in his email and I deem, it can inspire some of our school-college going guys. It seems that it's a draft! No way to correct spellings as I don't have Bangla font anymore! I'm helpless in this regard, Sorry...)


(NB: I cannot exactly recollect when I did write this article! I guess it is in 2007! 

Note: Advt Promod Mankin MP is now Hon'ble State Minister for Social Welfare Ministry.....


The writer is
ILEP-Fellow, Drexel University, USA
Senior Faculty, BIHRM (On study leave)
Free-lance Journalist
Email: nokrekbabul@gmail.com
7Like ·  · Unfollow Post · Promote · 

No comments: