Saturday, May 4, 2013

দি অ্যালক্যামিস্ট




by Megh Ruddur (Notes) on Sunday, March 25, 2012 at 9:39am
দি অ্যালক্যামিস্ট



সাম্প্রতিক সময়ে আমার সাথে এক প্রবাসী তরুণের সাথে পরিচয় হয়। বয়ষ ২০ কি ২১ হবে। তার নাম মামুন হাসান। তিনিই ‘দি অ্যালক্যামিস্ট’ বইটির বাংলা অনুবাদ করেন। নিউ ইয়র্ক সিটি ইউনিভাসিটির কলেজে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছেন তিনি। তিনিই আমাকে বইটির কথা বলেন। তিনি আমাকে পুরো ইংরেজিতে অনুবাদ করা উপন্যাস টা ইমেইলে পাঠান। তাঁর বাংলা অনুবাদ টা দেখেছি। খুবই অসাধারণ। মজার ব্যাপার হলো এই পাওলো কোয়েলহো-র নাম টা আমি এর আগে শুনিই নি! বোকা বোকা মনে হলো নিজেকে....

‘দি অ্যালক্যামিস্ট’ পাওলো কোয়েলহো-র প্রতিকী উপন্যাস কথা সাহিত্যে এক অনুপম সৃষ্টি নি:সন্দেহে। পাওলো কোয়েলহো একজন ব্রাজিলিয়ান লেখক। উপন্যাসটি তিনি পর্তুগীজ ভাষায় লিখেন। ১৯৮৮ সালে উপন্যাসটি প্রকাশিত হবার পর বিশ্বের প্রায় সব ভাষাতেই অনূদিত হয়েছে। ১৫০ টি দেশে ৬৫০ কোটি কপি বিক্রিও হয়েছে বইটি। সে অর্থে বইটির পাঠকপ্রিয়তা প্রশ্নাতীত। বিশ্বে সর্বাধিক বিক্রিত উপন্যাসের তালিকায় এই উপন্যাস এতে সন্দেহ নেই।  

উপন্যাসের প্রধান রিত্র হলো স্যান্টিয়াগো। কিশোর স্যান্টিয়াগো একজন মেষপালক। সে বার বার একটি স্বপ্ন দেখে। ঐ স্বপ্নের রহস্য জানার জন্য সে এক জিপসির কাছে যায়। সে জিপসি তাকে জানায় মিশরের পিরামিডে গুপ্ত ধন আছে। জিপসি তাকে তার মেষগুলোকে বিক্রি করে মিশরে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।

স্যান্টিয়াগো যে স্বপ্নটি দেখে তা হল, ‘তুমি যদি কিছু পেতে চাও তাহলে সমগ্র বিশ্ব তোমাকে তা পেতে সহায়তা করবে।’ উপন্যাসটির দর্শন টাও আসলে তাই (আমি যদি বুঝে থাকি)।

মিশরের যাত্রা পথে স্যান্টিয়াগো প্রেমপ্রতিকূল পরিবেশ পরিস্থিতিঅনেক সুযোগ-সম্ভাবনাবিপদ-আপদ,বিপর্যয়ের মোকাবেলা করে। এসবের মধ্য দিয়ে সে নিজেকে আবিস্কার করে। নিজের এবং পৃথিবী সর্ম্পকে জানতে শেখেশিক্ষালাভ করে। কৌতুহলী কিশোর মেষপালক নিদিষ্ট গান্ডির মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ রাখার পরিবর্তে তার স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দিয়ে বেরিয়ে পড়ে রহস্যের সন্ধ্যানে। শেষে উপলদ্ধি করেছিলো ঝুঁকি গ্রহণ করা ছাড়া কিছুই অর্জন করা যায় না এমন কি ব্যক্তি স্বাধীনতাও না।

রহস্যময় এক রাজ্য সালেম। তার রাজার সাথে স্যান্টিয়াগোর দেখা। তিনি তাকে পৃথিবীর আত্মা সম্পর্কে বলেন।

এক ইংরেজ ভদ্রলোকের সাথে তার দেখা। সে ভদ্রলোক একজন খুব বড় রসায়নবিদ হবার স্বপ্ন দেখেন। তাই তিনি একজন বিখ্যাত রসায়নবিদের সান্নিধ্যলাভের জন্য যাচ্ছিলেন। ঐ রসায়নবিদের বয়স ২০০ .  তাঁর অদ্ভূত ক্ষমতা। তিনি যে কোন ধাতুকে সোনায় পরিণত করতে পারতেন এমন গল্পও ছিলো।

এমন সব কাহিনী...এক নি:শ্বাসে পড়ে ফেলবার মত উপন্যাস। পড়ে দেখতে পারেন আপনিও।

A Lonely Cloud...(An English poem with Bangla and Achik translation)






Crossing each other, like two cars
One is you and may be me another;
That's life, the cruel reality, can you see?
I never tried to understand thee!
(My mistake may be) 

Watching both, the cloudy sky
May be wants it just to cry!
That's life, the reality, do you see?
You never tried too understand me!
(It's your fault may be!) 

Some day we might regret for that
Meo meo meo meo like the cat...
Thousand raindrops in thy heart
You can't imagine how they hurt! 

Pearls like dew drops melting in the sky
Oh dear! You've forgot me, still not I! 

(Eta kintu Forbidden Love er moto kobita na!  
English kobita lekhar trial diye dekhlam....hahaha) 

Bangla Translation



নিঃসঙ্গ মেঘ

একে অপরকে ছাড়িয়ে গেছে, ছুটে চলা দুটো গাড়ি
তার একটি তুমি হলে, অপরটা আমিই, হে নারী!
জীবন এমন, কেমন রুঢ়, জেনেছ আজ হয় ত তুমি
কখনো হয়ত তোমার তোমাকে জানতে চাইনি আমিই! 

দূর থেকে আমাদের দেখে হয় ত মেঘলা আকাশ 
উঠেছে কেঁদে কী আবেগে ফেলেছে দীর্ঘশ্বাস!
এটাই জীবন, বাস্তবতা এখন জেনে গেছ এতদিনে তুমি!
কখনই চাওনি জানতে হিদয় গভীরে কী চাই এই আমি। 

হয় ত একদিন তুমি আমি এ সব ভেবে ভেবে
বিড়ালের মত মিউ মিউ করে অকারণেই উঠ ব কেঁদে!
অসংখ্য বৃষ্টি কণা আমার হিদয় দখল করি
কী তান্ডব করিছে জান? হিদয় রক্তে ছড়াছড়ি! 

মুক্তোর মত শিশির কণা সব আকাশে মিলিয়া যায়
তুমি পারলে নারী! আমি কেন ভুলতে পারলাম না হায়! 

(বাংলা অনুবাদ করার ত্রায়াল দিলাম...)

মান্দিতেও ত্রায়াল দিচ্ছি...
..................................
মান্দি ভাষায়... 


....নিসঙ্গ গাদেলা...


খানগ্নিং গাড়ি গিত্তা আনচিংদে গেলগ্রিকারি রেয়াংজক
সাক্সাদে নাআ রিপ্পেং, দাআও সাকসাদে আঙআহাজক!
আঞ্চিংনি গিসিক সাআখো নিক্কিমুংবা গাদেলা গাপ্পি সিল্গা
হয় ত বা বিখা বিয়ে সুসেত-বাক্সেত দাক্কে গ্রাপ্পা! 

গিসিক সায়ে সাললা সিয়ে, দাআওদে গিচ্ছিজক্ষনবা নাআ!  
মাইনি সালোবা নাআ হাআই না হামজা বাদিকে দংআ আঙআ?
গিসিক বিএ সালসাদে আঞ্চিং গ্রাপ্নোহাবা রিপ্পেং
বুয়ারি সুয়ারি সালসাদে গ্রাপ্নো মাইনা মাইনাব হাংজাং! 

ইয়ান জাদিল, আঞ্চিংনি আসং, রাসংখো হাআইজক নাআ?
নাংনি গিসিক-খাতংনি নাম্নিকাখো হাআইনা হামজা আঙআ!
মিকখানি বিথি গিত্তা আংনি অক্তিঙ্গঅ দঙ্গে দঙ্গে
বাল্মন্দ্রি গিত্তা আন্সেংবেয়া গুরিরুয়ারি ...

রূপা গিত্তা রিবঞ্চি সিলাগাছাসাঁ গিম্মারিয়া নাআদে
গুয়ালজক নাআ মিচিক, দাআওবা গুয়ালজা আঙআদে!



by Megh Ruddur (Notes) on Sunday, July 29, 2012 at 4:22pm











মান্দি কু'চা চক্কাকো মিক্কা বিতিগিতা নম'আ ইন্নেহা চানচিয়ামিংনি..
দে নাংনি গাবাং >(গারো+বাংলা) mixed poidoko অক্কিসা/ontisa
এডিট দাক্কে/ka'e রাস্রাংবো...১। হয় ত বা= কন/গ্নাং, গ্রাপাহাকন, নিয়াহাকন..., রে'আংনাবাগ্নাং..
.২। কষ্ট= দুক (duk'ni salrang...) or gisikni sa'a=মনের কষ্ট৩। কোনদিন বা
ত= মামুংনি সালোবা (sal'oba),৪। মিকখানি ফোঁটা= মিকানি বিতি (bite),৫। অক্তিঙ্গো/ অক' নিং'ও= অক্ ok (just belly)+ning'o...
কিন্তু হৃদয়/heart= কাতং/জাংগি।৬। রাজ্ঞা= রাক'আ/ rak'a

আইয়াও! ইন্দিসাতাদ রাজ্ঞা...

A Little Prayer to Him....



by Babul Nokrek (Notes) on Wednesday, August 1, 2012 at 7:24pm


A Little Prayer to Him....

He walked with you baby! I see, Still He walks
He talks and talks, and He silently laughs
He takes care us and loves a lot thee!
Blessings are being showered like a sea!

What will thy do with my love?
It will make life a bit more tough!
Go to beach and make mind fresh
Throw all worry in the trash...

Ask Him and keep all worries in His hands
And feel His, with heart, all kindness
I never ask Him for any gift
As I knew I am not so fit!

Oh God! let the cup go far from her sky
(Let her tell dark nights soon good bye.)
If in stead need me, I am here to die!


একটি ছোট্ট প্রার্থনা...

সে তোমার হাত ধরে হাটে মেয়ে, আমি দেখি, এখনো সে হাটে
কথা বলে আর হাসে এই ত তোমার পাশে, ভুলে না মোটে!
আমাদেরও দেখে রাখে সে, তোমাকে বেশি...
সাগরসম আশীর্বাদ কত রাশি রাশি...


আমার ভালোবাসায় কী হবে ছাই শুনি?
শুধু শুধু জীবন টা বিষিয়ে তুলবে জানি!
সাগর পাড়ে ঘুরে আয় মনটা হবে ভালো...
দুশ্চিন্তা যা আছে সব ডাস্টবিনে ফেলো!

যাচনা করো তাঁর কাছে, শুধু ভরসাটা রাখো
অনুভবে বুঝে নাও তুমি তাঁর ছায়াতলেই থাকো
চাইনি ত কিছু কোনদিনও ভুলে ভালে
এসেছি আজ তাঁর দ্বারে সব দীনতা ভুলে!

হায় ঈশ্বর! দুহাত তুলি, তুমি এই দুঃখের পেয়ালা দূরে সরিয়ে দাও
(তার যত দুঃখ আছে খোদা, দাও আমায় দাও...)
বিনিময় যদি চাও তুমি, আমি তৈরী, আমায় মৃত্যু দাও!

আমি আজও তোমার বন্ধু আছি... (ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র গান)


আমি আজও তোমার বন্ধু আছি... (ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র গান)

by Megh Ruddur (Notes) on Thursday, February 14, 2013 at 4:03am

যত দূরে থাকো তুমি/ এই ত মেয়ে চেয়ে দেখো
পাশে পাশে আছি আমি/ পাশে পাশে হাটি আমি...
ভালোবাসি আজও তোমায়, বুকের মধ্যে রাখি তোমায়...
তোমায় ভেবে আজও আমি আকাশ গাঙে হারিয়ে যাই... 


যত কষটে থাকি আমি/ যত দুঃখ দাও তুমি
আমার সে সব প্রাপ্য ছিলো ধরে নিয়ে সুখী আমি
যত কষ্ট পাই আমি/ যত দুঃখ দাও তুমি...
তোমার জন্য এই মেয়ে সুখি ভাবি তোমায় নিয়ে...


বল মেয়ে তুমি কবে, এই জনমে আবার আমার হবে? 
বল মেয়ে তুমি কবে, হাতে হাতে হাত মিলাবে?
যত দূরে থাকো তুমি, এই ত দুহাত বাড়িয়ে আমি
যত দূরে থাকো তুমি, এই ত দুহাত বাড়িয়ে আমি

তুমি যদি পাশে থাকতে, পাখির মত পাখা মেলতে
আমি নাহয় সঙ্গী হতাম মেঘের দেশে চলে যেতে 
তুমি যদি চাঁদ হতে আমি দূরের সূর্য হতাম 
যত আছে গ্রহ-তারা মুঠো মুঠো তোমায় দিতাম...

যত দূরে থাকো তুমি, এই দেখো পাশে আমি 
তুমি ভুলে গেলেও মেয়ে আজও তোমার বন্ধু আমি
সুখে থেকো সোনার মেয়ে, ফাগুনের গান গেয়ে 
দূর থেকে বলে দিলাম হ্যাপী হোক ভ্যালেন্টাইন্স ডে! 

প্রিয় আদিবাসী মেয়ে


প্রিয় আদিবাসী মেয়ে



by Megh Ruddur (Notes) on Monday, February 20, 2012 at 3:07am
প্রিয় আদিবাসী মেয়ে

জন্মই তো হয়েছিল কষ্টের জন্য                                                                           
কপালে আছে তাই এত কষ্ট,
লেখা ছিলো, তাই হবে নষ্ট!
আধুনিকতার উচ্ছৃঙ্খল থাবা গায়ে পড়েনি
তাই তুমি আজো বন্য! 

প্রিয় আদিবাসী মেয়ে
জীবনতো পাখি নয়, কাটবে নেচে গেয়ে
থাকবেই তো কষ্ট, জীবন যখন;
তাই হবে কেন নষ্ট? জীবনভারে পড়বে কেন এত সহজে নুইয়ে?
রাইসংফা তোমার সাথে প্রতারণা করেছে?
তুমি তো তা করোনি, ভুল হয়নি তোমার,
তোমারও তো সমাজে ষোলআনা প্রতিষ্ঠা পাওয়ার আছে অধিকার,
ভুল সিদ্ধান্ত কেন নাও মিছে?

প্রিয় আদিবাসী মেয়ে
ইদানিং তুমি প্রেম করছো বেশি বেশি;
তোমার ভাইদের আবাদি জমির ভাগ দিচ্ছ আটআনা?
প্রতিবেশী ভাইয়েরা এখনও তা জানে না
তোমার প্রেম যেন হয় অবিনাশী।

ইজাজের জন্য এলিজি


ইজাজের জন্য এলিজি



by Babul Nokrek (Notes) on Sunday, May 5, 2013 at 4:19am

কত কত মানুষ আসে, কত শত মানুষ যায়
এই পৃথিবীতে, এই সবুজ শ্যামলের বাংলায়
ইজাজের মত মানুষ কম, খুব কম দেখা যায়!
ইজাজ, ইজাজ, ইজাজ, ইজাজ তুমি মরো নাই।

ইজাজ মরে নাই, ইজাজ মরবে না, ইজাজ থাকবে
ইজাজ আমাদের সংগ্রামে, ইজাজ আমাদের চেতনায়;
এজাজের মুখে আমি এখনো একাত্তুর দেখি
তাঁর শাহানার পাশে দাড়ানোতে আমি একুশ দেখি!

কত সাভার এক সময় ঢাকা পড়ে যায়
টকশো, গান, গল্প, উপন্যাস আর কবিতায়;
তবু ইজাজের মত দামাল ছেলেরা থেকে যায়
আমাদের বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রামে
লড়াইয়ে, যুদ্ধে অনন্ত প্রেরণা হয়ে

ইজাজ, তোমার মৃত্যু নাই। তুমি ঘুমাও


তুমি কি ভাবো? আমরা মরে গেছি?
ইজাজ, যে শাহানাকে বাঁচাতে গিয়ে
তোর শরীরের সব টুকু পুড়ে গেলো
সে শরীর টা খোদা তালার বিশেষ দান
সে শরীর যে দেশের মাটি ধারণ করবে
সে মা, মাটি সারা পৃথিবীর জন্যই পূন্যভূমি।

যে মাকে তার সন্তানের কাছে ফিরিয়ে দিতে গিয়ে
তোমাকে যেতে হল সিঙ্গাপুরের কোন এক হাসপাতালে
সে হাস্পাতাল ধন্য হয়ে গেছে নিশ্চয়ই তোমার কীর্তি শোনে
জানি, দেশের কোন রাজনীতিবিদ তোমার জন্য কাদবে না
তোমাকে বীরের বেশে তোমার শেষ প্রাপ্যটাও দেবে না কেঊ!
এই ত আমরা দিচ্ছি, তুমি একাত্তুরের যোদ্ধা
আমাদের স্বাধীনতায় ইজাজ, আমাদের চেতনায় ইজাজ
ইজাজ, তুমি প্রমাণ করলে মানুষ মানুষের জন্য...

ইজাজ, তোমার মৃত্যু নাই




খবরঃ সাভার দুর্ঘটনায় শাহানাকে উদ্ধার করতে গিয়ে  উদ্ধারকর্মী ইজাজুদ্দিন
কায়কোবাদ সিঙ্গাপুরে চিকিৎসারত অবস্থায় স্থানীয় সময় রাত ১২ টা ৪৫ মিনিটে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)।

শাহানাকে বাঁচাতে গিয়ে ইজাজ অগ্নিদগ্ধ হন। শরীরের ৬০ ভাগ বেশি পুড়ে যায় তাঁর। আরেকজনকে তার সন্তানের
কাছে ফিরিয়ে দিতে গিয়ে নিজেই হারিয়ে গেলেন নিজের স্ত্রী সন্তানের কাছ থেকে।


স্যালুট তোমার জন্য।

শিক্ষক দিবসের সাতকাহন...


শিক্ষক দিবসের সাতকাহন...





by Babul Nokrek (Notes) on Saturday, October 6, 2012 at 10:16am

(লেখাটি আমার স্কুল জীবনের শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক মারীয়া চিরান, অতুল বিশ্বাস, স্বর্গীয় গোষ্ঠ চন্দ্র সূত্রধর, রেহানা হোসেন, অমলেশ রয়, অনুপ হাগিদক, জেমস জে চিরান, অনিতা দাস, বিনয় দিব্রু, ধীরেশ চিরান, রত্না চিসিম, ফিলমিনা ম্রং, মারটিন ম্রং, স্বর্গীয়া জুলিয়ানা ম্রং, স্বর্গীয়া সিস্টার ফিলোমিনা কুইয়া সিএসসি, সিস্টার রানী সিএসসি, সেনা চাম্বুগং, বিষ্ণু নকরেক, শুভ্রতা মানখিন, কচিন রিছিল, রবীন্দ্র নাথ, সঞ্জয় চাম্বুগং, নবিণা কুবি, তারা নকরেক, ব্রিজিতা নকরেক প্রমুখদের স্মরণে। যারা আমার সরাসরি শিক্ষক ছিলেন না, কিন্তু তারও চেয়ে বেশি স্নেহসিক্ত করেছেন জলিল স্যার, মাসুদ স্যার, সামদানী স্যার, চুন্নু স্যার সহ আরো অনেকে, যাদের নাম না উল্লেখ করলেও তাঁরা ঠিকই বুঝে নিবেন! লেখাটি শিক্ষক বন্ধুদের জন্যও... হারুন রশীদ ভাই এমন একটা লেখা মধুপুরবাসী গ্রুপে পোস্ট দেয়ার ওনুরোধ করেছেন বলেই পোস্ট দিলাম!)



ধান ভানতে শিবের গীত (প্রাক কথন) 

মধুপুর, টাঙ্গাইলের স্যার বাহাজ আলী ফকীর এর নাম আমরা প্রথম আলো আর The Daily Star কল্যাণে অনেক আগেই শুনেছি। আরেকজন স্যারের কথাও শুনেছি যিনি অর্ধবেলা ইটের ভাটায় কাজ করতেন আর আধবেলা স্কুলে পড়াতেন! কেউ কি সে শিক্ষকের নাম বলতে পারবেন? 

বাহাজ স্যার সম্পর্কে The Daily Star গত ৬ অক্টোবর A teacher with a difference: Bahaz takes no day-off, no leave for 33 years শিরোনামে প্রথম পাতায় একটি  রিপোর্ট ছাপে। একটু দেখা যাক কি লেখা আছে সেখানে?

'Md Bahaz Ali Fakir, an English teacher of a secondary school, has not taken even a day's leave for the past 33 years, setting an example of great devotion to his profession.

Teaching at Shaheed Smrity High School and College in Tangail's Madhupur upazila, Bahaz, 55, has been off work only on weekends and national holidays over the years, despite many difficulties along the way.

Headmaster of the school Mohammad Bazlur Rashid Khan said other teachers in the institution have followed Bahaz's footsteps and promised to work without taking leave.

The headmaster narrated how Bahaz came to work even on September 14 -- the day his mother died -- after keeping the body at his yard in the morning.
“After signing the [attendance] register, Bahaz took the day's first class and returned to his house. But surprisingly, he came back to school right after his mother's burial and went on to take his scheduled class,” said the headmaster.

রিপোর্ট টি করেছেন টাঙ্গাইল থেকে আমার বন্ধু মীর্জা শাকিল। গত বছর শিক্ষক দিবসে আমার আরেক বন্ধু কামনাশীস শেখর এমন চমৎকার একটা প্রতিবেদন করেছিলেন। এমন সমাজ বদলে দেয়া খবর আমরা চাই। আশা জাগানিয়া খবর, স্বপ্ন উড়া উড়ি করা খবর! 

আমাদের আরেক শিক্ষক রঞ্জিত কুমারকে নিয়েও সব পত্রিকা বেশ অনেকদিন লিখেছে যিনি ১২ বছর বিনা বেতনে ছাত্র পড়িয়েছেন! হাজারো মন খারাপ করা খবরের মাঝে এমন হৃদয় জুড়ানো খবর কি আমাদের নেই?  

শিক্ষকতা মহান পেশা। আসলে একে পেশা না বলে জীবনাহবান বলাটাই  অধিকতর প্রাসঙ্গিক হবে বোধ করি। কারণ এ পেশায় মানুষ আসেন হাজারো মানুষের সমস্যা সমাধানের জন্য, জীবনের পরতে পরতে লুকিয়ে থাকা অথবা জীবনের দিকে ধেয়ে আসা সমস্যাগুলো মোকাবেলা করার পাঠ কিংবা তার বুলেট সমাধান দেওয়ার জন্যই এঁদের অভিরাম পথচলা! নদীর দুধারের মানুষের সাথে সেতু বন্ধন গড়ে দেওয়ার জন্য দিনরাত কাজ করতে হয়; সেতু বন্ধন গড়ে দিতে হয় ব্যাক্তি আর তার জীবনের সাথেও! এজন্য তাঁকে প্রতিদিন মিনিমাম ঘন্টা দুই বই পড়তে হয়; ক্লাশে বা শিক্ষা-প্রতিস্টানে থাকতে হয় গড়ে ৭-৮ ঘন্টা; খাতা দেখতে হয় গড়ে প্রতিদিন ২-৩ ঘন্টা; ছাত্র- অভিভাবকদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হয় গড়ে দুই ঘন্টা; টেলিফোনে কথা বলতে হয় গড়ে ১ ঘন্টা! (সময় কারো কারো জন্য কম বেশি হতে পারে!)। 

এখানে খেয়ে পড়ে দিব্যি ভালো থাকার সমূহ সম্ভাবনা নেই! এ সব জেনেও কিছু নির্বোধ মানুষ (!) কষ্টকে আলিঙ্গণ করেন  কারোর নীরব হাতের ইশারায়! নিজের সমস্যার কথা এখানে ভাব্বার ফুরসত খুব একটা নেই। শিক্ষকদের ভুল করলে চলে না! পান থেকে চুন খসলে এখানে মোটেই চলে না। তাঁদের অনেকটাই ফেরেস্তা হতে হয়। হবেই না বা কেন? তা না হলে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী তাঁদের অনুস্মরণ করবেই বা কেন? তবে ভাল-মন্দ মিলিয়েই একেকজন শিক্ষক। তাঁরাও আমাদেরই লোক! তারাও রক্ত মাংসে গড়া মানুষ! আমাদের পরিবার, সমাজ, দেশ, পৃথিবী থেকেই ত শিক্ষক হন। তাই তাঁরাও সমালোচনার আওতার বাইরের কেউ নন! 

শিক্ষকতার আসল মজা হলঃ এখানে হাজারো মানুষের হাজারো আইডিয়াতে ভাগ বসানো যায়! একেক ছাত্র/ছাত্রী প্রতিদিন একেক আইডিয়া শেয়ার করে থাকে। আর শিক্ষক জানতে-অজান্তে তাঁর স্টুডেন্টদের থেকেও অনেক বিষয় শিখে নিতে পারেন! আর প্রতিদিন তরুণদের সাথে তাঁদের সমস্যা-সম্ভাবনা, চিন্তা-ভাবনা, ধ্যান-ধারণা, কথন-কৌশল, ফ্যাশন ভাবনা নিয়ে কথা বলতে পারাটা খুবই সৌভাগ্যের ব্যাপার। এদের কাছে থাকলে নিজেকে সব সময়ই চাঙ্গা লাগে! আর যখন তাঁরা ফোন করে জানাবেঃ স্যার/ম্যাডাম, আমি বুয়েটে/ম্যাডিকেলে/বিশব্বিদ্যালয়ে/সেনাবাহিনীতে/বিসিএসএ চান্স পেয়েছি!' কিংবা বলবে, 'আমি দেশের বাইরে স্কলারশীপে পড়তে যাচ্ছি, দোয়া করবেন!/আমার ভাল একটা জব হয়েছে!' তখন মনে হবে আমি পৃথিবীর একজন মানুষের জন্য সামান্য কিছু দিতে পেরেছি। এই ভালোলাগার মূল্য অপরিমেয়, অপরিমাপযোগ্য! আমার তখন ব্যাক্তিগত অনুভূতিঃ  আমি নোবেল জয় করে ফেলছি এমন! আমার এমন ভালোলাগে কোন ছাত্র/ছাত্রীর ভাল একটা সংবাদ পেলে! অন্য শিক্ষকদের অনুভূতিও নিশ্চয় এমনই! 

আমার কিছু ছাত্র-ছাত্রী আছে, তাঁরা মাঝে মাঝে আমাকে বলে, 'স্যার টিচারদের নিয়ে, তাঁদের ভেতরের খবর নিয়ে কেউ লিখে না! আপনি ত লিখেন অনেক কিছু! তাঁদের সুখ-দুঃখ নিয়ে কিছু লিখবেন?' এদের বেশিরভাগ কোন শিক্ষকের ছেলে-মেয়ে! কিছুদিন আগে আমার অগ্রজ জাপান প্রবাসী হারুন রশীদ ভাইও এমন কথাই বললেন! তিনি অবশ্য শিক্ষকতা পেশায় আমার অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করতে অনুরোধ করেছিলেন।শিক্ষকতা করতে গিয়ে আমার সুখ-দুঃখের কথা লিখতে বলেছিলেন। সবার কথা একটু একটু করে রাখতে গিয়ে কয়েকটা দিক টাচ করার চেষ্টা করছি!

নিজের কথা বলতে গেলে আমি ভালো শিক্ষক ছিলাম না বলে রাখা ভালো। তবুও প্রতি বছর শিক্ষক দিবসে শ খানেক ইমেল, এস এম এস, ফোন কল পেতাম! পড়তে পড়তে ক্লান্ত হলেও ধৈর্য ধরে সব এস এম এস, ইমেল, ফোন কল রিসিভ করতাম। উত্তরও দিতাম। অধ্যাপনা ছাড়ার পরেও গত বছরও অনেক শুভেচ্ছা এসেছিলো। অধ্যাপনা ছেড়ে দেওয়ার দু'বছরের মাথায় এবার সে সংখ্যা শুণ্যের কোঠায়! অস্ট্রেলিয়া-র এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমার এক প্রাক্তন ছাত্রী  রাশা জাহান (ছদ্ম নাম) শুভেচ্ছা না পাঠালে শূন্যই হতো! ধন্যবাদ রাশা । আমার মনে হয় রাশা এই লেখাটি পড়বে! (বাহুল্য কিছু লিখলে সে যেন এড়িয়ে যায়। স্যরি।)  

রাশা-কে আমি কোন কলেজে পড়াই নি! ২০০৩ সালে মধুপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের চাকুরী থেকে ইস্তফা (তৎকালীন সরকারের একটা ভুল সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করার জন্য বাধ্যতামূলক রিজাইন করতে হয়; আমি স্যরি বলিনি কারণ আমি অন্যায় করিনি। আমার পরিবারও চায়নি আমি আপোষ করি) দিয়ে একটি এন জি ও তে বড়কর্তা হিসেবে প্রায় দু'বছর কাজ করার পর আবার ঢাকার নামজাদা এক কলেজে অধ্যাপনায় যোগদান করি ২০০৫ সালের ৫ মে। আমার বেতন তখন (৪,৩০০+৫০০) ৪৮০০ টাকা। পূর্বে ৫ বছর দুটো কলেজে পড়ানোর অভিজ্ঞতা থাকার কল্যাণে ৫০০ টাকা বেশি পেতাম! আমার বাসা ভাড়া ছিলো ৯,৫০০ টাকা। আনুষঙ্গিক বিল ৩,০০০ টাকা। আপ্যায়ন খরচ বাবদ বাজেট ছিলো ৩,০০০ টাকা! প্রতি মাসে ১৫,০০০ টাকার উপরে ব্যয়! আর সেলারি পাই ৫,০০০ টাকারও নিচে। আমার স্ত্রী আমাকে মাঝে মাঝে বেতনের কথা জিজ্ঞেস করত; আমি কখনোই তাঁকে মুখ ফুটে বেতনের কথা বলতে পারিনি। শুকনো হাসি দিয়ে শুধু বলেছি, 'আমরা না খেয়ে থাকব না, ইনশাল্লাহ!' মনিও শিক্ষকতা করে গ্রামের স্কুলে। বুদ্ধিমতী বউ যে হাসির অর্থ বুঝত না তা কিন্তু নয়! সে নিজে টিউশনি কখোনো করেনি, আর আমি করি সেটাও তাঁর পছন্দ ছিলো না। কিন্তু ব্যাপারবিষয়টা এমন দাঁড়ালো যে ক্লাশের বাইরে ছাত্র না পড়ালে ঘর ভাড়া দেয়া মুশকিল, শিক্ষকতা পেশা টিকিয়ে রাখা ত পরের কথা! ঢাকায় হন্যে হয়ে পার্ট টাইম খুঁজা শুরু করলাম। কিন্তু সময়ের সাথে পাল্লা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তাছাড়া, এই নিয়ে হাসাহাসিরও ব্যাপার হয়ে গেলো। সবাই হাসাহাসি করে আর বলে, 'ইংরেজি শিক্ষকের এই কি দশা!'

মাস ছয় নিজের সেভিংস থেকে টাকা তুলে ঢাকা শহরে ফুটানি দেখিয়ে মাস্টারি করলাম। গ্রামের বাড়ি থেকে চাল-ডাল নিয়ে আসতাম! মনিকে বলতাম, 'বাজারের চাল-ডাল আমার ভালো লাগে না একদম!' মনি হাসত আর খুব উৎসাহ করে চাল-ডাল গুছিয়ে দিত।

কত আর বাড়ি থেকে এনে শহরের সংসার চালানো? তাই সবার মত আমিও ছাত্র-ছাত্রী পড়াতে নেমে গেলাম! ঢাকা শহরে রাশা-ই (ছদ্ম নাম) আমার প্রথম ছাত্রী! সে তখন ঢাকা কমার্স কলেজে পড়ত। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সে দ্বিতীয়। অসম্ভব বুদ্ধিমতি আর অমায়িক ছিল সে। এখন নিশ্চয়ই আরো তুখোর হয়েছে! বাবা ছিলেন বুয়েটের তুখোর ছাত্র।দেশের সেরা প্রকৌশলীদের একজন। মা জমিদার বংশের কন্যা।তাদের শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ আমাকে মুগ্ধ করত! আমার কখনো মনে হয়নি আমি অন্যের বাসায় ছাত্রী পড়াতে যাই। নিজের পরিবারই মনে হয়েছে। আর রাশা-কে কখনো নিজের মেয়ে, কখনো ছোট বোনই মনে হয়েছে সব সময়। 

আমার দেখা প্রায় সব শিক্ষকদের গল্পই কম বেশি একই রকমের... গ্রামের টিচারদের অবস্থা খুব ভয়াবহ! তাঁদের ৮০-৯০ শতাংশ শিক্ষকদের সারা মাস দোকানে বাকীতে বাজার ঘাট সারতে হয়। মাস শেষে সেলারির সবটাই দোকানীকে দিয়ে দিতে হয়! কখনো কখনো তাঁদের বেতন দুই তিন মাস পর পর আসে। তখন তাঁদের অবস্থা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না! সেলারি চলনসই হলে এঁদের কেউই টিউশনি করতে রাজি নন! বেশির ভাগ শিক্ষককেই আমি সৎ দেখেছি। যে কথাটি বলতে চাইঃ শিক্ষকদের টিউশনি বন্ধ হওয়া দরকার; তাঁর আগে দরকার তাঁদের জন্য চলনসই বেতন-কাঠামো! সে কি হবে আমাদের দেশে?

এতক্ষণ ধান ভানতে শিবের গীত গাইলাম। আসল উদ্দেশ্য শিক্ষক দিবস সম্পর্কে একটু লেখা!

শিক্ষক দিবসের সাতকাহন...

শিক্ষকগণ মানুষ গড়ার কারিগর এটা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। তাঁরা ছিলেন, আছেন, থাকবেন। তাঁরা যুগে যুগে আমাদের পথ দেখানোর কাজ করেছেন এবং করবেন যতদিন সূর্য, চন্দ্র থাকবে, মানুষ থাকবে এই অসহনশীল পৃথিবীতে। 

পৃথিবীর অনেক দেশে এই শিক্ষক সমাজকে তাঁদের অপরিসীম অবদানের জন্য তাঁদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট দিন ধার্য রাখা হয়। এই বিশেষ দিনটিকে আমাদের দেশে 'শিক্ষক দিবস' পশ্চিমা দেশে 'টিচার্স ডে' বলে অভিহিত করা হয়।

শিক্ষকদের বিশেষ অবদানের জন্য তাঁদের সম্মান প্রদর্শনের রীতি সারা বিশ্বে প্রচলিত। তবে একেক দেশে একেক দিনে, তারিখে এই শিক্ষক দিবস পালিত হয়ে থাকে! বাংলাদেশে ৫ অক্টোবর শিক্ষক দিবস হিসেবে নামকাওয়াস্তে পালন করা হয়ে থাকে। অনেক শিক্ষক এই দিনটিকে মনেই রাখেন না। 'হ্যাপী টিচার্স ডে' বললে অনেকে চমকেও উঠেন! 'World Teachers' Day' শিক্ষক দিবস থেকে আলাদা করে পালন করা হয়ে থাকে কোন কোন দেশে! ৫ অক্টোবরকে সারা পৃথিবীতে World Teachers' Day হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে!

শিক্ষক দিবস পালনের ইতিহাস Wikipidia তে সুন্দর করে দেয়া আছে, "The idea of celebrating Teachers' Day took ground independently in many countries during the 20th century; in most cases, they celebrate a local educator or an important milestone in education (for example, Argentina commemorates Domingo Faustino Sarmiento's death on September 11 since 1915,[2] while India celebrates Dr. Sarvepalli Radhakrishnan's birthday on September 5 since 1962[3]). This is the primary reason why countries celebrate this day on different dates, unlike many other International Days."


আগেই বলেছি, বিভিন্ন দেশে এই দিবসটি বিভিন্ন তারিখে পালিত হয়। কয়েকটি দেশের তালিকা সংক্ষেপে দেওয়ার চেস্টা করছিঃ

বাংলাদেশে ৫ অক্টোবর; নেপালে জুলাই এর মাঝামাঝি সময়ে; আফগানিস্তানে ১৫ অক্টোবর; আলজেরিয়াতে ২৮ ফেব্রুয়ারি; আরজেন্টিনাতে ১১ সেপ্টেম্বর; অস্ট্রেলিয়াতে অক্টোবরের শেষ শুক্রবার এই দিবস পালন করে থাকে!

অপরদিকে World Teachers' Day টা UNESCO ১৯৯৪ সাল থেকে ১০০ টিরও বেশি দেশে পালন করে আসছে। এই সকল দেশগুলোতে ৫ অক্টোবরই এক যোগে দিবসটি উদযাপন করে থাকে।

সারা বিশ্বের ১১ টি দেশ ২৮ ফেব্রুয়ারি এক যোগে Teachers' Day পালন করে থাকে। এই দেশগুলো হচ্ছেঃ  Morocco, Algeria, Tunisia, Libya, Egypt, Jordan, Saudi Arabia, Yemen, Bahrain, UAE, and Oman.

আরো ১৫ টি দেশ ৫ অক্টোবর দিনটিকে পালন করে: Azerbaijan, Bulgaria, Estonia, Germany, Lithuania, Macedonia, Republic of Moldova, Netherlands, Pakistan, Philippines, Qatar, Romania, Russia, Serbia, and Mauritius.

লক্ষণীয় বিষয় হলো, এই দিনে শিক্ষকদের প্রতি ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা ও সম্মান প্রদর্শনের লক্ষে দিনটি পালিত হলেও অনেক দেশেই তা কেবলই আনুষ্ঠানিকতা মাত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর বাংলাদেশের কথা বলা টা বাহুল্য মাত্র! শিক্ষকদের প্রতি এই যে অসীম অবহেলা, সীমাহীন বঞ্চনা তার মাত্রা কমানো জরুরী। যখন শিক্ষক ছিলাম, কখনো এই কথা বলতে পারিনি! 

শিক্ষক দিবসে পৃথিবীর সকল শিক্ষকদের শিক্ষক দিবসের শুভেচ্ছা রইল। আর আমার সকল শিক্ষকদের জন্য পা ছুঁয়া সালাম। 

[শুধু শিক্ষকতার পেশায় জরিতদেরকেই ট্যাগ দেওয়া হলো; অন্যরাও সময় পেলে পড়বেন! কারো কোন আইডিয়া, অনুভূতি, প্রতিক্রিয়া থাকলে মন খুলে লিখবেন প্লিজ! ] 

তথ্যসূত্রঃ The Daily Star;  দৈনিক প্রথম আলো; উইকিপেডিয়া; ইন্টারনেট



https://www.facebook.com/notes/megh-ruddur/%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%95-%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%A8/410625672326604

আমাদের তারা সাংমা



টিপু সাংমা। পেশায় প্রকৌশলী। আমার খুব স্নেহের একজন। প্রথমত সে আমার জুনিয়র বন্ধু। দ্বিতীয়ত 

সে আমার ভাগ্নি জামাই। স্ত্রী কন্যা নিয়ে সে ভীষণ সুখী মানুষ। খুব সৌখিন মানুষ। বউ বাচ্ছা, বাড়ি 

খুব পরিপাটি রাখতে পছন্দ তাঁর। তাঁর লেখা স্ট্যাটাস পড়লাম ফেইসবুকে! মনটা খুব খারাপ হয়ে 

গেলো...


কি লেখা এই স্ট্যাটাসে?

পড়ুন...  


"১০ অক্টোবর ২০১২, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে লিখিত নিয়োগ পরীক্ষা 

অনুষ্ঠিত হয়৷ গাজীপুর জেলাধীন শ্রীপুর উপজেলার কেওয়া পূর্বখন্ড ওয়ার্ড নং ৫ এর এক আদিবাসী 

তারা সাংমা, মাতা কানন সাংমা, পিতা মুক্তিযোদ্ধা নিরঞ্জন সাংমা৷ 


এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা৷ তার লিখিত নিয়োগ পরীক্ষার রোল নং ৬৭৪৷ ভাওয়াল বদরে আলম 

সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৩ সালে বিএ অনার্স, এমএ ডিগ্রীপ্রাপ্ত, ওই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ 

নিয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের দিন - তারিখ - সময় সংবলিত 

চিঠিপ্রাপ্তির আশায় আশায় প্রায় দুই মাস কেটে যায়৷ অবশেষে শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ 

করে জানতে পারে যে, ২৭ মার্চ ২০১৩ সালে মৌখিক পরীক্ষা হয়ে গেছে৷ তারা সাংমা কর্তৃপক্ষের 

কাছে জানতে চান, হরতলের দিন মৌখিক পরীক্ষা (!) এ ছাড়া কোন ভাইভা কার্ড কেন তার বরাবর 

পাঠানো হয়নি ! প্রতিউত্তরে তাকে বলা হয়, লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের দীর্ঘদিন অতিবাহিত 

হলেও তারা সাংমা কেন তাদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাত বা যোগাযোগ করেনি ! বললেন এভাবে তো 

চাকরি হয় না৷ তারা সাংমা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে৷ দ্বিতীয়ত. বিএ অনার্স এমএ, তৃতীয়ত. 

একজন সঙ্গীতশিল্পী এবং সংস্কৃতিকর্মী৷ চতুর্থত. একজন আদিবাসী৷ পঞ্চমত. উচ্চ শিক্ষিত, রুচিশীল, 

মার্জিত, শিল্প - সংস্কৃতি তথা মুক্তচিন্তা - বুদ্ধি চর্চার মানুষ, তাহলে কি পেছনের দরজা দিয়ে দেখা - 

সাক্ষাত বা যোগাযোগ অথবা (গিভ এ্যান্ড টেক) ফর্মুলায় মা এগুনোর কারণেই ভাইভা কার্ড তথা 

চাকরিটা মিস !




মাননীয় কমিশনারের কাছে ঘটনাটা খুলে বলার প্রেক্ষিতে তারা সাংমা জানতে পারেন, উত্তীর্ণদের 

লিস্ট অনুমোদনে কমিশনারের কাছে জেলা শিক্ষা অফিসার গেলে কমিশনার স্বাক্ষর প্রদানের আগে 

জানতে চান ; হরতাল বা যে কোন কারণে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে ব্যর্থ হয়েছে এমন কেউ 

অবশিষ্ট আছে কিনা ? তারা সাংমার কোন মৌখিক পরীক্ষার কার্ড প্রেরণ করা হয়নি বা যে 

কোন কারণবশত তারা সাংমা মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি জানা সত্ত্বেও কেন কর্তৃপক্ষ 

কমিশনার মহোদয়কে বলেছেন যে, মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেয়ার এমন কেউ আর বাকি নেই !



তারা সাংমা মুক্তিযোদ্ধা কোটাভুক্ত, আদিবাসী কোটারও অন্তরভুক্ত, সঙ্গীতশিল্প - সংস্কৃতিমনা, 

উচ্চশিক্ষিতা৷ মেয়েটিকে ষড়যন্ত্রের ফাঁদে ফেলে তার কঠোর ত্যাগ, অধ্যবসায়, সম্ভাবনাময় সুবর্ণ 

সুযোগের সিঁড়ি ভেঙ্গেচুরে চুরমার করে দেয়া হলো৷ তারা সাংমার অভিযোগ যদি সত্যি হয়ে থাকে 

তাহলে এটা নিশ্চিত সে ষড়যন্ত্রের শিকার৷



আমাদের প্রশ্ন কর্তৃপক্ষ কি বলতে পারবে তারা সাংমার চেয়ে কম যোগ্যতা সম্পন্ন কোন প্রার্থী নিয়োগ 

পায়নি ? এতে কোন রকমের নিয়োগ বাণিজ্য হয়নি৷ এ প্রকল্পের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান 

শিক্ষক পদের চাকরিটা তারা সাংমার অসহায় দরিদ্র  পরিবারটির জন্য খুবই জরুরী ছিল ! কেন সে 

বঞ্চিত হলো ? একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বলে ? একজন আদিবাসী বলে ? কে দেবে 

এর জবাব !" 



**এই খবরটি দৈনিক জনকন্ঠে ২৮ এপ্রিল প্রকাশিত হয় লেখেছেন ডা. মো জয়নাল আবেদীন৷**