Wednesday, May 1, 2013

সরোবর ত সবার বুকেই (কাব্যগ্রন্থ)



সরোবর তো সবার বুকেই 




বাবুল ডি' নকরেক






উৎসর্গ


যারা ভালোবাসে...

যারা হারায়...

যারা ভুলে যায়...

হারিয়েও কাঁদে না...



আমার সব বন্ধুদের কে



সরোবর তো সবার বুকেই 






চলো, আর কষ্ট না কুড়াই...


অনেক দূর চলে গ্যাছি অযথা পথ ভুলে...
ফেলে আসা পথে; চলো ফিরে যাই...
আর কষ্ট না কুড়াই...
জোছনার জলে ভিজে ভিজে
বাঁধিয়েছি প্রশস্তির অসুখ...
চলো আর না ভিজি ঐ বৃষ্টিতে... 


যদিও ঘুড়ি উড়াইথাকে না সাথে লাটাই...
চলো ফিরে যাই..আর কষ্ট না কুড়াই... 
যে পথে সবাই চলেরৌদ্র-তাপে, শীতল-বরিষায়..
চলো চলে যাই...
আর কষ্ট না কুড়াই...





যাওয়া হয়নি যে পথে


এতকিছু ভাববার বয়স নয় তখনো
 ঠিকানা কি ভুল ছিলো? বুঝিনি এখনো
.
.
.

যে পথে হয়নি যাওয়া, আমায় কি পিছু ডাকে?
জানি না নিজেই আমি, কি করে বলি তোকে?

.
.
যে পথে যাইনি আমি, সে পথও আমারি রয়
ভড় দুপুরেও কেমন কেমন উত্তাল হাওয়া বয়?
.
.

পথে পথে, দিবা-রাতে, হয় যদিও দেখা
কথা বলি সঙ্গোপনে আজও একলা একা!
.
.

তুই ক্যানরে সে পথ হলি বল শুধু অকারণে?
চলেই যদি যাবি বন্ধু, বাসা বাধিস কেন মনে?
.
.

কেন বসে গান করিস? ভরা জোছনায়?
কেন ফিরে ফিরে আসিস হিদয় আঙ্গিনায়?
.
.

যে পথ ফেলে আসি, হাটি কেনো ঐ পথে?
ভুলিতে পারি না সে পথ, আজও কোনমতে!




তোমার জন্য এই আমি.... 


যদি তুমি চাও, আমার পুরো সকালটাই
তোমায় দিয়ে দিতে পারি; দিয়ে দিতে পারি,
আমার রোদেলা দুপুর, মেঘলা আকাশ, শেষ
বিকেলের সময়টাও, যদি চাও প্রিয় নারী!

যদি একবার চাও, বরষার জলে একলা ভিজে ভিজে,
কদমগুচ্ছ লয়ে হাতে আজীবন প্রতীক্ষায় থাকতে পারি;
আমার ভেতর আর বাহিরের সব দরোজা-জানালা 
তোমার জন্য খুলে রাখতে পারি, শুধু একবার চাও যদি নারী! 

যদি তুমি চাও, হিদয়ের সব রঙ মুছে দিতে পারি, 
দিতে পারি অজস্র চাঁদ-তারা সব; আমি পারি
চুকিয়ে ফেলতে জীবনের সমস্ত লেনদেন; পারি জীবনে 
জীবন মেলাবার সব করতে আয়োজন, যদি তুমি চাও নারী!

নিজকে জোছনার বাণে একেলা ডুবিয়ে মারতে পারি...
নোবেল আনতে পারি কবিতায়, সাথে যদি থাকো নারী!




ছুটি

ছেলেবেলার বন্ধুরা আমায় দিয়েছে ছুটি সেই কবেই;
খুব কাছের মানুষেরাও ব্লক দিয়েছে ফেইসবুকেও...
ফোন দিত যে বন্ধুটি, সেও বলে দিল 'আর নয়,
ফোন দিতে অসস্তি লাগে তোমাকে এখন!'

ভুল তো মানুষই করে; আমিও মানুষ দোষে-গুণে
যদি আর একবার সুযোগ পেতাম! দেখতে আমি
ন্যাড়া না হলেও তার স্বভাব আমার আছে!
সারাজীবনে ঐ ভুল হয় ত আর হতই না ভুলেভালেও!

জানি, জীবন এমনই, সোনার ডিম দেয়া রাজঁহাস
কৃষকের ঘরে বার বার আসে না!
সুযোগ সোনার হরিণ...আদম-হবার জীবনেও
আসেনি সে সুযোগ ...আদম-হবার সন্তান আমিও,
আমারও কঠোর শাস্তিই হোক...
.
.
.
.
আমারও যেন ক্ষমা না হয় ...
আমি ত দোজকের আগুনেই পুড়তে চাই
আ-জী-ব-ন
এবং
প-র-জ-ন-মে-ও...
.
.
.
নদী, আমায় ক্ষমা করো না কখনো, কোনদিন...
আসলে আমি তোমায় ভালোবাসি না! তুমিও বেসো না...





ভোররাতের স্বপ্ন

আমার মল্লিকাদির বিয়ে হলো আজি...
দাদার সাথে পরিচয় ছিল না তারভাগ্য ভাল তার,
দিদির মত মেয়েপেল; এখন বিয়ের পালা আমার....


মল্লিকা দি বলে, তার ভোররাতের স্বপ্ন দেখা
সত্যি হয়ে গেল; ভাগ্যেই এমন ছিল লেখা!
আজ কাক ডাকা ভোরে স্বপ্ন তোকে নিয়ে
বলা নেই কওয়া নেই তোর-আমার বিয়ে!

রূপা, হোক স্বপ্নে, তবুও এখন আমার বউ তুই
কি করি বল তো? বুঝতে পারছি না আর কিছুই
ভালো যদি বাসো মেয়ে এসো হাত টি ধরে
লজ্জা কিসের? সমাজ নমাজ কারা কেয়ার করে?
.
.
.
জানি, তোর স্বপ্ন আরো বড়, অনেক বড় হবি তুই
আমিই কি সে স্বপ্ন মেয়ে? জানি না তার কিছুই.....




কষ্ট কুড়ানোর গল্প

মুখ ফোটে বলতে না পারায়
ভালোবাসা ফসকে যায়!
রটে না তাই এই প্রেম পাড়ায় পাড়ায়...


ভালোবাসা, তুই আমারে অনেক দূরে দূরে রাখিস
কষ্ট নেই তবুও আর, আমায় হৃদয়ে না থাকিস!
আমি দূরের দেশের মেঘ, উড়ে ঘুরে বেড়াই
ভালোবেসে একলা একা, তোর কষ্টগুলো কুড়াই।




হিদয়ে দুর্বাঘাস...

হিদয় খুব বেশি কথা বলে ইদানিং...
বড্ড বেশি নস্টালজিয়ায় ভেসে বেড়ায়
এই মন; ঐ আকাশটায়, সীমাহীন মুগ্ধতায়...


আকাশ, আমার আকাশ বলে চিৎকার
করি; আকাশ আমায় গেলো ছাড়ি; ফিরেও
তাকালো না, আমার বনলতা সেন, আমার...!

হায় ভালোবাসা! পাখির বাসায় দুর্বাঘাস তবু
যেনো সে! সে ঠিক ঠিক জেগে উঠে মধ্য দুপুরে।


হিদয়ে উত্তাল হাওয়া...
আমি পথ খুঁজি পথ...
পথে পথে; আমি আজো ভালোবাসি আকাশ!
ঘাস-ফুল-নদী-আকাশ-মুগ্ধতা...
তুমি না এলে;
আমি তবু দেবদাস হবো না, সোজা কথা...!

তুমি আসো আর না আসো, যদি আর নাই ভালোবাসো;
নদী আমার, আমি দেবদাস হবো না; সোজা কথা!



বন্ধন

ঝিক ঝিকে ঝিক ট্রেন চলেছে
আমার বুকের 'পরে;
জানি না ত চলবে এমন,
কত বছর ধরে?

পাশা পাশি থাকি তবু
স্বপ্নগুলো ফাঁকা!
ভালোবাসি তবু কেন
সমান্তরালে থাকা....?



দু:খনূপুর ১


ভালোবাসা? সে তো আকাশে মুগ্ধ মেঘের ভেসে বেড়ানো মধ্যদুপুর...
জীবন? সে তো ভালোবাসা হারিয়ে ফেলা এক সমুদ্র দু:খনূপুর।
আকাশ? সে তো হিদয়ে ঢিল ছোঁড়া এক দানব-দেবীর নাম
স্বপ্ন? সে তো জোনাকি হয়ে জ্বলে থাকা এক শিখা অনির্বাণ....



দু:খনূপুর ২ 

দেবতাদের মান বাচাঁতে এই জল
আকাশে উড়াল দিলো একদিন,
রাশি রাশি কষ্ট ছুঁড়ে ফেলে...
মেঘ হয়ে ডানা মেলে উড়তে
শিখলো, অনন্ত আকাশের বুকে;
অন্ধকারে জোনাকি দ্বীপ জ্বেলে।

নিভে যাওয়া জোছনার আলো, লাগে
বড় ভালো, কখনো সুখ, কখনো দু:খ
যেনো অনির্বাণ জ্বলে ধিকি ধিকি;
এই মেঘ, এই বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে
শুকতারা বাঁধিয়ে ফেলে নির্মল অসুখ;
রাধা, এ সুখ আমি কোথায় রাখি?

একদিন যে মেয়ের নাম রাখলে পূর্ণতা
প্রতিদিন সে বড় হয়; বাড়ে কষ্ট কবিতা।



দু:খনূপুর ৩

যদি প্রয়োজন হয়, ঐ হিমালয়ের চূড়ায় উঠবার, তুমি দ্যাখো,
আমি, আমি ঠিক ঠিক উঠে যাব ঐখানে একদিন; 
মূসা ভাইযে ভাবে ধার-দেনা করে করে, ঐ উচুতে, 
ঐ উচুতে গিয়েছিলো উঠে। প্রয়োজনে আমিও 
নিয়ে নিতে পারি এমন ব্যাংক ঋণ! 


যদি কবিতায় নোবেল ছিনিয়ে আনা লাগে,
ঠিক অমন কবিই হবো...আমি হবো রাত জাগা একলা পাখি, 
করবো একলা ডাকাডাকি;আমি ঠিক ঠিক পৌঁছে যাবো, 
রাধা, রাত-দূপুরে হলেও; যেখানটায়
যাবার ইচ্ছে ছিলো, যাবোই যাব, 
আমি যেখানেই যেভাবে থাকি। 

আমি হারিয়ে যদি ফেলি আমার সমস্ত আকাশসীমা; আর
হারাই উড়ো-উড়ি করবার সমস্ত অধিকার; সত্যি, আমি,
তবু শব্দ করবো চুরি, শব্দে শব্দে হবে আর এক নূতন
তাজমহল; না হোক সে হীরা-পান্না-চুন্নির মত অত দামী। 

রাধা, হারিয়ে ফেলি যদি আমার সমস্ত সকাল আর মধ্যদুপুর..
তোমায় পাবার জন্য, প্রয়োজনে জম্মাবো আবার, হব দু:খনূপুর।





দু:খনূপুর ৪ 


সত্যি বলছি, আমি কবিতা লেখা শেষে শিল্পী-কবির ছুঁড়ে ফেলা
একটি কষ্টকলম; হাজারো অসাধারণ গোলাপ-গন্ধার ভীড়ে অতি
সাধারণ কষ্ট-নূপুর; কৃষ্ণেরাই যেখানে দীর্ঘশ্বাস ফেলে, আমি, আমি,
সেখানে আমি অনেক তুচ্ছ-নুপুর...যদিও আমি নিজেই শিল্পীকবি! 


আমি অসাধারণ হয়ে ফুটতে পারিনি হিদয়ে দু:খনূপুর, বাহিরের
কৃষ্ণচূড়ার মত পলাশ-শিমূল হই কি করে? তাই আমি জুঁই-এর
কবিতায় গৃহকোণে পড়ে থাকা ‘তারছেঁড়া গীটার’, ধূলিমাঝে পড়ে
থাকা 'গীত শেষে বীণা', নিজের ছুঁড়ে ফেলা কষ্ট-কলম; রাধার রূপে
পিষ্ট হওয়া কৃষ্ণ; মেঘের মত হিদয়হারা মেঘ। আকাশে নিষিদ্ধ একলা
শালিক! 

প্রতি দিন অন্ধ রাধার সামনে হাটি, সে ফিরে তাকায় না! 
রাধা, রাধা আজ আর আমার নয়...তবুও সে আমারই রাধা;
হাত ছাড়িয়ে যায় যদি সে, যাক্ না; সে হিদয়ে থাকুক বাঁধা। 
রাধা, রাধা আর আমার নয়...তবুও সে আমারই রাধা; আর
আমি আকাশ বিহীন মেঘ; মৃতপ্রায় পড়ে থাকা, বেওয়ারিশ মেঘ...।




অদ্বিতীয়া, তুমি অদ্বিতীয়া-ই...

এতদিনে বড় একটা সংসার হয়ে গেছে তোমার...
ইচ্ছে করলেই হয় ত আর আমাদের যে 'ফেলে আসা দিন'
সেখানটায় ফিরে তাকাতে পারবে না;
কন্যা, আমি তোমার সুখ বুঝি, তোমার দু:খ বুঝি।


যদি আর একবার সময় পেতাম! তবে দেখতে আমিও
তোমার খুব না হলেও অন্যরকম 'ভালো' সঙ্গী হতাম।
তোমার হিদয়-মনে অন্যরকম ভালোবাসার বিচিত্র সব
সুরলহরি দিয়ে তোমায় ঠিক ঠিক মুগ্ধ করে রাখতাম!

হায়! ফেলে আসা দিন! সে কি কখনো আর ফিরে ফিরে
আসবে? আমি বার বার ফিরে ফিরে তাকাই....
অদ্বিতীয়া, যে সাংবিধানিক স্বীকৃতির স্বপ্ন আমরা দেখতাম,
তা অধরাই রয়ে গেছে ..এই যেমন রইলে তুমি!


আচ্ছা, তোমারও কি বুকের ভেতর এমন ফাঁকা ফাঁকা লাগে?
শূণ্যতা বোধ হয়? বলেতে কি ইচ্ছে করে 'আজো ভালোবাসি'?

অদ্বিতীয়া, আমি তোমাকেও চাই, তোমাকেও! হাহাহা..
সম্ভব-অসম্ভ ববুঝি না অমি; কী হবে ঐ সাংবিধানিক
স্বীকৃতি দিয়ে, তোমাকে ছাড়া?




দু:খ বিলাস

অতনু, অতপর....

তুই আমায় এক সমুদ্র দু:খ-কষ্ট দিস
রোদেলা দুপুর ইচ্ছে মতন, যখন খুশি নিস্।

আমায় দিস্ কষ্টনূপুর...যত আছে তোর
আমি না হয় পাঠিয়ে দিব নিত্য নতুন ভোর।

শরীর আমার চাইনে রাধা, সে তুই সাথে নিয়ে যাস্
আমি না হয় একা র’ব, হয়ে জীবনানন্দ দাস।

যত পারিস্ ত্বরা করি সেরে ফেলিস লেন-দেন
তবু থাকিস্ হিদয় রাজ্যে হয়ে বনলতা সেন!



কথোপকথন

: হ্যালো...
: হেলেই ত আছি, বলো...
: তোর একটা প্রিয় ফুলের নাম বল..
: মেঘলতা..
: এ আবার কী ফুলের নাম! শুনিনি ত আগে?
: আজ ত শুনলি? আমিও দেখিনি আজো..
: তাহলে?
: বুদ্ধ কোথাকার, এই ফুল আমার হিদয়ে ফুটে
: আমার জন্য?
: নাহ! আমার ভালোবাসার মানুষটার জন্য
: আমি ছাড়া কে আছে আর তোর?
: নিজের উপর এত আস্থা?
: নিশ্চয়ই! যে মেঘকে জড়িয়ে থাকে, সেই ত মেঘলতা...?
: হাহাহা...বয়েই গ্যাছে আমার...হাহাহা...
.
.
: হাহাহা...তোর একজন প্রিয় কবির নাম বল..
: তুই...
: বাজে কথা, তুই কি একটা নাম হলো?
: হূমমম..না হবার কী আছে? তুই তুই তুই..
: কী যে বলিস!
: আজ, অন্তত: ঠিক এই মুহূর্তে! তুই সব থেকে প্রিয়
: তোর প্রিয় শিল্পী?
: তুই, তুই এবং তুই
: ফাজিল কোথাকার...বান্দর...
: হাহাহা... তুইও বান্দর..
: মানিকেই মানিক চিনে
: তুই চিরদিন আমার বান্দর থাকিস!
: হিদয়ে রাখবি?
: বুকের মধ্যে রাখবো আজীবন
: আজীবন? সত্যি?
: সত্যি মিথ্যে বুঝি না, রাখতে চাই
: আমি থাকতে চাই তোর বুকের মধ্যেই
: তুই সত্যি অসভ্য, বান্দর। খুব পছন্দের বান্দর!
: হাহাহাহা...




চন্দ্রপাহাড় ১

যদি ফিরে আসিস কোনোদিন ! ঐ চন্দ্রপাহাড়ের চূড়ায় তোমায় নিয়ে যাব একদিন।
এই পৃথিবীর সব থেকে সুখি মানুষ হবে এ্ই কৃষ্ণ সেদিন।


যদি আবার নতূন করে ফেলে আসা ভালোবাসা ফিরে পাই!
নোরা-র মত দরাজ করে দ্বার রুদ্ধ করি বলি দিব, "মেয়ে, তোর খাওয়া নাই।
আমার নিজেরও খাওয়া নাই ! আর ভালোলাগে না এমন জীবন.....

প্রায় সব আলো নিভে গ্যাছে ! তবু সব দরোজা খোলা রাখি,
জানালা খোলা রাখি; তুই যদি ফিরে আসিস আবার কোনোদিন!
তোর সব পছন্দের ফুল, এই আমার হিদয়ে প্রতিদিন ফুটে
তুই ইচ্ছে মতন নিয়ে যাস সব ফুল; দাম চাইবো না মোটে।

সব দরোজা খোলা রাখি, জানালা খোলা রাখি; তুই যদি ফিরে
আসিস আবার কোনোদিন! যদি কাঁদে মন, ফিরিস যখন তখন।
এই মন, মনজোছনায় ভিজে ভিজে, রাত পার করে, একা একা
এই হিদয় কেমন কেমন করে! রাধা, আর কত এমন দূরে থাকা?



চন্দ্রপাহাড়

নৃত্য শেষে পায়ের নূপুর ধূলোতেই লুটায়..
.সে নূপুরের মত আমিও না রইলাম দেবীর পায়!
নেচে-গেয়ে রাধা আমায় ফেলি দিলে ছুড়ে,
থেকে গেলো হিদয় মাঝে গিয়ে দূরে, বহুদূরে...

চন্দ্রপাহাড় দেখা হলো না আমার, রাধা কে নিয়ে,
কারে জেনো নিয়ে...সে আমা থেকে গেলো পালিয়ে
কৃষ্ণ-হিদয় কেবোলি কাঁদে ওবুঝ শিশুর মত;
তুই রাধা, শুধু একবার বল, ক্যান, ক্যান কষ্ট দিলি অত?


রাধা, অই রাধা, দূরে গেছিস বলেই কি আর তুই নোস আমার?
তুই চলে গেলি বলে আমার ইচ্ছেবনে রইলো অধরা চন্দ্রপাহাড়.......




পাতাঝড়া দিন

সেই কবে আমি পথ ছেড়ে অন্যপথে চলে এসেছি।
নিজের হাতে আমি মুছে দিয়েছি জীবনের সব রঙ!

নদী, আমি তোকে আমার আস্ত মন দিয়ে দিয়েছি!
তুই আমায় অবিশ্বাস করিস? ভালোলেগেছিলো বলেই
চৈত্রের তপ্ত দুপুরে একদিন তোর ছায়ায় বসে তোর
বুকে মুখ ঘসেছিলাম! তোর স্তনাগ্রে এঁকে দিয়েছিলাম
অমোচনীয় এক প্রীতি চুম্বন...তুই ভুলে গেলি? যা! সব
ভুলে যা; এই আমি, আজো কবিতা লিখি তোকে নিয়েই....

আজ ভালোবাসি শুধু তোমাকেই, বিপদের বন্ধু তুমি..
যে আমায় ছেড়ে যায়, ঘন ঘোর বরিষায়, সে রইলে
দেবী; পূজো দিই তারে, তবু আমি ভালোবাসি,
যে পথে একলা হাটি, তুই ভালোবাসিস আর নাই বাসিস!
তোকে আমার ইচ্ছেপাহাড়ে ঐ উচুতে, ঐ উচুতে রাখি
.
.
.
এবার তুই বল, তুই মনে থাকবি? না হিদয়ে? তুই বল...





ইচ্ছেগুলো...


ভেঙে গেছে যে মন অকারণ,
সে উড়ে উড়ে যাক দূরে আরো দূরে...
ঝড়ের বেগে মেঘে মেঘে সে উড়ুক,
উড়ুক সে নিজেরে ভুলে...
আমি তাই ভুলে ভুলে যাই...

নি:শব্দ ডাক শুনতে পাওনি তুমি;
তাই যোজন যোজন দূরে আজ তুমি আর আমি!

কতদূর এক পথ আর এক পথ থেকে...
উড়ুক সে নিজেরে ভুলে...
আমি তাই ভুলে ভুলে যাই...
সব ইচ্ছেগুলো কেমন এলোমেলো...
মেঘেরা আকাশে উড়ে, আমিও উড়ি
স্মৃতিরা তবু থাকে জড়াজড়ি করি!



একটি একাকী ভোর...



আমরা এর আগে কি কখন রাত জেগেছিলাম
একটি ভোরের জন্য? একটি ইলিশের মত
ফর্সা সকালের স্বপ্ন কি দেখেছিলাম আমরা?

কখন কি স্বপ্ন বুনেছিলাম নতুন দিনের? মনে পড়ে কি???
কত অন্ধকার রাত আমরা পার করেছি হাতে হাত
রেখে; নতুন এক সোনালি ভোরের কবিতা লিখব
বলে! কত পথ একে অপরের পায়ের তালে তাল
রেখে হেঁটেছি একটি নতুন সূর্যের ছবি আঁকব বলে!
কত রাত, কত চাঁদ সঙ্গী ছিল আমাদের সাথে
অন্ধকার হারিয়ে গেলে হাত ছাড়িয়ে নিলে...


আমি রঙ, তুলি হাতে নিয়ে বসে থাকি আজো...
দুজনে একটি সূর্য উঠা ভোরের ছবি আঁকব বলে
.
.
.
.
.
.
অ হ না, তুমি কথা না বলে, কেন চলে গেলে?




আমার আমি..


এই বার সত্যি কথাই বলছি আমি...
মনোযোগ দিয়ে শোন..সত্যি বলছি আমি..
রবীন্দ্র সঙ্গীত এক বিন্দু ভালোলাগে না আমার;
মিথ্যে করে বলেছিলাম 'ভালোবাসি, খুব ভালোবাসি..

'নজরুলের গান জ্বালা ধরায় মনের গভীরে; প্রচন্ড
ঘেন্না জাগায় মানুষের প্রতি, সকল জীবের প্রতি!
আমি ঘেন্না করি তোমার সমস্ত মন-হিদয়-শরীর।

শিমুল-পলাশ, কৃষ্ণ কিংবা রাধাচূড়ায় মন আর
আগের মত টানে না আমি এখন এই সব
এমন সব ফুল পায়ে দলি, সামনে চলি, আমি, আমি'
সৃষ্টি সুখের উল্লাসে' মেতে থাকি না, আমি আছড়ে
আছড়ে ভেঙে ফেলি হিদয়ে যত ছিলো শব্দের তাজমহল!


 আমি কাল-বোশেখীর ঝড়, তছনছ করিচলি নিরন্তর...
আমি মহাপ্রলয়, সব তুচ্ছ করি, সব
অসাড়! সব তুচ্ছ আমার কাছে...সব তুচ্ছ...


কী ভালোবাসি আমি? জানতে ইচ্ছে করে নিশ্চয়ই?
আমি ভালোবাসি গাঁজা, ভাঙ, তারি, ব্র্যান্ডি, হুইস্কি, বার্গান্ডি...
ভালোবাসি দু'পেয়ে জানুয়ারদের ছুড়ে ফেলা নিষিদ্ধপল্লীর মেয়ে;
শুঁড়ি-বাড়ি, হুমড়ি খেয়ে পড়ি........

আমি পায়ে দলা দুর্বাঘাস! হাহাহা..নাহ! আমি, আমি
শিশ নাগ; যারে পাই ছোবলে ছোবলে নীল করিদিই!
ভোরের মুক্তো-শিশির? নাহ! আমি ইনসিনারেটার,
ঝলসে, ঝলসে দিই শিশির আর বরষার সব জল...

ভালোবাসা! আহা ভালোবাসা! আমি ভালোবাসার
গোষ্টি কিলাই! যত্তসব! অই সব ফেলে দিই নর্দমায়....

অ হ না, মানিক আমার, সোনা আমার
সত্যি বলছি, তোমাকে আমি ভুলে গ্যাছি!
আমি এ্যাখোন শুধু ভালোবাসি এই আমাকেই...
নিজের প্রেমে ডুবে থাকি মদ-মেয়ে নিয়ে!

একবার চুল ছুঁতে গেলে বললি, "এ্যাই, চুল ধরবি না"
সত্যি সত্যি কখনো তোর চুল ছুঁবো না আর!
সামান্য চুলে যার লোভ, সে তোকে ভালোবাসে না অহনা।
আমি ভালোবাসি না তোকে...

সত্যি বলছি অহনা, তোকে ভালোবাসিনি কখনো,
ভালোবাসি না এখনো, ভালোবাসবো না আর কোনদিন!
তুই আমায় ঘেন্না করিস? অভিশাপ দিস...যত্ত খুশি;
থুথু দিস সারা মূখে; কিচ্ছু যায় আসে না আমার!

যে সত্যি কথাগুলোন তোমায় বললেম, আমি চাই
সবসময় তোকে বলি...কিন্তু আমার আমি, আমার
আস্ত মন, সমস্ত হিদয়, এতক্ষণ যা বললেম, ঠিক
তার উল্টো কথা বলে...পুরোটাই উলটো...
পুরোটাই যে সত্যি কথাগুলোন তোমায় বললেম,
আমি চাইসবসময় তোকে বলি...কিন্তু আমার আমি, আমার
আস্ত মন, সমস্ত হিদয় তার উল্টো কথা বলে...
তোকে ভালোবাসিরে...সত্যি সত্যি ভালোবাসি..
মিথ্যে মিথ্যে ভা..লো..বা..সি। তুই আমায় না বাসিস!

অহনা, তুই আমার হলি না ক্যান? ক্যান তুই দেখলি না
আমি তোর 'হিয়ার মাঝে লুকিয়ে' ছিলাম? ক্যান? ক্যান?




আকাশচূড়া..

ভার্জিনিয়ার আকাশে চাঁদ ডুবে...
অন্ধকার রাত্রিতে অজস্র তারা
জ্বলে স্নেহা-সোপানদের বাড়ির আঙিনায়...
আমি একাকী সাত্তারভাইয়ের গল্প শুনি;
তাঁর সংগ্রামমূখর দিন, মানুষের জন্য কাজ...
তাঁর আকাশচূড়ায় উঠে বৃষ্টি ধরা, মেঘ ছুঁয়ে দেয়া অইসব..


আমারো ইচ্ছে করে তোমায় নিয়ে অই আকাশচূড়ায় উঠবো একদিন,
যদি এই মেঘের দেশে আসো কোনোদিন! তোমার হাত ধরে হাটবো
অই আকাশে; হিম করা মেঘ আমাদের ছুঁয়ে যাবে, বৃষ্টিরা আমাদের
ভিজিয়ে দিয়ে যাবে! দুই হিদয় ল্যাপ্টে যাবে মেঘ-বৃষ্টির আলিঙ্গণে...


এ্যাই, তুমি কি শুনছো? সত্যি বলছি, অই যে স্কাইল্যান্ড, যার নাম
আমি দিয়েছি আকাশচূড়া, সেখানে তোকে নিয়ে যাবোই যাবো একদিন...
অতে যদি আমি সমস্ত পৃথিবী হারাই, আমি হাসিমূখে এই পৃথিবী ছেড়ে
অন্যকোথাও চলে যাবো...অন্যকোথাও...তারপর তুমি যদি চাও থেকে
যেও, চলে যেও যেথা তোমার হিদয় যেতে মন চায়! ভালোবেসো যাকে খুশি...

তবু আমার হিদয়ের ঐ সপ্নচূড়ায় আমি শুধু তোমায় রাখবো চিরদিন....





খুঁজি ফিরি তোমাকেই

আজো আমি ভালোবাসি সবুজ মাঠ-ঘাট-প্রান্তর...
ভালোবাসি ছেলেবেলার বৌচি, কানামাছি, দাড়িয়াবান্ধা
গোল্লাছুট আর লুকোচুরি লুকোচুরি ছেলেখেলা...
ভালোবাসি অই গাড়ির পেছনে পেট্রোলের ধোঁয়া
উড়ানো গন্ধ! আজো সমস্ত মন, অবুঝ হিদয় এই
তোমারেই খোঁজে, এই তোমাকেই, ঠিক তোমাকেই...


তুমি ধরা দিয়েও অধরাই রইলে চিরদিন; বুকের
ভেতরে থেকেও হারিয়ে গেলে এই এক জীবন থেকে...
জীবনের গল্প থেমে থাকে এক অজানা পথের বাঁকে
এসে...জীবন এমন ক্যান?...খোদা, জীবন এমন ক্যান?

আমি আজো ভালোবাসি দুর্বাঘাস, ভালোবাসি মেঘ,
নীল পদ্ম ফুল; ভালোবাসি ধুলোমাখা পথ, ভালোবাসি
অসীম আকাশ...ভালোবাসি থোকা থোকা জমাটবাঁধা
সবুজ জমিনে লাল লাল কষ্ট...আগের জীবনেও আমি
এগুলোই ভালোবাসতাম! তোমাকেই ভালোবাসতাম;
শুধু তোমাকেই ভালোবাসতাম, এই তোমাকেই...


আমি আবারো তোমায় আমার করে পেতে চাই...
আমি আবারো তোমাকেই নতুন করে ফিরে পেতে চাই..
আমি প্রতিদিন এই তোমাকেই খুঁজি..প্রতিদিনই;
স্বাধীনতা, আমার স্বাধীনতা, তুমি আমার, শুধুই আমার
আমার আজীবনের স্বপ্ন, আমার, আমার, আমার স্বাধীনতা..





জ্যোছনা যায় ফিরে
আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি নামুকজ্যোৎস্না পড়ুক গায়জোনাকীরা গাইতে থাকুকএই হৃদয় আঙিনায়...
সন্ধ্যা নামুক দিন ফুরোলেপুরো আকাশ জুড়ে!সন্ধ্যা-তারায় কি আসে যায়আলো যদি উছলে পড়ে?
যে যাবে সে চলেই যাবেভাবনা এত কিসে?পাই বা না পাই, নাই ক্ষতি নাইযদি একটু ভালোবাসে!
জ্যোৎস্না দেবী, কত দেখাবি তোর ঐ দেমাগ ভাই ?থাকিস আমার মনের ঘরেলাজে কি মরিস তাই?
তোমার তুমি সঙ্গে থাকুকঘুমোই একা নীড়ে!শূণ্যতা পাক পূর্ণতা আজযাক জোছনা ফিরে!
সত্যি বলছি...
খুশি, আমি তোমায় ভালোবাসি না
কে রাখে তোর খোঁজ! আমি?
চাঁদের দেশেও যাই মাঝে সাঝে
সেখানেও সাথে নেই তুমি!
আমার গল্প কবিতায়
যে আকাশজুড়ে থাকে, সে
কেউ না, সে আমার আমি
আমি অন্ধ নিজের প্রেমে!
তুমি মুক্ত বিহঙ্গ
যা যেখানে খুশি!
আমি তোকে আর না খুঁজি
আর না ভালোবাসি ...
প্রার্থনা ১
অনেক ত হলো আর কত কষ্ট দিবি?সব ত দিলাম, আর কত দাম নিবি?পিষ্ট হওয়া কাঁচালঙ্কার কত দাম হয়?ঝলসানো শরীরটারে দেখাস পুড়ার ভয়?দোহায় তোর, আর বলিস না ভালোবাসি..এই বেশ আছি, আমি এই বেশ আছি...
প্রার্থনা ২
তুমি যদি শিশির হও, আমি ঠিক ঠিক হবোমাটি কামড়ে পড়ে থাকা হলুদ দূর্বাঘাস..আলু-থালু-কালো রাত্রিতে, অপেক্ষায়, প্রতীক্ষায়বিবর্ণ হওয়া ভোরের বিষন্ন বাতাস...কবিরা মরে যায়, পড়ে থাকে কবিতা !আমি কবি হয়ে উঠিনি...তাই মরি মরি করে বেঁচে থাকিএই দুই একটা অ-কবিতাই ত লিখিদোহায় তোমার, আমায় কবি হতে বলো না...
প্রার্থনা ৩
হিদয়ের তৃষ্ণা বেড়ে চলে দিন দিনচক্রবৃদ্ধি হারে; বুঝে না বুঝে প্রতীক্ষা করিরাতজাগা শিশিরের লাগি, অবুঝ ঘাসের মতোন...ভালোবাসা এ্যাখোন পাখির বাসার মত বাচ্চাফুটানোর পর একলা পড়ে থাকে না; খাসজমিরমত দখল হয় সব উড়ে থাকা মন, পড়ে থাকাহিদয়, পুড়ে থাকা শরীর...কার জন্য এই মন এমন উত্তাল হয় ঝড়োবৃষ্টিরমতো? উতলায় আকুল হয় কার জন্য এই চাতকপাখির হিয়া? কারে দেখে নড়ে-চড়েএই চাঁদ-ঝলসানো শরীর?কার জন্য কবি এমন হলো জীবন্ত লাশ?কার জন্যে কবিতা লেখে আর এক জীনানন্দ দাশ?খোদা, তুই কয়া দে...আমি জানি না
এক জীবনের গল্প...
সাত-সমুদ্র-তের-নদীর পাড়ে বসি, আমি তোরকাব্য লিখি; সমুদ্র সেচে অনিন্দ্য সুন্দরমুক্তো দেবার ইচ্ছে ছিলো খুব, পারিনি;ছেলেবেলায় কেমন করে ভেঙ্গেছিলো সে ঘর! গল্পটা খুব ছোট্ট; সুন্দর করে সাজানো, গুছিয়েগুছিয়ে লেখা; পড়া হয়নি কারো, তাই ফেলি মুছিয়েএই তুই-আমি, চিরদিন আমি-তুই, যাই বলিস্ তুইশুধুই ত দূরে থাকা, মন-হিদয়ে দুজনে ল্যাপ্টে রই। কাছে থাকিস আর দূরে থাকিস, থাকিস ত এই মনেতুই কবিতা পড়িস, কথা বলিস, থাকিস হিদয় গহীনে।গান শোনিস‌, গান করিস, এসএমএস দিস, যখন লাগে একাভাল-মন্দে দিন কাটে যায়, নাইবা হলো দেখা! ঝড় আসে গো ঝড়ের পরে, বাতাস ভারি লাগে তোকে হিদয় মাঝে রেখে দিতে বড় সাধ জাগে?
ভয়াবহ এক দ্বীপে একদিন!
এক মেঘ বরষার আকাশে পাখনা মেলি একদিন,দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া আবহাওয়ায় ঠিক জানি নাকেন ডানা মেলা-মেলি খেলি?
অন্ধকার সময় আমায় তাড়া করে!পাষাণ, পাগলা কুকুরের মত!দৌড়ে দৌড়ে ক্লান্ত আমি, ভাই বলি আজ কারে?
নিকশ কালো এক দ্বীপে বসে আছি একাসঙ্গীরা সব পালিয়ে গেলে, আমায় একলা ফেলেনাই কারো আর দেখা...
এক মেঘ বরষার আকাশে পাখনা মেলি একদিন,অজানা দ্বীপে একা একা বড় কৌতূহলীঠিক জানি না কেন একা একা ডানা মেলি খেলি?
মেঘ বরষার ঘন ঘটায়, মনটা আমা্র আজ কেমন এলোমেলো ! খোদা! জানি না, আমায় নিয়ে তুমি কেন এমন খেলা খেলো ?
নিঃসঙ্গ মেঘ
একে অপরকে ছাড়িয়ে গেছে, ছুটে চলা দুটো গাড়িতার একটি তুমি হলে, অপরটা আমিই তো হব নারী! জীবন এমন, কেমন রুঢ়, জেনেছ আজ হয় ত তুমিকখনো হয়ত তোমার তোমাকে জানতে চাইনি আমিই!
দূর থেকে আমাদের দেখে হয় ত মেঘলা আকাশ উঠেছে কেঁদে কী আবেগে ফেলেছে দীর্ঘশ্বাস!এটাই জীবন, বাস্তবতা এখন জেনে গেছ এতদিনে তুমি!কখনই চাওনি জানতে হিদয় গভীরে কী চাই এই আমি।
হয় ত একদিন তুমি আমি এ সব ভেবে ভেবেবিড়ালের মত মিউ মিউ করে অকারণেই উঠব কেঁদে!অসংখ্য বৃষ্টি কণা আমার হিদয় দখল করিকী তান্ডব করিছে জান? হিদয় রক্তে ছড়াছড়ি!
মুক্তোর মত শিশির কণা কেবলই মিলিয়া যায়তুমি পারলে নারী, আমি ভুলিতে পারলাম না, হায়!
শোধ
তুমি চলে যাও বলে,যাই আমিও চলে...এখন দু'জনই বন্ধনহীন....
এক পূণির্মারাত্রি..১
না, মনে হয় ঐ কথা বলিনি কখনো...বল, কখনো কি চেয়েছি তোর ভালোবাসা?কখনো কি বলেছি, 'ভালোলাগে কাছে আসা?'
না চেয়েছি মন, না তোর শরীর...মন? তুই যারে খুশি দিস; তোর হিদয়তোর কাছেই থাক; আমার কোনটাই নেই প্রয়োজন।তুই না বাসিস, শুধু আমায় ভালোবাসতে দিসএক পূর্ণিমারাত্রিতে দু'দন্ড হিদয়ে টেনে নিস!
এক পূর্ণিমারাত্রি... ২
এমন রূপালি রাত বুঝিবা নামেনি এই পৃথিবীতে।অপূর্ব জ্যোৎস্নার রাত আর রাধার গানে আজ আমিএই পৃথিবীর সব থেকে সুখি মানুস, সুখি...
রাধা, আমার রাধা সহসাই আমার হাত ধরেবললে, ''আজ সত্যি তোর হাত ধরে হাটতে ইচ্ছেকরছে! এমন রাত আর পূণিমার চাঁদ আমি দেখিনিআগে; তুমি আমার, সব সময়ের আমার!''
মনের অজান্তে আমি ধরে বসি কাঁশফুলের মত অরকোমল এক হাত; আর আমার বাঁ হাত টা ওর চুলছুঁয়ে ধীরে নামে কোমরে...রাধা তার মুখ ফেরায়েআমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখে, 'ঢেলে দেয় ভালোবাসার বিষ'!হাত ছাড়িয়ে রাধা দু'হাতে আমায় ওর বুকে জড়ায়ে পিষ্টকরে ফেলে! আমরা আবারো ফিরে যাই ২১ বছর আগে......
ফিরি ভালোবাসায়...
সাদা মেঘ যায় ভেসে, যেনো চাঁদের আলো ঢাকার অযথাচেস্টা করে, ভালোবেসে! 'বিমূর্ত এই রাত্রি আমার...নাহ! এ স্বপ্ন নয়, সত্যি ! এমন পূর্ণিমার আলো, চাঁদ কোথা পেলো? 'মৌনতার সুতোয় বোনা.'..রাধা, রাধা,আমার রাধা, আজ আবার সত্যি ফিরে এলো!
এমন চাঁদের আলো, যদি মরে যাই তাও ভালো;দ্যাখো, দ্যাখো, ঐ মেঘ উড়ে চাঁদের কোল ঘেঁষে! রাধা আমায় বললে, 'আমি সব ছেড়ে চলে আসবো,এমন কোন এক রাতে আবার তোমায় ভালোবেসে।'




আগুন আর জলের গল্প

চুলোর আগুনে দিলাম হাত, পুড়লো না এতটুকু!
দীঘির জলে দিলাম সাতার, ভিজলো না শরীর...
আগুন আর জল আকাশের হাজারো সন্তানদের
মতন কাছের করে নিলে, অ হ না তুই নিলি না!


তুই কি আসলে বুঝিস, ভালোবাসা মানে কি?




বন্ধু আজীবন ১

তুমি নেই পাশে ভাবতেই হিদয় আজ
কেমন যেনো বিষাদে ছেয়ে গেলো
রুপালি জোছনা যেনো উঠলো কেঁদে
আঁখি চাইল করে ছলো ছলো...

তুমি নেই পাশে বন্ধু আমার ভাবতেই
বিষাদে মন যায় ছেয়ে
তুমি আমার হয়েও বল দেখি
দূরে, দূরে থাকো কেন মেয়ে???


বন্ধু তুমি আজও দূরে থেকেও
পাশে আছো বলেই লিখে যাই কবিতা!
কবিতায় লাগে সুরের ছোঁয়া
প্রাণ ফিরে পায় সব গান।

তুমি আছো বলেই আজও
স্বপ্নেরা ফিরে নীড়ে
মনের আকাশ জুড়ে
রঙিন ঘুড়ি ক্লান্তিহীন উড়ে!


বন্ধু তুমি, বন্ধু আমার বন্ধু তুমি আজীবন এই মন যখন তখন
হিদয়ে পায় তোমারে, তুমি কত আপন।

জীবন ভারে হতাশ হয়ে যখন দিশেহারা
তুমি বন্ধু আলোর দিশাতমসায় আলোর ঝর্ণা ধারা...


তোমায় দিয়েছি এই হিদয়
তোমায় দিয়েছি এই মন
তুমি বন্ধু ছিলে, বন্ধু আছোতুমি বন্ধু আজীবন...




বন্ধু আজীবন ২

মৌনতাই যদি তোমার ভালোবাসা হয়
বন্ধু তুমি মৌন থেকো আজীবন!
যদি ভালোবাসো অন্তরে অন্তরে
তাই বেসে যেও, দিও না ফিরিয়ে মন!

কত ঝড় ঝঞ্জায়, জীবন কেটে যায়
টলে কি তবু একটু হিদয়, এত টুকুন মন
কি আছে বল হারাবার মতন আর আমাদের?
হারিয়েছি যখন এই এক জীবন...

তবুও আমি বন্ধু তোমার
তবুও তুমি বন্ধু আমার, হারিয়ে ফেলি মন
হারিয়ে হিদয়, যা আমাদের নয়
তবুও আমরা থাকি বন্ধু আজীবন...



বন্ধু আজীবন ৩


জীবনে জীবন মেলাবার না করি আর আয়োজন!
পহেলা বৈশাখ এই এক জীবনে কি খুব প্রয়োজন?
বন্ধু তুই ভালো থাকিস, তা আমি আর চাই না!
'আমার সোনার বাংলা...' ভুলেও আর গাই না।

দিন ফুরোলে সন্ধ্যা আসে, আমিও আসি নীড়ে
নতুন দিন, নতুন গান চাইনে আজ আর ফিরে!
কবিতা লেখা দিয়েছি ছেড়ে, ভুলে গেছি তোকে
গান বাঁধি না, গল্প বুনি না, আছি বহু সুখে।

ভালোবাসি না দোয়েল-শ্যামা, লাল-সবুজের পাড়
আঁধার থাকুক জীবনভর এই তোর চারিধার!
তোর আঁখিতে লেগে থাকুক মুক্তো আজীবন
এমন দোয়াই করে এখন আমার হিদয়- মন।

তোকে ছাড়া দিব্যি আছি, এই ত আছি বেশ
থাকবো আরো মহাসুখে, থাকবো অনিমেষ
তুই না থাকলে জীবন আরো কত ভালো হত!
কত মেয়ে এই হৃদয়জুড়ে গড়াগড়ি খেত!
.
.
.
.
ইচ্ছে করে এমন আরো অনেক মিথ্যে গল্প বলি
ইচ্ছে করে সব ভুলে গিয়ে একলা একা চলি!
মনের ভুলে কখোন দেখো চোখের জলে ভাসি
'ভালোবাসি না আর' বলতে গিয়ে বলি 'ভালোবাসি' ।
নববর্ষে এই দেখো মনে মনে হাতে হাত রাখি
আকাশনীলের বন্ধু তোকে হিদয় দিয়ে ঢাকি!
ভালো থাকিস পুরো বছর, থাকিস আজীবন
তুই সুখী হলে আমিও সুখী, দিতে হবে না মন!
তবুও বন্ধু তুমি; তুই, তুই, তুই আমার জীবন-মরণ
যত দূরে রও; তুই, তুই, তুই, তুই বন্ধু আজীবন...





অনামিকা

এক।

হাহাকার করে কি হবে আর?
দূরে আঁচড়ে পড়ি বার বার!
এই কাছে আসি, কত ভালোবাসি
তবু যোজন যোজন দূরে আমি আর খুশি।


দুই।

রূপা, তুই এবার বেঁধে ফেল খোঁপা
দুঃখটারে দিয়ে ছুটি, চল
ফেলে আসা দিন-রাত এক করে ফেলি
তুই আবার বুকে মাথা রেখে ঘুমুবি, বল?



একটি নীল পাখির প্রতি


কখনো কি বলেছি এই আমি তোমায় 'ভালোবাসি?'
ডেকেছি কি ভুল করে কখনো তোমায় 'প্রেয়সী'?
হাঁটবো কি আর নীলাকাশের নীচে এই জমানায়?
এতটুকু কি আশা আছে বিনিসূতার মালায়? (বাঁধা পড়বার)
'না'ই হবে সব উত্তরগুলো জানি তুমি আমি
তবুও এই প্রশ্নগুলো য়ামাদের সব থেকে দামী
গাড়ির মত করে তবু শুধু ছুটে চলি
ভুল করে তব মাঝে মাঝে 'ভালোবাসি' বলি...!
আমি ভালোবাসি ভালোবাসা, তোমাকে না নিশ্চয়ই!
তোমার ভালোবাসা মিছে আশা, পাবার নয় কখনই!

তবুও ত ঝড় তোল আজো এই হিদয় মাঝে
সাদা শার্টের মত জড়িয়ে থাকে আমার সকল কাজে। 





ইদানীং জীবন যেমন

 বলো, জীবন আসলে কয়টা? 
এক টা? দুই টা? তিন টা?
ক্রমশঃ জটিল জীবন, জটিল মানুষের মন
জটিল শরীর, জটিল হিদয়।
জটিল হিসেব নিকেশ, বুঝি না! 

কাউকে মিস করছি? ফোন দিলেই পারি...
দিই না, দেওয়া হয় না, পাছে ভুল বুঝে!
কারো সান্নিধ্যে আসার ইচ্ছে খুব! 
তাও হয়ে উঠে না, কখনোই 
দূরত্ব খালি খালি বাড়ে? 
বুঝিয়ে আর বলা হয় না 

কত প্রশ্ন বুকে, মনে। চোখ ভরা প্রশ্ন, হিদয় ভরা প্রশ্ন
জিজ্ঞেস করাই হয় না তাকে...
কত অপছন্দের বিষয় থাকে, বলা হয়ে উঠে না
মুখ ফুটে! এই ধরো, তুমি কেনো আমার হল না!
বড়ই অপছন্দের একটা বিষয়! 

কত পছন্দের ভাগ থাকে, সময় কোথা?
তোমায় এগুলো বলবার? তুমিও ত পারো
'এ্যাই! তোমার কি পছন্দরে?'
একবার জিজ্ঞেস করার, করেই দেখো না একবার!
তা তো করবে না কোনদিন, বোকা মেয়ে!


কত কিছু প্রয়োজন, সব কিছু ত আর চাই না!
চাই তো শুধুই একটি মন! তাও চাওয়া হয় না...
চাওয়ার সময় পেলাম কোথায়?
চাইলেই যদি পাওয়া যেত এক সমুদ্র দুঃখ!
না হয় সেটাই চেয়ে নিতাম
তবুও যদি তোমায় পেতাম!

ভালোবাসি ত একজনকেই! 
বলা হয় নাচুল কেবলই পাঁকে! 
শালা, কি বেয়াদপ চুলটাও!

জীবন কি একটাই?
সত্যিই কি জীবন একটাই? 
জীবন কেন একটাই?
জীবন একটাই, সত্যি সত্যি আর মিথ্যে মিথ্যে
তাই তোমাকে সব খুলে বলতে বলতে চাই
শুনবে কি একটা কথা আমার? 
দেবে কি সময় একবার
মুখোমুখি বসবার, প্রাণভরে একবার
ভালোবাসি তোমাকেই, বলবার?

শ্বেতহস্তি আই ফোনে লাফিয়ে লাফিয়ে কেবলই
বিল বাড়ে! তোমাকে দেয়া হয় না তবুও একটা ফোন!
শোনানো হয় না অনেক যত্নে তুলে রাখা একটি কবিতা

অহনা, ভা লো বা সি শুধু তোমাকেই ...

তুমি কি বুঝো? তুমি বুঝো আমার মাথা...

হে খোদা, এই মেয়েকে জ্ঞান দাও
নয় ত, পুলিশের অথবা তেলেপোকার তাড়া খাওয়াও একদিন ...

No comments: