Friday, May 3, 2013

দূরের গল্প (কাব্যগ্রন্থ)




দূরের গল্প 





বাবুল ডি' নকরেক






উৎসর্গ


তৃপ্তি চিসিম মনিকে

সুখে-দুখে যে আমার পাশে থাকে, 

আছে আজীবন




প্রকাশকালঃ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪





কাগজের নৌকো ১ 


এত ভাববার সময় ছিলো না আমার
তাই জানা হয়নি নৌকো টি ছিলো কার?
পাড়ে ছিলো ভীড়ে, তাই নিয়েছি নৌকোটিরে...
আমার জাহাজ চলিয়া গেল..
সব করে এলোমেলো;
কাগজের নৌকোতে আমি, জাহাজে তুমি...
জাহাজ ছাড়িয়া গেলো!


কাগজের নৌকো ২

জীবন যেমন কেমন কেমন
ক্যান এমন এমন কেমন?
জীবন এমন ভাবি যেমন
ভাবি কেমন জীবন?
অনিশ্চিত জেনেও
কেউ কেউ কাগজের নৌকোয় উঠে!
বালকটিও তাই, কাগজের নৌকায়!

জাহাজ ধরবে বলে, কাগজের নৌকায়
জাহাজ চলিয়া যায়....
জীবন এমন; কেমন কেমন...
ভাগ্যদেবী তাদের জন্য
যারা জীবনে ঝুঁকি নেয়...
কথাটি মিথ্যে হয়ে আসে...
জাহাজ চলিয়া যায়.....

জীবন এমন...
কেবলই জাহাজ চালিয়া যায়
নৌকাতে আমি, জাহাজে তুমি......


কাগজের নৌকো ৩

এত ভেবে টেভে কি লাভ? কত ভাবলাম সারা জীবনে
ভেবে চিন্তে চলো গেলো বসন্তের প্রায় সব ক’টা দিন!
এক আকাশ প্রার্থনা শুনেনি সুসুমি-তাতারাও,
এক মিনিটের জন্যও থেমে থাকেনি
শ্যালো ইঞ্জিনের জাহাজ!

এক সমুদ্র প্রার্থনা শুনেনি তোমাদের খোদা!
কাগজের নৌকোতে আমি, জাহাজে তুমি
জাহাজ ছাড়িয়া গেলো...
হায় ঈশ্বর! একটা ভালো আই-ফোন দিও!


কাগজের নৌকো ৪

চারিদিক অন্ধকার করে ঝড় এলো...
এলোমেলো ঝড়, উথাল-পাথাল ঝড়
কাগুজে নৌকা আমার কেবলই ডুবে ডুবে;
সাঁতার শিখেছি সে কবে! মনে আছে কি নেই
সে দেখিনি ভেবে...

আমার জাহাজ চলিয়া যায়...
নৌকোতে আমি, জাহাজে তুমি...
পাপ-পুণ্যে কি কাজ আমার? 
সবই ত দিয়েছি তোমায়, যা ছিলো আমার...
জাহাজ চলিয়া যায়...
খোদা, নেট- ওয়ার্কের বাইরে জাহাজ!
আই-ফোন কেবলই শো...
আমার কি কোনদিনই একটা উড়োজাহাজ হবে না?


শুধু একটা উড়োজাহাজ! 
হে সুসুমি- তাতারা, একটা উড়োজাহাজ দাও!  


কাগজের নৌকো ৫


এক এক করে আকাশের সব তারা গেলে নিভে...
দীঘল কালোরাত্রি শেষে সূর্য ছড়ায় ঝকঝকে আলো!

তবু আমার-অহনার জীবনে এলো না স্নিগ্ধ ভোর...

গল্প-কথা, কল্প-কথা, কবিতা-গান, মান-অভিমান
যা ছিলো সব তুলে দিলাম কাগজের নৌকায়
আর কিচ্ছু বাকী নাই...এবার বলো,
অহনা, দেবার মত কী বাকী আছে তোর?

জানি, তুই উল্টো করে বলবি,”তুই ইদানিং আমাকে এড়িয়ে
চলিস্! ঘটনা কী?” বড় প্রেম এমনই, দূরে চলে যায়...

নৌকাতে আমি, জাহাজে তুমি...
জাহাজ ছাড়িয়া যায়...



চলো, আর কষ্ট না কুড়াই...


অনেক দূর চলে গ্যাছি অযথা পথ ভুলে...
ফেলে আসা পথে; চলো ফিরে যাই...
আর কষ্ট না কুড়াই...
জোছনার জলে ভিজে ভিজে
বাঁধিয়েছি প্রশস্তির অসুখ...
চলো আর না ভিজি এই বৃষ্টিতে... 


যদিও ঘুড়ি উড়াই,থাকে না সাথে লাটাই...
চলো ফিরে যাই..আর কষ্ট না কুড়াই... 
যে পথে সবাই চলে, রৌদ্র-তাপে, শীতল-বরিষায়..
চলো চলে যাই...
আর কষ্ট না কুড়াই...



ইদানীং জীবন যেমন

বলো, জীবন আসলে কয়টা? 
এক টা? দুই টা? তিন টা?
ক্রমশঃ জটিল জীবন, জটিল মানুষের মন
জটিল শরীর, জটিল হিদয়।
জটিল হিসেব নিকেশ, বুঝি না! 

কাউকে মিস করছি? ফোন দিলেই পারি...
দিই না, দেওয়া হয় না, পাছে ভুল বুঝে!
কারো সান্নিধ্যে আসার ইচ্ছে খুব! 
তাও হয়ে উঠে না, কখনোই; 
দূরত্ব শুধু শুধু বাড়ে? 
বুঝিয়ে আর বলা হয় না, হয়ে উঠে না!  

কত প্রশ্ন বুকে, মনে। চোখ ভরা প্রশ্ন, হিদয় ভরা প্রশ্ন
জিজ্ঞেস করাই হয় না তাকে;
কত অপছন্দের বিষয় থাকে, বলা হয়ে উঠে না
মুখ ফুটে! এই ধরো, তুই কেনো আমার হলি না!
বড়ই অপছন্দের একটা বিষয়! 

কত পছন্দের ভাগ থাকে, সময় কোথা?
তোকে এগুলো বলবার? তুইও ত পারিস 
'এ্যাই! তোর কি পছন্দ রে?'
একবার জিজ্ঞেস করার, করেই দেখ না একবার!
তা তো করবি না কোনদিন, বোকা মেয়ে!


কত কিছু প্রয়োজন, সব কিছু ত আর চাই নি!
চাই তো শুধুই একটি মন! তাও চাওয়া হয় না...
চাওয়ার সময় পেলাম কোথায়?
চাইলেই যদি পাওয়া যেত এক সমুদ্র দুঃখ!
না হয় সেটাই চেয়ে নিতাম
তবুও যদি তোকে এখন কাছে পেতাম!

ভালোবাসি ত একজনকেই! 
বলা হয় না; চুল কেবলই পাঁকে! 
শালা, কি বেয়াদপ চুলটাও!

জীবন কি একটাই?
সত্যিই কি জীবন একটাই? 
জীবন কেন একটাই?
জীবন একটাই, সত্যি সত্যি আর মিথ্যে মিথ্যে
তাই তোকে সব খুলে বলতে চাই
শুনবে কি একটা কথা আমার? 
দেবে কি সময় একবার
মুখোমুখি বসবার, প্রাণভরে একবার
ভালোবাসি শুধু তোমাকেই, বলবার?

শ্বেতহস্তি আই ফোনে লাফিয়ে লাফিয়ে কেবলই
বিল বাড়ে! তোকে দেয়া হয় না তবুও একটা ফোন!
শোনানো হয় না অনেক যত্নে তুলে রাখা একটি কবিতা

কবিতা টি শুনবি? 
'অহনা, ভা লো বা সি শুধু এই  তোকেই ...'

তুই কি বুঝিস? তুই বুঝিস আমার মাথা!

হে খোদা, এই মেয়েকে জ্ঞান দাও
নয় ত, পুলিশের অথবা তেলেপোকার তাড়া খাওয়াও একদিন ...



যাওয়া হয়নি যে পথে


এতকিছু ভাববার বয়স নয় তখনো
 ঠিকানা কি ভুল ছিলো? বুঝিনি এখনো
.
.

যে পথে হয়নি যাওয়া, আমায় কি পিছু ডাকে?
জানি না নিজেই আমি, কি করে বলি তোকে?
.
.
যে পথে যাইনি আমি, সে পথও আমারই রয়
ভড় দুপুরেও কেমন কেমন উত্তাল হাওয়া বয়?
.
.
পথে পথে, দিবা-রাতে, হয় যদিও দেখা
কথা বলি সঙ্গোপনে আজও একলা একা!
.
.
তুই ক্যানরে সে পথ হলি বল শুধু অকারণে?
চলেই যদি যাবি বন্ধু, বাসা বাধিস কেন মনে?
.
.
কেন বসে গান করিস? ভরা জোছনায়?
কেন ফিরে ফিরে আসিস হিদয় আঙ্গিনায়?
.
.
যে পথ ফেলে আসি, হাটি কেনো ঐ পথে?
ভুলিতে পারি না সে পথ, কিছুতেই কোনমতে!




তোমার জন্য এই আমি.... 


যদি তুমি চাও, আমার পুরো সকালটাই
তোমায় দিয়ে দিতে পারি; দিয়ে দিতে পারি,
আমার রোদেলা দুপুর, মেঘলা আকাশ, শেষ
বিকেলের সময়টাও, যদি চাও প্রিয় নারী!

যদি একবার চাও, বরষার জলে একলা ভিজে ভিজে,
কদমগুচ্ছ লয়ে হাতে আজীবন প্রতীক্ষায় থাকতে পারি;
আমার ভেতর আর বাহিরের সব দরোজা-জানালা 
তোমার জন্য খুলে রাখতে পারি, শুধু একবার চাও যদি নারী! 

যদি তুমি চাও, হিদয়ের সব রঙ মুছে দিতে পারি, 
দিতে পারি অজস্র চাঁদ-তারা সব; আমি পারি
চুকিয়ে ফেলতে জীবনের সমস্ত লেনদেন; পারি জীবনে 
জীবন মেলাবার সব করতে আয়োজন, যদি তুমি চাও নারী!

নিজকে জোছনার বাণে একেলা ডুবিয়ে মারতে পারি...
নোবেল আনতে পারি কবিতায়, সাথে যদি থাকো নারী!



ছুটি

ছেলেবেলার বন্ধুরা আমায় দিয়েছে ছুটি সেই কবেই;
খুব কাছের মানুষেরাও ব্লক দিয়েছে ফেইসবুকেও...
ফোন দিত যে বন্ধুটি, সেও বলে দিল 'আর নয়,
ফোন দিতে অসস্তি লাগে তোমাকে এখন!'
ভুল তো মানুষই করে; আমিও মানুষ দোষে-গুণে
যদি আর একবার সুযোগ পেতাম! দেখতে আমি
ন্যাড়া না হলেও তার স্বভাব আমার আছে!
সারাজীবনে ঐ ভুল হয় ত আর হতই না ভুলেভালেও!
জানি, জীবন এমনই, সোনার ডিম দেয়া রাজঁহাস
কৃষকের ঘরে বার বার আসে না!
সুযোগ সোনার হরিণ...আদম-হবার জীবনেও
আসেনি সে সুযোগ ...আদম-হবার সন্তান আমিও,
আমারও কঠোর শাস্তিই হোক...
.
.
.
.
আমারও যেন ক্ষমা না হয় ...
আমি ত দোজকের আগুনেই পুড়তে চাই
আ-জী-ব-ন
এবং
প-র-জ-ন-মে-ও...
.
.
.
নদী, আমায় ক্ষমা করো না কখনো, কোনদিন...
আসলে আমি তোমায় ভালোবাসি না! তুমিও বেসো না...




ভোররাতের স্বপ্ন

আমার মল্লিকাদির বিয়ে হলো আজি...
দাদার সাথে পরিচয় ছিল না তার
ভাগ্য ভাল তার, দিদির মত মেয়ে পেল; 
এখন বিয়ের পালা আমার....

মল্লিকা দি বলে, তার ভোররাতের স্বপ্ন দেখা
সত্যি হয়ে গেল; ভাগ্যেই এমন ছিল লেখা!
আজ কাক ডাকা ভোরে স্বপ্ন তোকে নিয়ে
বলা নেই কওয়া নেই তোর-আমার বিয়ে!
রূপা, হোক স্বপ্নে, তবুও এখন আমার বউ তুই
কি করি বল তো? বুঝতে পারছি না আর কিছুই!
ভালো যদি বাসো মেয়ে, এসো হাত টি ধরে
লজ্জা কিসের? সমাজ নমাজ কারা কেয়ার করে?
.
.
.
জানি, তোর স্বপ্ন আরো বড়, অনেক বড় হবি তুই
আমিই কি সে স্বপ্ন মেয়ে? জানি না তার কিছুই.....



কষ্ট কুড়ানোর গল্প

মুখ ফোটে বলতে না পারায়
ভালোবাসা ফসকে যায়!
রটে না তাই এই প্রেম পাড়ায় পাড়ায়...

ভালোবাসা, তুই আমারে অনেক দূরে দূরে রাখিস
কষ্ট নেই তবুও আর, আমায় হৃদয়ে না থাকিস!
আমি দূরের দেশের মেঘ, উড়ে ঘুরে বেড়াই
ভালোবেসে একলা একা, তোর কষ্টগুলো কুড়াই।



হিদয়ে দুর্বাঘাস...

হিদয় খুব বেশি কথা বলে ইদানিং...
বড্ড বেশি নস্টালজিয়ায় ভেসে বেড়ায়
এই মন; ঐ আকাশটায়, সীমাহীন মুগ্ধতায়...


আকাশ, আমার আকাশ বলে চিৎকার
করি; আকাশ আমায় গেলো ছাড়ি; ফিরেও
তাকালো না, আমার বনলতা সেন, আমার...!

হায় ভালোবাসা! পাখির বাসায় দুর্বাঘাস তবু
যেনো সে! সে ঠিক ঠিক জেগে উঠে মধ্যদুপুরে।


হিদয়ে উত্তাল হাওয়া...
আমি পথ খুঁজি পথ...
পথে পথে; আমি আজো ভালোবাসি আকাশ!
ঘাস-ফুল-নদী-আকাশ-মুগ্ধতা...
তুমি না এলে;
আমি তবু দেবদাস হবো না, সোজা কথা...!

তুমি আসো আর না আসো, যদি আর নাই ভালোবাসো;
নদী আমার, আমি দেবদাস হবো না; সোজা কথা!


বন্ধন

ঝিক ঝিকে ঝিক ট্রেন চলেছে
আমার বুকের 'পরে;
জানি না ত চলবে এমন,
কত বছর ধরে?

পাশা পাশি থাকি তবু
স্বপ্নগুলো ফাঁকা!
ভালোবাসি তবু কেন
সমান্তরালে থাকা....?



দু:খনূপুর ১


ভালোবাসা? সে তো আকাশে মুগ্ধ মেঘের ভেসে বেড়ানো মধ্যদুপুর...
জীবন? সে তো ভালোবাসা হারিয়ে ফেলা এক সমুদ্র দু:খনূপুর।
আকাশ? সে তো হিদয়ে ঢিল ছোঁড়া এক দানব-দেবীর নাম
স্বপ্ন? সে তো জোনাকি হয়ে জ্বলে থাকা এক শিখা অনির্বাণ....



দু:খনূপুর ২ 

দেবতাদের মান বাচাঁতে এই জল
আকাশে উড়াল দিলো একদিন,
রাশি রাশি কষ্ট ছুঁড়ে ফেলে...
মেঘ হয়ে ডানা মেলে উড়তে
শিখলো, অনন্ত আকাশের বুকে;
অন্ধকারে জোনাকি দ্বীপ জ্বেলে।

নিভে যাওয়া জোছনার আলো, লাগে
বড় ভালো, কখনো সুখ, কখনো দু:খ
যেনো অনির্বাণ জ্বলে ধিকি ধিকি;
এই মেঘ, এই বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে
শুকতারা বাঁধিয়ে ফেলে নির্মল অসুখ;
রাধা, এ সুখ আমি কোথায় রাখি?

একদিন যে মেয়ের নাম রাখলে পূর্ণতা
প্রতিদিন সে বড় হয়; বাড়ে কষ্ট কবিতা।



দু:খনূপুর ৩

যদি প্রয়োজন হয়, ঐ হিমালয়ের চূড়ায় উঠবার, তুমি দ্যাখো,
আমি, আমি ঠিক ঠিক উঠে যাব ঐখানে একদিন; 
মূসা ভাইযে ভাবে ধার-দেনা করে করে, ঐ উচুতে, 
ঐ উচুতে গিয়েছিলো উঠে। প্রয়োজনে আমিও 
নিয়ে নিতে পারি এমন ব্যাংক ঋণ! 


যদি কবিতায় নোবেল ছিনিয়ে আনা লাগে,
ঠিক অমন কবিই হবো...আমি হবো রাত জাগা একলা পাখি, 
করবো একলা ডাকাডাকি;আমি ঠিক ঠিক পৌঁছে যাবো, 
রাধা, রাত-দূপুরে হলেও; যেখানটায়
যাবার ইচ্ছে ছিলো, যাবোই যাব, 
আমি যেখানেই যেভাবে থাকি। 

আমি হারিয়ে যদি ফেলি আমার সমস্ত আকাশসীমা; আর
হারাই উড়ো-উড়ি করবার সমস্ত অধিকার; সত্যি, আমি,
তবু শব্দ করবো চুরি, শব্দে শব্দে হবে আর এক নূতন
তাজমহল; না হোক সে হীরা-পান্না-চুন্নির মত অত দামী। 

রাধা, হারিয়ে ফেলি যদি আমার সমস্ত সকাল আর মধ্যদুপুর..
তোমায় পাবার জন্য, প্রয়োজনে জম্মাবো আবার, হব দু:খনূপুর।





দু:খনূপুর ৪ 


সত্যি বলছি, আমি কবিতা লেখা শেষে শিল্পী-কবির ছুঁড়ে ফেলা
একটি কষ্টকলম; হাজারো অসাধারণ গোলাপ-গন্ধার ভীড়ে অতি
সাধারণ কষ্ট-নূপুর; কৃষ্ণেরাই যেখানে দীর্ঘশ্বাস ফেলে, আমি, আমি,
সেখানে আমি অনেক তুচ্ছ-নুপুর...যদিও আমি নিজেই শিল্পীকবি! 


আমি অসাধারণ হয়ে ফুটতে পারিনি হিদয়ে দু:খনূপুর, বাহিরের
কৃষ্ণচূড়ার মত পলাশ-শিমূল হই কি করে? তাই আমি জুঁই-এর
কবিতায় গৃহকোণে পড়ে থাকা ‘তারছেঁড়া গীটার’, ধূলিমাঝে পড়ে
থাকা 'গীত শেষে বীণা', নিজের ছুঁড়ে ফেলা কষ্ট-কলম; রাধার রূপে
পিষ্ট হওয়া কৃষ্ণ; মেঘের মত হিদয়হারা মেঘ। আকাশে নিষিদ্ধ একলা
শালিক! 

প্রতি দিন অন্ধ রাধার সামনে হাটি, সে ফিরে তাকায় না! 
রাধা, রাধা আজ আর আমার নয়...তবুও সে আমারই রাধা;
হাত ছাড়িয়ে যায় যদি সে, যাক্ না; সে হিদয়ে থাকুক বাঁধা। 
রাধা, রাধা আর আমার নয়...তবুও সে আমারই রাধা; আর
আমি আকাশ বিহীন মেঘ; মৃতপ্রায় পড়ে থাকা, বেওয়ারিশ মেঘ...।




অদ্বিতীয়া, তুমি অদ্বিতীয়া-ই...

জানি, এতদিনে বড় একটা সংসার হয়ে গেছে তোমার...
ইচ্ছে করলেই হয় ত আর আমাদের যে 'ফেলে আসা দিন'
সেখানটায় ফিরে তাকাতে পারবে না;
কন্যা, আমি তোমার সুখ বুঝি, তোমার দু:খ বুঝি।

যদি আর একবার সময় পেতাম! তবে দেখতে আমিও
তোমার খুব না হলেও অন্যরকম 'ভালো' সঙ্গী হতাম!
তোমার হিদয়-মনে অন্যরকম ভালোবাসার বিচিত্র সব
সুরলহরি দিয়ে তোমায় ঠিক ঠিক মুগ্ধ করে রাখতাম!
হায়! ফেলে আসা দিন! সে কি কখনো আর ফিরে ফিরে
আসবে? আমি বার বার ফিরে ফিরে তাকাই....
অদ্বিতীয়া, যে সাংবিধানিক স্বীকৃতির স্বপ্ন আমরা দেখতাম,
তা অধরাই রয়ে গেছে ..এই যেমন রইলে তুমি!

আচ্ছা, তোমারও কি বুকের ভেতর এমন ফাঁকা ফাঁকা লাগে?
শূণ্যতা বোধ হয়? বলেতে কি ইচ্ছে করে 'আজো ভালোবাসি'?

অদ্বিতীয়া, আমি তোমাকেও চাই, তোমাকেও! হাহাহা..
সম্ভব-অসম্ভ ববুঝি না অমি; কী হবে ঐ সাংবিধানিক
স্বীকৃতি দিয়ে, তোমাকে ছাড়া?



দু:খ বিলাস


অতনু, অতপর....
তুই আমায় এক সমুদ্র দু:খ-কষ্ট দিস
রোদেলা দুপুর ইচ্ছে মতন, যখন খুশি নিস্।
আমায় দিস্ কষ্টনূপুর...যত আছে তোর
আমি না হয় পাঠিয়ে দিব নিত্য নতুন ভোর।
শরীর আমার চাইনে রাধা, সে তুই সাথে নিয়ে যাস্
আমি না হয় একা র’ব, হয়ে জীবনানন্দ দাস।

যত পারিস্ ত্বরা করি সেরে ফেলিস লেন-দেন
তবু থাকিস্ হিদয় রাজ্যে হয়ে বনলতা সেন!


কথোপকথন

: হ্যালো...
: হেলেই ত আছি, বলো...
: তোর একটা প্রিয় ফুলের নাম বল..
: মেঘলতা..
: এ আবার কী ফুলের নাম! শুনিনি ত আগে?
: আজ ত শুনলি? আমিও দেখিনি আজো..
: তাহলে?
: বুদ্ধ কোথাকার, এই ফুল আমার হিদয়ে ফুটে
: আমার জন্য?
: নাহ! আমার ভালোবাসার মানুষটার জন্য
: আমি ছাড়া কে আছে আর তোর?
: নিজের উপর এত আস্থা?
: নিশ্চয়ই! যে মেঘকে জড়িয়ে থাকে, সেই ত মেঘলতা...?
: হাহাহা...বয়েই গ্যাছে আমার...হাহাহা...
.
.
: হাহাহা...তোর একজন প্রিয় কবির নাম বল..
: তুই...
: বাজে কথা, তুই কি একটা নাম হলো?
: হূমমম..না হবার কী আছে? তুই তুই তুই..
: কী যে বলিস!
: আজ, অন্তত: ঠিক এই মুহূর্তে! তুই-ই সব থেকে প্রিয়
: তোর প্রিয় শিল্পী?
: তুই, তুই এবং তুই
: ফাজিল কোথাকার...বান্দর...
: হাহাহা... তুইও বান্দর..
: মানিকেই মানিক চিনে
: তুই চিরদিন আমার বান্দর থাকিস!
: হিদয়ে রাখবি?
: বুকের মধ্যে রাখবো আজীবন
: আজীবন? সত্যি?
: সত্যি মিথ্যে বুঝি না, রাখতে চাই
: আমিও থাকতে চাই তোর বুকের মধ্যেই
: তুই সত্যি অসভ্য, বান্দর। খুব পছন্দের বান্দর!
: হাহাহাহা...



চন্দ্রপাহাড় (এক)

যদি ফিরে আসিস কোনোদিন! ঐ চন্দ্রপাহাড়ের চূড়ায় তোমায় নিয়ে যাব একদিন।
এই পৃথিবীর সব থেকে সুখি মানুষ হবে এই কৃষ্ণ সেদিন।


যদি আবার নতূন করে ফেলে আসা ভালোবাসা ফিরে পাই!
নোরা-র মত দরাজ করে দ্বার রুদ্ধ করি বলি দিব, "মেয়ে, তোর খাওয়া নাই।
আমার নিজেরও খাওয়া নাই! আর ভালোলাগে না এমন জীবন.....

প্রায় সব আলো নিভে গ্যাছে! তবু সব দরোজা খোলা রাখি,
জানালা খোলা রাখি; তুই যদি ফিরে আসিস আবার কোনোদিন!
তোর সব পছন্দের ফুল, এই আমার হিদয়ে প্রতিদিন ফুটে
তুই ইচ্ছে মতন নিয়ে যাস সব ফুল; দাম চাইবো না মোটে।
সব দরোজা খোলা রাখি, জানালা খোলা রাখি; তুই যদি ফিরে
আসিস আবার কোনোদিন! যদি কাঁদে মন, ফিরিস যখন তখন।
এই মন, মনজোছনায় ভিজে ভিজে, রাত পার করে, একা একা
এই হিদয় কেমন কেমন করে! রাধা, আর কত এমন দূরে থাকা?


চন্দ্রপাহাড় (দুই) 

নৃত্য শেষে পায়ের নূপুর ধূলোতেই লুটায়..
সে নূপুরের মত আমিও না রইলাম দেবীর পায়!
নেচে-গেয়ে রাধা আমায় ফেলি দিলে ছুড়ে,
থেকে গেলো হিদয় মাঝে গিয়ে দূরে, বহুদূরে...

চন্দ্রপাহাড় দেখা হলো না আমার, রাধা কে নিয়ে,
কারে যেনো নিয়ে...সে আমা থেকে গেলো পালিয়ে
কৃষ্ণ-হিদয় কেবলই কাঁদে অবুঝ শিশুর মত;
তুই রাধা, শুধু একবার বল, ক্যান, ক্যান কষ্ট দিলি অত?

রাধা, অই রাধা, দূরে গেছিস বলেই কি আর তুই নোস আমার?
তুই চলে গেলি বলে আমার ইচ্ছেবনে রইলো অধরা চন্দ্রপাহাড়.......



পাতাঝড়া দিন

সেই কবে আমি পথ ছেড়ে অন্যপথে চলে এসেছি।
নিজের হাতে আমি মুছে দিয়েছি জীবনের সব রঙ!
নদী, আমি তোকে আমার আস্ত মন দিয়ে দিয়েছি!
তুই আমায় অবিশ্বাস করিস? ভালোলেগেছিলো বলেই
চৈত্রের তপ্ত দুপুরে একদিন তোর ছায়ায় বসে তোর তপ্ত
বুকে মুখ ঘসেছিলাম! তোর স্তনাগ্রে এঁকে দিয়েছিলাম
অমোচনীয় এক প্রীতি চুম্বন...তুই ভুলে গেলি? যাহ! সব
ভুলে যাহ; এই আমি, আজো কবিতা লিখি তোকে নিয়েই....
আজ ভালোবাসি শুধু তোমাকেই, বিপদের বন্ধু তুমি..
যে আমায় ছেড়ে যায়, ঘন ঘোর বরিষায়, সে রইলে
দেবী; পূজো দিই তারে, তবু আমি ভালোবাসি,
যে পথে একলা হাটি, তুই ভালোবাসিস আর নাই বাসিস!
তোকে আমার ইচ্ছেপাহাড়ে ঐ উচুতে, ঐ উচুতে রাখি
.
.
.
এবার তুই বল, তুই মনে থাকবি? না হিদয়ে? তুই বল...





ইচ্ছেগুলো...


ভেঙে গেছে যে মন অকারণ,
সে উড়ে উড়ে যাক দূরে আরো দূরে...
ঝড়ের বেগে মেঘে মেঘে সে উড়ুক,
উড়ুক সে নিজেরে ভুলে...
আমি তাই ভুলে ভুলে যাই...

নি:শব্দ ডাক শুনতে পাওনি তুমি;
তাই যোজন যোজন দূরে আজ তুমি আর আমি!
কতদূর এক পথ আর এক পথ থেকে...
উড়ুক সে নিজেরে ভুলে...
আমি তাই ভুলে ভুলে যাই...
সব ইচ্ছেগুলো কেমন এলোমেলো...
মেঘেরা আকাশে উড়ে, আমিও উড়ি
স্মৃতিরা তবু থাকে জড়াজড়ি করি!


একটি একাকী ভোর...


আমরা এর আগে কি কখনো রাত জেগেছিলাম
একটি ভোরের জন্য? একটি ইলিশের মত
ফর্সা ভোরের স্বপ্ন কি দেখেছিলাম আমরা?

কখন কি স্বপ্ন বুনেছিলাম নতুন দিনের? মনে পড়ে কি???
কত অন্ধকার রাত আমরা পার করেছি হাতে হাত
রেখে; নতুন এক সোনালি ভোরের কবিতা লিখব
বলে! কত পথ একে অপরের পায়ের তালে তাল
রেখে হেঁটেছি একটি নতুন সূর্যের ছবি আঁকব বলে!
কত রাত, কত চাঁদ সঙ্গী ছিল আমাদের সাথে
অন্ধকার হারিয়ে গেলে হাত ছাড়িয়ে নিলে...

আমি রঙ, তুলি হাতে নিয়ে বসে থাকি আজো...
দুজনে একটি সূর্য উঠা ভোরের ছবি আঁকব বলে
.
.
.
.
.
.
অ হ না, তুমি কিছুই না বলে, কেন চলে গেলে?




আমার আমি..

এই বার সত্যি কথাই বলছি আমি...
মনোযোগ দিয়ে শোন..সত্যি বলছি আমি..
রবীন্দ্র সঙ্গীত এক বিন্দু ভালোলাগে না আমার;
মিথ্যে করে বলেছিলাম 'ভালোবাসি, খুব ভালোবাসি..

'নজরুলের গান? জ্বালা ধরায় মনের গভীরে; প্রচন্ড
ঘেন্না জাগায় মানুষের প্রতি, সকল জীবের প্রতি!
আমি ঘেন্না করি তোমার সমস্ত মন-হিদয়-শরীর।
শিমুল-পলাশ, কৃষ্ণ কিংবা রাধাচূড়ায় মন আর
আগের মত টানে না; আমি এখন এই সব
এমন সব ফুল পায়ে দলি, সামনে চলি, আমি, আমি
'সৃষ্টি সুখের উল্লাসে' মেতে থাকি না, আমি আছড়ে
আছড়ে ভেঙে ফেলি হিদয়ে যত ছিলো শব্দের তাজমহল!


আমি কাল-বোশেখীর ঝড়, তছনছ করি চলি নিরন্তর...
আমি মহাপ্রলয়, সব তুচ্ছ করি, সব অসাড়! 
সব তুচ্ছ আমার কাছে...সব তুচ্ছ...

কী ভালোবাসি আমি? জানতে ইচ্ছে করে নিশ্চয়ই?
আমি ভালোবাসি গাঁজা, ভাঙ, তারি, ব্র্যান্ডি, হুইস্কি, বার্গান্ডি...
ভালোবাসি দু'পেয়ে জানুয়ারদের ছুঁড়ে ফেলা নিষিদ্ধপল্লীর মেয়ে;
শুঁড়ি-বাড়ি, হুমড়ি খেয়ে পড়ি........

আমি পায়ে দলা দুর্বাঘাস! হাহাহা..নাহ! আমি, আমি
শিশ নাগ; যারে পাই ছোবলে ছোবলে নীল করি দিই!
ভোরের মুক্তো-শিশির? নাহ! আমি ইনসিনারেটার,
ঝলসে, ঝলসে দিই শিশির আর বরষার সব জল...
ভালোবাসা! আহা ভালোবাসা! আমি ভালোবাসার
গোষ্টি কিলাই! যত্তসব! অই সব ফেলে দিই নর্দমায়....

অ হ না, মানিক আমার, সোনা আমার
সত্যি বলছি, তোমাকে আমি ভুলে গ্যাছি!
আমি এ্যাখোন শুধু ভালোবাসি এই আমাকেই...
নিজের প্রেমে ডুবে থাকি মদ-মেয়ে নিয়ে!
একবার চুল ছুঁতে গেলে বললি, "এ্যাই, চুল ধরবি না"
সত্যি সত্যি কখনো তোর চুল ছুঁবো না আর আমি!
সামান্য চুলে যার লোভ, সে তোকে ভালোবাসে না অহনা।
আমি ভালোবাসি না তোকে...

সত্যি বলছি অহনা, তোকে ভালোবাসিনি কখনো,
ভালোবাসি না এখনো, ভালোবাসবো না আর কোনদিন!
তুই আমায় ঘেন্না করিস? অভিশাপ দিস...যত্ত খুশি;
থুথু দিস সারা মূখে; কিচ্ছু যায় আসে না আমার!

যে সত্যি কথাগুলোন তোমায় বললেম, আমি চাই
সবসময় তোকে বলি...কিন্তু আমার আমি, আমার
আস্ত মন, সমস্ত হিদয়, এতক্ষণ যা বললেম, ঠিক
তার উল্টো কথা বলে...পুরোটাই উলটো...
পুরোটাই যে সত্যি কথাগুলোন তোমায় বললেম,
আমি চাই সব সময় তোকে বলি...কিন্তু আমার আমি, আমার
আস্ত মন, সমস্ত হিদয় তার উল্টো কথা বলে...
তোকে ভালোবাসিরে...সত্যি সত্যি ভালোবাসি..
মিথ্যে মিথ্যে ভা..লো..বা..সি। তুই আমায় না বাসিস!
অহনা, তুই আমার হলি না ক্যান? ক্যান তুই দেখলি না
আমি তোর 'হিয়ার মাঝে লুকিয়ে' ছিলাম? ক্যান? ক্যান?



আকাশচূড়া..

ভার্জিনিয়ার আকাশে চাঁদ ডুবে...
অন্ধকার রাত্রিতে অজস্র তারা
জ্বলে স্নেহা-সোপানদের বাড়ির আঙিনায়...
আমি একাকী সাত্তার ভাইয়ের গল্প শুনি;
তাঁর সংগ্রামমূখর দিন, মানুষের জন্য কাজ...
তাঁর আকাশচূড়ায় উঠে বৃষ্টি ধরা, মেঘ ছুঁয়ে দেয়া অইসব..

আমারো ইচ্ছে করে তোমায় নিয়ে অই আকাশচূড়ায় উঠবো একদিন,
যদি এই মেঘের দেশে আসো কোনোদিন! তোমার হাত ধরে হাটবো
অই আকাশে; হিম করা মেঘ আমাদের ছুঁয়ে যাবে, বৃষ্টিরা আমাদের
ভিজিয়ে দিয়ে যাবে! দুই হিদয় ল্যাপ্টে যাবে মেঘ-বৃষ্টির আলিঙ্গণে...

এ্যাই, তুমি কি শুনছো? সত্যি বলছি, অই যে স্কাইল্যান্ড, যার নাম
আমি দিয়েছি আকাশচূড়া, সেখানে তোকে নিয়ে যাবোই যাবো একদিন...
অতে যদি আমি সমস্ত পৃথিবী হারাই, আমি হাসিমূখে এই পৃথিবী ছেড়ে
অন্যকোথাও চলে যাবো...অন্যকোথাও...তারপর তুমি যদি চাও থেকে
যেও, চলে যেও যেথা তোমার হিদয় যেতে মন চায়! ভালোবেসো যাকে খুশি...

তবু আমার হিদয়ের ঐ সপ্নচূড়ায় আমি শুধু তোমায় রাখবো চিরদিন....




খুঁজি ফিরি তোমাকেই


আজো আমি ভালোবাসি সবুজ মাঠ-ঘাট-প্রান্তর...
ভালোবাসি ছেলেবেলার বৌচি, কানামাছি, দাড়িয়াবান্ধা
গোল্লাছুট আর লুকোচুরি লুকোচুরি ছেলেখেলা...
ভালোবাসি অই গাড়ির পেছনে পেট্রোলের ধোঁয়া
উড়ানো গন্ধ! আজো সমস্ত মন, অবুঝ হিদয় এই
তোমারেই খোঁজে, এই তোমাকেই, ঠিক তোমাকেই...

তুমি ধরা দিয়েও অধরাই রইলে চিরদিন; বুকের
ভেতরে থেকেও হারিয়ে গেলে এই এক জীবন থেকে...
জীবনের গল্প থেমে থাকে এক অজানা পথের বাঁকে
এসে...জীবন এমন ক্যান?...খোদা, জীবন এমন ক্যান?
আমি আজো ভালোবাসি দুর্বাঘাস, ভালোবাসি মেঘ,
নীল পদ্ম ফুল; ভালোবাসি ধুলোমাখা পথ, ভালোবাসি
অসীম আকাশ...ভালোবাসি থোকা থোকা জমাটবাঁধা
সবুজ জমিনে লাল লাল কষ্ট...আগের জীবনেও আমি
এগুলোই ভালোবাসতাম! তোমাকেই ভালোবাসতাম;
শুধু তোমাকেই ভালোবাসতাম, এই তোমাকেই...

আমি আবারো তোমায় আমার করে পেতে চাই...
আমি আবারো তোমাকেই নতুন করে ফিরে পেতে চাই..
আমি প্রতিদিন এই তোমাকেই খুঁজি..প্রতিদিনই;
স্বাধীনতা, আমার স্বাধীনতা, তুমি আমার, শুধুই আমার
আমার আজীবনের স্বপ্ন, আমার, আমার, আমার স্বাধীনতা..




জ্যোছনা যায় ফিরে


আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি নামুক
জ্যোৎস্না পড়ুক গায়
জোনাকীরা গাইতে থাকুক
এই হৃদয় আঙিনায়...

সন্ধ্যা নামুক দিন ফুরোলে
পুরো আকাশ জুড়ে!
সন্ধ্যা-তারায় কি আসে যায়
আলো যদি উছলে পড়ে?

যে যাবে সে চলেই যাবে
ভাবনা এত কিসে?
পাই বা না পাই, নাই ক্ষতি নাই
যদি একটু ভালোবাসে!

জ্যোৎস্না দেবী, কত দেখাবি 
তোর ঐ দেমাগ ভাই?
থাকিস আমার মনের ঘরে
লাজে কি মরিস তাই?

তোমার তুমি সঙ্গে থাকুক
ঘুমোই একা নীড়ে!
শূণ্যতা পাক পূর্ণতা আজ
যাক জোছনা ফিরে!


সত্যি বলছি...

খুশি, আমি তোমায় ভালোবাসি না
কে রাখে তোর খোঁজ! আমি?
চাঁদের দেশেও যাই মাঝে সাঝে
সেখানেও সাথে নেই তুমি!

আমার গল্প কবিতায়
যে আকাশজুড়ে থাকে, সে
কেউ না, সে আমার আমি
আমি অন্ধ নিজের প্রেমে!

তুমি মুক্ত বিহঙ্গ
যা যেখানে খুশি!
আমি তোকে আর না খুঁজি
আর না ভালোবাসি ...


প্রার্থনা ১

অনেক ত হলো আর কত কষ্ট দিবি?
সব ত দিলাম, আর কত দাম নিবি?
পিষ্ট হওয়া কাঁচালঙ্কার কত দাম হয়?
ঝলসানো শরীরটারে দেখাস পুড়ার ভয়?
দোহায় তোর, আর বলিস না ভালোবাসি..
এই বেশ আছি, আমি এই বেশ আছি...


প্রার্থনা ২
তুমি যদি শিশির হও, আমি ঠিক ঠিক হবো
মাটি কামড়ে পড়ে থাকা হলুদ দূর্বাঘাস..
আলু-থালু-কালো রাত্রিতে, অপেক্ষায়, প্রতীক্ষায়
বিবর্ণ হওয়া ভোরের বিষন্ন বাতাস...

কবিরা মরে যায়, পড়ে থাকে কবিতা!
আমি কবি হয়ে উঠিনি...
তাই মরি মরি করে বেঁচে থাকি
এই দুই একটা অ-কবিতাই ত লিখি
দোহায় তোমার, আমায় কবি হতে বলো না...


প্রার্থনা ৩

হিদয়ের তৃষ্ণা বেড়ে চলে দিন দিন
চক্রবৃদ্ধি হারে; বুঝে না বুঝে প্রতীক্ষা করি
রাতজাগা শিশিরের লাগি, 
অবুঝ ঘাসের মতোন...

ভালোবাসা এ্যাখোন পাখির বাসার মত বাচ্চা
ফুটানোর পর একলা পড়ে থাকে না; খাস
জমির মত দখল হয় সব উড়ে থাকা মন, 
পড়ে থাকা হিদয়, পুড়ে থাকা শরীর...

কার জন্য এই মন এমন উত্তাল হয় 
ঝড়ো বৃষ্টিরমতো? উতলায় আকুল 
হয় কার জন্য এই চাতক পাখির হিয়া? 
কারে দেখে নড়ে-চড়ে এই চাঁদ-ঝলসানো শরীর?

কার জন্য কবি এমন হলো জীবন্ত লাশ?
কার জন্যে কবিতা লেখে আর এক জীনানন্দ দাশ?
খোদা, তুই কয়া দে...আমি জানি না


এক জীবনের গল্প...
সাত-সমুদ্র-তের-নদীর পাড়ে বসি, আমি তোর
কাব্য লিখি; সমুদ্র সেচে অনিন্দ্য সুন্দর
মুক্তো দেবার ইচ্ছে ছিলো খুব, পারিনি;
ছেলেবেলায় কেমন করে ভেঙ্গেছিলো সে ঘর! 

গল্পটা খুব ছোট্ট; সুন্দর করে সাজানো, গুছিয়ে
গুছিয়ে লেখা; পড়া হয়নি কারো, তাই ফেলি মুছিয়ে
এই তুই-আমি, চিরদিন আমি-তুই, যাই বলিস্ তুই
শুধুই ত দূরে থাকা, মন-হিদয়ে দুজনে ল্যাপ্টে রই। 

কাছে থাকিস আর দূরে থাকিস, থাকিস ত এই মনে
তুই কবিতা পড়িস, কথা বলিস, থাকিস হিদয় গহীনে।
গান শোনিস‌, গান করিস, এসএমএস দিস, যখন লাগে একা
ভাল-মন্দে দিন কাটে যায়, নাই বা হলো দেখা! 

ঝড় আসে গো ঝড়ের পরে, বাতাস ভারি লাগে 
তোকে হিদয় মাঝে রেখে দিতে বড় সাধ জাগে?


ভয়াবহ এক দ্বীপে একদিন!

এক মেঘ বরষার আকাশে পাখনা মেলি একদিন,
দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া আবহাওয়ায় ঠিক জানি না
কেন ডানা মেলা-মেলি খেলি?

অন্ধকার সময় আমায় তাড়া করে!
পাষাণ, পাগলা কুকুরের মত!
দৌড়ে দৌড়ে ক্লান্ত আমি, ভাই বলি আজ কারে?

নিকশ কালো এক দ্বীপে বসে আছি একা
সঙ্গীরা সব পালিয়ে গেলে, আমায় একলা ফেলে
নাই কারো আর দেখা...

এক মেঘ বরষার আকাশে পাখনা মেলি একদিন,
অজানা দ্বীপে একা একা বড় কৌতূহলী
ঠিক জানি না কেন একা একা ডানা মেলি খেলি?

মেঘ বরষার ঘন ঘটায়, মনটা আমার 
আজ কেমন এলোমেলো ! 
খোদা! জানি না, আমায় নিয়ে তুমি কেন এমন খেলা খেলো ?


নিঃসঙ্গ মেঘ

একে অপরকে ছাড়িয়ে গেছে, ছুটে চলা দুটো গাড়ি
তার একটি তুমি হলে, অপরটা আমিই তো হব নারী! 

জীবন এমন, কেমন রুঢ়, জেনেছ আজ হয় ত তুমি
কখনো হয়ত তোমার তোমাকে জানতে চাইনি আমিই!
দূর থেকে আমাদের দেখে হয় ত মেঘলা আকাশ 
উঠেছে কেঁদে কী আবেগে ফেলেছে দীর্ঘশ্বাস!

এটাই জীবন, বাস্তবতা এখন জেনে গেছ এতদিনে তুমি!
কখনই চাওনি জানতে হিদয় গভীরে কী চাই এই আমি।
হয় ত একদিন তুমি আমি এ সব ভেবে ভেবে
বিড়ালের মত মিউ মিউ করে অকারণেই উঠব কেঁদে!

অসংখ্য বৃষ্টি কণা আমার হিদয় দখল করি
কী তান্ডব করিছে জান? হিদয় রক্তে ছড়াছড়ি!
মুক্তোর মত শিশির কণা কেবলই মিলিয়া যায়
তুমি পারলে নারী, আমি ভুলিতে পারলাম না, হায়!


শোধ

তুমি চলে যাও বলে,
যাই আমিও চলে...
এখন দু'জনই বন্ধনহীন....


এক পূণির্মারাত্রি..১

না, মনে হয় ঐ কথা বলিনি কখনো...
বল, কখনো কি চেয়েছি তোর ভালোবাসা?
কখনো কি বলেছি, 'ভালোলাগে কাছে আসা?'

না চেয়েছি মন, না তোর শরীর...
মন? তুই যারে খুশি দিস; 
তোর হিদয়?
তোর কাছেই থাক; আমার কোনটাই নেই প্রয়োজন।

তুই না বাসিস, শুধু আমায় ভালোবাসতে দিস
এক পূর্ণিমারাত্রিতে দু'দন্ড হিদয়ে টেনে নিস!


এক পূর্ণিমারাত্রি... ২

এমন রূপালি রাত বুঝিবা নামেনি এই পৃথিবীতে।
অপূর্ব জ্যোৎস্নার রাত আর রাধার গানে আজ আমি
এই পৃথিবীর সব থেকে সুখি মানুস, সুখি...

রাধা, আমার রাধা সহসাই আমার হাত ধরে ফেললে;
বললে, ''আজ সত্যি তোর হাত ধরে হাটতে ইচ্ছে করছে! 
এমন রাত আর পূণিমার চাঁদ আমি দেখিনি আগে; 
তুমি আমার, সব সময়ের আমার!''

মনের অজান্তে আমি ধরে বসি কাঁশফুলের মত অর 
কোমল এক হাত; আর আমার বাঁ হাত টা ওর চুল ছুঁয়ে 
ধীরে নামে কোমরে...রাধা তার মুখ ফেরায়ে
আমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখে, 'ঢেলে দেয় ভালোবাসার বিষ'!

হাত ছাড়িয়ে রাধা দু'হাতে আমায় ওর বুকে জড়ায়ে আবেগে
পিষ্ট করে ফেলে! আমরা আবারো ফিরে যাই ২১ বছর আগে......
ফিরি ভালোবাসায়, অনির্ধারিত অন্ধকার ঠিকানায়! রাধা কেঁপে
উঠে, আর বলে, 'আমায় যা খুশি কর, আজ তোমার দিন!'  

সাদা মেঘ যায় ভেসে, যেনো চাঁদের আলো ঢাকার অযথা চেস্টা করে, 
ভালোবেসে! 'বিমূর্ত এই রাত্রি আমার...নাহ! এ স্বপ্ন নয়, সত্যি ! 
এমন পূর্ণিমার আলো, চাঁদ কোথা পেলো? 'মৌনতার সুতোয় বোনা.'..
রাধা, রাধা, আমার রাধা, আজ আবার সত্যি ফিরে এলো!

রাধা বলল, এমন চাঁদের আলো, যদি মরে যাই তাও ভালো;
দ্যাখো, দ্যাখো! ঐ তো দেখো! ঐ মেঘ উড়ে চাঁদের কোল ঘেঁষে! 
রাধা আমায় জড়িয়ে বললে, 'আমি সব ছেড়ে চলে আসবো একদিন,
ঠিক এমন কোন এক রাতে আবার, তোমায় গভীর ভালোবেসে।'





আগুন আর জলের গল্প

চুলোর আগুনে দিলাম হাত, পুড়লো না এতটুকু!
দীঘির জলে দিলাম সাঁতার, ভিজলো না শরীর...
আগুন আর জল আকাশের হাজারো সন্তানদের
মতন কাছের করে নিলে, অ হ না তুই নিলি না!

বেকুব, তুই কি আসলে বুঝিস, ভালোবাসা মানে কি?




বন্ধু আজীবন ১

তুমি নেই পাশে ভাবতেই হিদয় আজ
মন কেমন যেনো বিষাদে ছেয়ে গেলো
রূপালি জোছনা যেনো উঠলো কেঁদে
আঁখি চাইল করে ছলো ছলো...
তুমি নেই পাশে বন্ধু আমার ভাবতেই
বিষাদে মন যায় ছেয়ে;
তুমি আমার হয়েও বল দেখি
দূরে, দূরে থাকো কেন মেয়ে???

বন্ধু তুমি আজও দূরে থেকেও
পাশে আছো বলেই লিখে যাই কবিতা!
কবিতায় লাগে সুরের ছোঁয়া
প্রাণ ফিরে পায় সব গান।
তুমি আছো বলেই আজও
স্বপ্নেরা ফিরে নীড়ে
মনের আকাশ জুড়ে
রঙিন ঘুড়ি ক্লান্তিহীন উড়ে!

বন্ধু তুমি, বন্ধু আমার বন্ধু তুমি আজীবন 
এই মন যখন তখন, ঠিক ঠিক যখন তখন
হিদয়ে পায় তোমারে, নিজের মত করে
যেনো তুমি কত কাছে, কত যে আপন।

জীবন ভারে হতাশ হয়ে যখন দিশেহারা
তুমি বন্ধু আলোর দিশা, তমসায় আলোর ধারা!

তোমায় দিয়েছি এই হিদয়
তোমায় দিয়েছি এই মন
তুমি বন্ধু ছিলে, বন্ধু আছো
তুমি বন্ধু আজীবন...



বন্ধু আজীবন ২

মৌনতাই যদি তোমার ভালোবাসা হয়
বন্ধু তুমি মৌন থেকো আজীবন!
যদি ভালোবাসো অন্তরে অন্তরে
তাই বেসে যেও, দিও না ফিরিয়ে মন!
কত ঝড় ঝঞ্জায়, জীবন কেটে যায়
টলে কি তবু একটু হিদয়, এত টুকুন মন
কি আছে বল হারাবার মতন আর আমাদের?
হারিয়েছি যখন এই এক জীবন...
তবুও আমি বন্ধু তোমার
তবুও তুমি বন্ধু আমার, হারিয়ে ফেলি মন
হারিয়ে হিদয়, যা আমাদের নয়
তবুও আমরা থাকি বন্ধু আজীবন...


বন্ধু আজীবন ৩


জীবনে জীবন মেলাবার না করি আর আয়োজন!
পহেলা বৈশাখ এই এক জীবনে কি খুব প্রয়োজন?
বন্ধু তুই ভালো থাকিস, তা আমি আর চাই না!
'আমার সোনার বাংলা...' ভুলেও আর গাই না।
দিন ফুরোলে সন্ধ্যা আসে, আমিও আসি নীড়ে
নতুন দিন, নতুন গান চাইনে আজ আর ফিরে!
কবিতা লেখা দিয়েছি ছেড়ে, ভুলে গেছি তোকে
গান বাঁধি না, গল্প বুনি না, আছি বহু সুখে।
ভালোবাসি না দোয়েল-শ্যামা, লাল-সবুজের পাড়
আঁধার থাকুক জীবনভর এই তোর চারিধার!
তোর আঁখিতে লেগে থাকুক মুক্তো আজীবন
এমন দোয়াই করে এখন আমার হিদয়- মন।
তোকে ছাড়া দিব্যি আছি, এই ত আছি বেশ
থাকবো আরো মহাসুখে, থাকবো অনিমেষ
তুই না থাকলে জীবন আরো কত ভালো হত!
কত মেয়ে এই হৃদয়জুড়ে গড়াগড়ি খেত!
.
.
.
.
ইচ্ছে করে এমন আরো অনেক মিথ্যে গল্প বলি
ইচ্ছে করে সব ভুলে গিয়ে একলা একা চলি!
মনের ভুলে কখোন দেখো চোখের জলে ভাসি
'ভালোবাসি না আর' বলতে গিয়ে বলি 'ভালোবাসি' ।

নববর্ষে এই দেখো মনে মনে হাতে হাত রাখি
আকাশনীলের বন্ধু তোকে হিদয় দিয়ে ঢাকি!
ভালো থাকিস পুরো বছর, থাকিস আজীবন
তুই সুখী হলে আমিও সুখী, দিতে হবে না মন!
তবুও বন্ধু তুমি; তুই, তুই, তুই আমার জীবন-মরণ
যত দূরে রও; তুই, তুই, তুই, তুই বন্ধু আজীবন...




অনামিকা

এক।
হাহাকার করে কি হবে আর?
দূরে আঁচড়ে পড়ি বার বার!
এই কাছে আসি, কত ভালোবাসি
তবু যোজন যোজন দূরে আমি আর খুশি।


দুই।

রূপা, তুই এবার বেঁধে ফেল খোঁপা
দুঃখটারে দিয়ে ছুটি, চল
ফেলে আসা দিন-রাত এক করে ফেলি
তুই আবার বুকে মাথা রেখে ঘুমুবি, বল?



একটি নীল পাখির প্রতি


কখনো কি বলেছি এই আমি তোমায় 'ভালোবাসি?'
ডেকেছি কি ভুল করে কখনো তোমায় 'প্রেয়সী'?
হাঁটবো কি আর নীলাকাশের নীচে এই জমানায়?
এতটুকু কি আশা আছে বিনিসূতার মালায়?

'না'ই হবে সব উত্তরগুলো জানি তুমি আমি
তবুও এই প্রশ্নগুলো আমাদের সব থেকে দামী
গাড়ির মত করে তবু শুধু ছুটে চলি
ভুল করে তব মাঝে মাঝে 'ভালোবাসি' বলি...!

আমি ভালোবাসি ভালোবাসা, তোমাকে না নিশ্চয়ই!
তোমার ভালোবাসা মিছে আশা, পাবার নয় কখনই!

তবুও ত ঝড় তোল আজো এই হিদয় মাঝে
সাদা শার্টের মত জড়িয়ে থাকে আমার সকল কাজে। 




ভালোবাসা ভালোবাসি...


[ফিডেল ডি' সাংমা-র 'কী?' কবিতার উত্তরে]

[১]
মাধবীলতার মতো যে দোলে মেঘ,
আমি সেই মেঘ ভালোবাসি..
ভালোবাসি স্নিগ্ধ-তপ্ত-দুপুর,
আর অস্ত রবির হাসি....

 হ্যা, আমি আকাশ পানে চাই !
আকাশ পাবার জন্য নয় নিশ্চয়ই;
আকাশে মেঘ থাকে, থাকে জোছনার জল , 
সে জলে অবিরাম স্নাত হই...

সুখের আশায় কষ্ট নিতে
কখনো যাই না ...
আকাশতলায় কষ্ট কুড়াই
ভুলে ঠিকানা! মনে করো কি তাই?

[২]

সত্যি বলছি, শূণ্য হাতে
ফিরে যেতে, চাইগো আমি চাই..
না পাওয়ার যে সুখ আছে
সে সুখ অন্য কোথাও নাই।

ভালোবেসে হাত বাড়ালে
হিদয় খুলে দেই;
দু:খ-সুখের সত্যি কথা
মন টা আর নিজের নেই।

তবু আসে যদি স্বপ্ন-কন্যা
হিদয় দুয়ার দিব খুলি;
বড়বেলার পুতুল খেলা! মরি! মরি!
কেমন করে ভুলি? বলো, কেমন করে ভুলি?



ফেলে আসা দিন ১ 

ফেলে আসা দিনগুলোর জন্য, মন কাঁদে তোমার?
তবে চলে এসো বচন, রাগেন আচ্চুর বাসায়;
মুগ্ধতা, চাঁপা, পিরিন, এপ্রিল, ফিডেল, লুই আর আমি
'চু-কাজি' নিয়ে তোমার অপেক্ষায়, জমপেশ আড্ডায়..


ফেলে আসা দিন ২ 

কত দিন চলে গ্যাছে, কত্ত রাতের তারা নিভে গ্যাছে...
আসে নি নতুন ভোর! উঠে নি নতুন সূর্য়;
রূপালি রাতগুলো মেঘে ঢাকা চাঁদ হয়ে আছে!
শা্ল-অরণ্যে আজ ‌‌‌‌'নেই আর নেই' এর হাহাকার...
পীরেন নেই, চলেশ নেই...এরপর কে নেই হবে?
সে আমি না তো? বোধ করি তাই...

ভালোবাসার দিনগুলো ফ্যাকাশে হয়ে গ্যাছে...
বিবর্ণ হয়ে গ্যা্ছে ভালোবাসার দিন...
সময়, তুমি এখন বড় দু:সময়....
কবিতা আমার, এখন কেবলই নেই আর নেই...
মুগ্ধতা নেই, চাঁপা নেই, মল্লিকা দি নেই...
আমাদের ওয়ানগালাটাও 'নেই' হবে না ত? 
জীবনে জ্যোস্না না থাকুক, পূর্ণিমা না থাকুক..
তুমি, তুমি, তুমি শুধু থেকো! থাকবে ত?



ভালোবাসার দু:খ বিলাস


একটি এ্যাস্টার ফুল, আমার জানালার পাশে বসত করে,
আমার ঠিক পড়শির মত! গান গায় আর হাসে;
আমি ভেবেই মরি হায়! সে ক্যামুনে গান গায়!
কাঁচের চুড়ির আওয়াজ তুলে, সে কি আমায় ভালোবাসে?

এক রত্তি ফুল, সে আমার নজর কাড়ে! সাধ্যি আছে তার;
সে কি কাব্য ভালোবাসে? যায় চলে, কোনো কথা না বলে...
আবার ফিস্ ফিসিয়ে কি বলে, কারো জানার সাধ্যি নাই,
সে হি..হি..করে হাসে, আর ঐ মাধবীলতার মত দোলে...

সে মোনালিসার মত হাসে, আবার এদিক ওদিক চায়
যেই না তাকাই এই আমি, আবার মুখ ফিরিয়ে রাখে;
‘তুমি আমায় ভালোবাসবে?’ এই ফুল আমারে শুধায়?
মরি, মরি, মরি! কবি মামা, আমি মরি লজ্জায়!

সে বড়ই অভিমানী! অভিমানী এই ফুল টা যে আজ
কার হিদয়ে থাকে? সখি কার হিদয়ে থাকে? কার হিদয়ে থাকে?




পূর্ণতার জম্ম প্রসঙ্গ

গ্ল্যাডিওলার  ভাঁজে ভাঁজে যে স্তনের সৌন্দর্য্য থাকে,
আমার আকাশ তা বলেনি কখনো; সৌন্দর্য্য টা
স্পর্শ করে বুঝতে হয় না; গিলে খাবারো বিষয়
নয়; অথচ সেদিন সেই আমাকে বললে, "খাও, খাও..
পূর্ণতার জম্ম হলে তোমার ছুটি!"

এখন আমার অনন্ত ছুটি! আজ পৃথিবী থাকে
হিদয়ে, হিদয়ে হারাবার....


এই রমণী হিদয়ে থাকে, ঘর করে না আর! 
দুই রেল লাইনের মত থাকি কাছাকাছি, তবু থাকি
যোজন যোজন দূরে; পূর্ব - পশ্চিমের খোঁজে 
থাকে সে ডুবে; যে ছিলো ঝিঙে লতায় জোছনা-ঝরা ফুলে
সে কেন গেল পাতা- ঝরা ফুলের কুমোড় ফুলের দলে? 
তবে কি সে ভালোবাসে নিভৃতে-নীরবে?

গোলাপের যে গন্ধ থাকে, তা যতই হোক না দামী!
কী মূল্য জোছনার, বলো, যদি মুগ্ধ না হই আমি?




কবিতার প্রতি 

আমার ইচ্ছেগুলো কেবলই ডানা মেলে অনন্ত আকাশে...
আর ভালোবাসা? কেবলই হারিয়ে যায় মেঘে মেঘে!
স্বপ্নগুলো দুমড়ে-মুচড়ে আই সি কিউ তে থাকে পড়ে
এই যে, অবন্তীর সাথেও দেখা হল বড় অবেলায়...

হাজার কথার ভীড়ে, কি কথা বল তোর চাই?
সহজ কথা, সহজ করে বলতে যত ভয়? 
আমি যারে হিদয় দিলাম, সে যে হিদয়ে আজ নাই! 
সূর্য ডুবে ডুবে, কথা দেবার সময় এখন নয়...
 মাধবীলতারাও এখন হারিয়ে যায়...
চারুলতাও আর আগের মত নাই 
ময়মনসিংহের  কফি হাউজ আজ শূণ্য পড়ে থাকে
বল কবি, কি কথা, কি কথা আজ তোর শোনা চাই? 

কি কথা তোর চাই কবি? কানে কানে বল শুধু একবার...
বন্ধু হব, চাস যদি, তোর সব ভালোবাসার কবিতার! 



সোনাঝরা দিন ...

এখন আমার একলা সময়, আমার একলা দিন কাটে,
ক্লান্তি এলেও সময় মেলে না, ভীড়তে পারি না ঘাটে! 

ব্যস্ত তুমি, ব্যস্ত আমি, ব্যস্ত চারিপাশ,
সোনাঝরা দিনগুলো তাই, বাড়ায় দীর্ঘ শ্বাস! 

ফেরা হয় না খেয়া ঘাটে, হিদয় ঘাটে আসি
সুখ পাখিরা তাই ডানা মেলে, কষ্ট রাশি রাশি! 






সত্যি বলছি

মুগ্ধতা, আমি তোমায় ভালোবাসি না!
কে রাখে তোর খোঁজ? আমি?
চাঁদের দেশে যাই মাঝে সাঝে!
সেখানেও পাশে নেই তুমি! 


আমার গল্প কবিতার আকাশজুড়ে যে থাকে
সে কেউ না; সে আমার আমি
আমি অন্ধ নিজের প্রেমে!
ভালোবাসি না আর, জেনো তুমি!

তুমি বিহঙ্গ, মুক্ত বিহঙ্গ!
যাও যেখানে খুশি
তোমায় না খুঁজি, না ভালোবাসি
তাই কাছে নেই, দূরে চলে আসি।




প্রেম ও পুনরজম্ম প্রসঙ্গ ...

কার হাত ধরে আগের জীবন টা  পার করে এসেছি
মনে নেই একদম! তবে এইটুকু মনে পড়ে বিধাতা
কে বলেছিলাম, 'এই মেয়েটারেই আরেক জম্মেও দিও!'

সোনার কন্যা ছিল  সে আমার, হিদয়ছোঁয়া মেয়ে...  

অনেক দূরে ছিলাম আমি, সে তবু ছিল অন্তর্যামী
মুঠোফোনের  আগের যুগেও সে ছিল  দামী...
আজ সে থাকে কত দূরে, একাকী পথ  চেয়ে
আমায় ফিরে পাবার জন্য এক জোনাকি দ্বীপ জ্বালিয়ে ।




আই মিস ইউ...
১.
তুমি এখনো কি আগের মতো
চশমা টা পড়তে ভুলে যাও?
ওখানেও কি কোন মেয়ের
রোজই বকা খাও?

সকাল-সন্ধ্যা ওষুধ খেতে
মনে তোমার থাকে?
তোমার টাকা-পয়সা, বই-পত্তর
কে গুছিয়ে রাখে?

ঐ দেশেও কি ভোরবেলায় পাখি
ডাকে? ফুল ফুটে কি বকুল শাখায়?
দুর্বাঘাষে কি শিশির কণা
সকালবেলায় রঙ ছড়ায়?



২.
অইখানে কি নদী আছে?
আছে সাগর হিমালয়?
মেঘেরা কি খেলা করে
সারা আকাশময়?

কবিরা কি কাব্য লিখে
তো-মা-র ঐখানটায়....?
[কেউ কি তোমায় পত্র লিখে
তোমার ঠিকানায়?]
বাবুইরা কি বাসা বুনে?
পাখিরা কি গায়?

কত কিছু তোমার কাছে
জানতে ইচ্ছে করে!
মিথ্যে করে একবার বলো
তুমি যাও নি আমাদের ছেড়ে?

হয় ত তুমি পাগলটাকে
ভালোই বাস না আর...!
মনে আছে, তোমার বুকে মুখ লুকিয়ে
কেঁদেছি কতোবার?



৩.
বলেছিলে, সব ঠিক হয়ে যাবে!
আমি ঐ বিশাল বুকটা খুঁজি;
কিছুই ঠিক হয়ে যায় নি আজোও
কি জানি, হয়তো সব ঠিক হবে আজি!

দু:খে খুঁজি, কষ্টে খুঁজি
ঐ বিশাল হিমালয়সম হৃদয়!
যেখানে এক দন্ড তপ্ত জল
ফেলতে পারি নিশ্চিত নির্ভয়!

তোমার বুকের উপর পা রেখে
দাঁড়াতে শিখেছিলাম, জানি মনে নেই তোমার!
তুমি সময় দিলে না আমায়...
তুমি দু:খ বুঝবে না আমার...

তুমি এত্ত ভুলোমনা?কত্ত দু:খ তোমার?
তোমার মনেই থাকে না
তুমি বললে ‘‌ড্রীম নেভার ডাইজ....’
তুমি নিজেই জীবন থেকে পালালে, না?



৪.
আচ্ছা, তোমার ওখানে কি দু:সময়ে
এখন কান্না-কাটি করো?
তোমায় কখনো কাঁদতে দেখিনি আমি!
তুমি কি কাঁদতে জানতে না?

আমার মা তোমায় খুব মিস করে!
জানি, তুমি করো না!
বোনেরা খুব ফীল করে!
জানি, তোমার সে হিদয় থাকে না..

আমরা তোমায় কত্ত ভালোবাসি...
জানি, তোমার সে মনটা আজ নেই!
তোমার কথা মতো ঝড় ঝঞ্জায়
দাঁড়িয়ে থাকি এ্যাই!

তোমার কথা মতো, অনেস্ট হতে গিয়ে
ইলেকশনেও ভোটারের ঘুষি-মুষি খাই...
বলো তুমি খুশি?
যদি কয়টা দাঁত-ফাঁত ও হারাই?

৫.
তোমার কথায় চলে, আজ উ্ল্টো পথে চলি...
আর জীবন বাঁচে না..
তোমার কথা শুনে আমি আর পান্নামনি
আর দেশেই থাকি না......


এখানে তোর সবাই..
তুমি পরপারে হুদ্দাই

তোমার কথা শুনে
শুধু খেয়েই গেলাম চড়!
অমি যিশুর মতো ঘার ফিরালাম...
ছেড়েই দিলাম ঘর!

স্বর্গে বসে তামশা দেখ
তুমি খুবই খুশি?
মিস্কিনেরা আজ বড়লোক
সুযোগ পেলে নাক বরাবর এরাও চালায় ঘুষি!

৬.
মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে
ফেলে আসি ক’টা দাঁত!
কেমনে ফেলি তুমিই বলো?
তুমি বেঁধে দিয়ে গ্যাছো দুই হাত!

মাঝে মাঝে মনটা বলে
তোমার লাইফ-ফিলোসোফিটাই ভুল!
পরক্ষণেই আবার ভাবি, পিষ্ট হয়েও
কত শত গন্ধ ছড়ায় ফুল...

তোমার বাড়ি-ঘর
করলে তুমি পর;
তবু সকাল-বিকাল-সাঝে
তুমি থাকো হিদয় মাঝে...

তোমায় বলি শোনো,
সময় নষ্ট করো না অকারণো..
তুমি মান-অভিমান ভুলে
আবার আসো চলে!

৭.
কিসে আসবে বলি, তুমি উড়োজাহাজ কেনো...
কিংবা একটা পিচ্ছি গাড়ি,
তোমার কথা শুনে, আমার টাকা পয়সা নাই..
সো হোয়াট! আমি ধার কিংবা লোন করতে পারি!

এত দিনে তুমি, কিছুই চাওনি
তুমি একটা কিছু চাও...
দিয়ে দিয়ে ক্লান্ত হয়ে কি
তুমি হয়ে গেলে উধাও?

সকাল-সন্ধ্যা-রাত-দুপুরে
তুমি যখন খুশি আসো.
প্লীজ বাবা, আমাদের তুমি
আবার ভালোবাসো, একটু ভালোবাসো...
প্লী...........জ.........




আমি নেই


দিন আসে দিন যায়
যায় কবি কবিতাও;
ফসকে যায় সব
স্বপ্নের চাবিটাও!

তারা ভরা পূর্ণিমায়
জোছনা নাইরে!
কত আর বসে থাকি?
এবার আমি যাইরে!

কত আর রাত জাগি
কবিতার জন্য?
সব তাই যাই ভুলি
ধান্ধা করি অন্য। 

আমি আর নাই ভাই
বন্ধু তোকেও গুড বাই!



সংগ্রাম চলছেই চলবেই...
(কবি ফিডেল ডি’ সাংমাকে)


রঙে ঢঙে ভঙে কবি
আলাদাই থাকবে
শয়নে স্বপনে
সবার কথাই ভাববে। 

ভুলবে না খুশিকে
ভুলবে না তোমাকেও,
রোজ রোজ বিকেলে
নেশা নেশা পলকেও! 

একা একা থাক না
রোদ-মেঘ-বৃষ্টি,
পড়ে যদি আসমানে
পড়ুক না দৃষ্টি।

বিভাবরী স্বপ্ন
যদি দেখে একেলা,
খাক না পেট পুড়ে
ডাল-ভাত  দু’বেলা… 

পায়ে হেটে যাই চাঁদে
নাই আর ক্লান্তি,
আরো হাটি আজীবন
পাও যদি শান্তি! 

বিকেলে সকালে
বসি একা অনুধ্যানে,
নিয়তি প্রিয়তি
নিয়েছি সব মেনে। 

রঙ ছিলো রঙ আছে
থাকবে চিরদিন,
স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে
আসি ছাদে প্রতিদিন। 

রঙধনু সব সময়
সাত রঙেই থাকবে
স্বপ্নের কবি সে
স্বপ্নই মাখবে… 

চলতে হয় যদি
একা একা আকাশে
উড়বেই স্বপ্ন-ঘুড়ি
হোক রঙিন কিংবা ফ্যাকাশে….

রোদ্দুর-জল-মেঘ
জল-মেঘ-বৃষ্টি,
থামবেই তান্ডব
আরো অনাসৃষ্টি। 

কুকুরেরা যায় মরে
স্বপ্নেরা মরে না,
কবি আর কবিতা
গাছে গাছে ধরে না… 

মরে যাবে সব প্রেম
তবু স্বপ্নেরা থাকবেই
ভালো থাকার সংগ্রাম
চলছেই চলবেই… 




ফারা

এক এক করে এলো আর গেলো 
এখনো আসে, এখো যায়
আমার একলা থাকা হল না!

ভালোবাসা ছুটে যায়
বন্ধুত্বও রয় না
সব মোহ মুহুর্মুহু কাটে
শুধু মরা ফারা কাটে না! 


আমার একলা থাকা হল না!





মৃত্যুদূতের প্রতি


পূর্ণিমার চাঁদ যদি জল ঝরায় সেদিন
একটু হবো খুশি;
কেউ যদি ফেলে এক বিন্দু জল!
কষ্ট পাবো বেশি...


যদি আকাশ ভারী করে,
দেয় কান্না জুড়ে
কেউ যেনো না আসে
ঘুম পাড়াতে, খুব কষ্ট করে...


যদি আসো রোদেলা দুপুরে
কিংবা দিনের কোন এক বেলায়;
বাড়িয়ে দুই হাত, কুর্নিশ করি
স্বাগত জানাবো তোমায়!


এসেছিলাম এই ধরায় এক বরিষায়
যেতে চাই পৃথিবী ছাড়ি ভরা জোছনায়...




এক। 


হাহাকার করে কি হবে আর?
দূরে আঁচড়ে পড়ি বার বার!
এই কাছে আসি, কত ভালোবাসি
তবু যোজন যোজন দূরে আমি আর খুশি।


দুই। 


রূপা, তুই এবার বেঁধে ফেল খোঁপা
দুঃখটারে দিয়ে ছুটি, চল
ফেলে আসা দিন-রাত এক করে ফেলি
তুই কি আবার বুকে মাথা রেখে ঘুমুবি, বল?




জোছনা যায় ফিরে......


আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি নামুক
জ্যোৎস্না পড়ুক গায়
জোনাকিরা গাইতে থাকুক
এই হিদয় আঙিনায়... 

সন্ধ্যা নামুক দিন পুরোলে
পুরো আকাশ জুড়ে!
সন্ধ্যা-তারায় কি আসে যায়
আলো উছলিয়া যদি পড়ে? 

যে যাবে সে চলেই যাবে
ভাবনা এত কিসে?
পাই বা না পাই, নাই ক্ষতি নাই
যদি একটু ভালোবাসে!

জ্যোৎস্না দেবী, কত দেখাবি
তোমার দেমাগ ভাই?
থাকিস আমার মনের ঘরে
লাজে মরিস কি তাই? 

তোমার তুমি সঙ্গে থাকুক
ঘুমোই একা নীড়ে!
শূণ্যতা পাক পূর্ণতা আজ
যায় যাক জোছনা ফিরে!




সেই ছিলো ভালো...


(রামু'র অসুর গুলোর জন্য)


যদি আমার জম্ম না হতো, তেমন কিছুই
যেতো আসতো না; তবুও পৃথিবীতে ভোর
হতো, সন্ধ্যা নামতো, সূর্য উঠতো প্রতি বিকেল... 

আমি যদি কবিতা নাও লিখতাম, কিছুই
যেতো আসতো না; তবুও নেড়ি কুকুরেরা
ঘেউ ঘেউ করতই; আপনজনেরা ভুল বুঝতই! 

আমি যদি তোমায় ভালোবাসি নাও বলতাম! 
তবুও কোকিল ডাকত, ফুল ফুটত, ভ্রমরেরা
ফুলে ফুলে উড়া উড়ি করতই, মোনালিসা
তাঁর অমলিন হাসি ঠোঁটে রাখতোই। 

আমি যদি মানুষ না হতাম! 
কিছুই যেতো আসতো না
তবুও আমার হিদয় পুড়তই কারো না কারো জন্য!

রামুতে যেমন আগুন জ্বলে, সব পুড়িয়ে দিলো সব
তেমনি পুড়ে যেতো হিদয়ে থাকা ঈশ্বর!
জম্ম না হওয়া ভালো ছিলো! 



কেউ না ভালোবাসুক



ভালোবাসা যাকে তাকে বিলাবার জিনিষ নয় জানি
আমি ত যাকে তাকে'র দলে পড়ে গেছি আগেই!
তুই তোর ভালোবাসা যোগ্য কারো জন্য তুলে রাখিস,
আমি যোগ্য নই তোর পাশে দাঁড়াবার, কাছে বসবার।  

শুধু তুই কেন? কেউ 'ভালোবাসি' না বলুক কোনদিন
পূজা, হিদয়ের যে পূজার বেদি থাকে, তুই সেখানে থাকিস 
আমি নিত্য তোকে এসে দেখে যাবো, পূজা দিয়ে যাবো
কিন্তু আর চাইবো না তুই অপেক্ষা করবি, ভালোবাসবি! 

আমার জন্য কেউ অপেক্ষা না করুক, আমি মনে প্রাণে
চাই। যদিও জানি কেউ একজন প্রতীক্ষায় আছে...  
সে আমার প্রেম, জম্ম-জম্মান্তের ভালোবাসা, 
মেয়েটির নাম শুনবে? ওর নাম মুক্তিদূত! 





হ্যালুসিনেশান...


কেউ কি কখনো একা হাটে?
হয় ত হাটে কেউ কেউ
কখনো সখনো মনের ভুলে;
আমি হাটিনি কোনদিন... 
আজও ত হাটলাম অন্ধকারে...
ভেবেছিলাম একা; একাই হাটবো...

কোথাও কেউ নেই ভাবতেই
কেউ একজন আমার পাশে হাটলো,
কথা বলল, যেমন সব সময় কথা বলে! 


কানে শুনি কম, সত্যি বলছি 
ইদানীং কম দেখি চোখেও
তবুও পাশে যে মানুষটা হাটে
তার পায়ের আওয়াজ ঠিকই পাই! 


রূপা, তুই কি সত্যি সত্যি আমার
পায়ের তালে তাল মিলিয়ে হাটিস প্রতিদিন? 

আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি না ত?




স্রষ্টার সাথে একদিন


একদিন আমিও মরে গেলাম...
এক লোকের সামনে আমাকে
হাজির করা হলো--

জোস্নালোকিত রাত!

তিনিই তাঁর পরিচয় দিলেন..
'আমি তোমার সৃষ্টি্কর্তা!
'আমি না তাকিয়েই সালাম দিলাম...

এত এত আলো, তাকাতে পারছিলাম না আমি! 

-তোমার নাম কী?
-আমি বললাম আমার নাম... 
-আরো কোন নাম?
-মেঘ রোদ্দুর
-আরো কোন নাম?
-নকরেক
-আরো কোন নাম?
-নকরেক আব্রি
-আরো কোন...?
-মিঃ কোটেশান
-আরো কোন...?
-বন্ধুদের দেয়া অনেক নামও বললাম...
-সব বলো..
-আমি সব গোপন নামও বললাম...
-আরো কোন নাম?
-অধ্যাপক অঞ্জন ম্রং তো 'শালবন'ও ডাকে! 
-আরো কোন নাম?
-কেউ কেউ বিল্লু নামেও...
-আরো কোন নাম আছে? 
-মনে পড়ছে না ঠিক এই মুহূর্তে!

-এই নামের কাউকেই আমি ডাকিনি!
ওঁরা ভুল করে তোমাকে নিয়ে এসেছে?
-আপনার মৃত্যুদূতেরাও ভুল করে???
-তাই ত দেখছি!
স্যরি, তুমি ইচ্ছে করলে ফিরে যেতে পারো...
-আমি কি একটু ভেবে...
-নিশ্চয়ই! তোমার আসল ঠিকানা কিন্তু এটিই...
-হুম! আই নৌ মাই লর্ড! 
-কী ভাবতে চাও তুমি?
-ভাবছি ফিরে গিয়ে কী হবে?
আকাশ ত আর আমার হবে না!
নীলপদ্ম ত আর আমার জন্য ফোটে না...
গহনা ত আমার জন্য প্রতীক্ষা করে না...
কারো সেলফোন আমার জন্য বেজে উঠে না...

-চাও, পাবে..., কিছু চাইবে? ? ? 
আমি সাহস করে তাঁর দিকে এইবারই
প্রথম মুখ তুলে তাকালাম! কিছু চাইব বলে... 
-তিনি বললেন, বলো...
-আমি আবারো সাংসারেক হতে চাই, মাই লর্ড!
-কেনো? মানুষ কি আবার পেছনে হাটে?
-তুমি আমাকে হাটাও, তুমি আমাকে হাটাও...
-বলো, আসলে তুমি কি চাও?
-আমি চাই ...

ঘুম ভেঙ্গে গেলো...




  
চলে যায় দিন


অপরূপা রূপা, আজো বাঁধে নি খোঁপা 
চাঁদ মাখা মুখ নিয়ে তাকিয়ে থাকে
গারো পাহাড়ের সীমান্তে ছুঁয়ে ছুটে চলা
সিমসাং নদীর দিকে!

ও যেনো ক্ষিপ্র বেগে
বয়ে চলে স্রোতের বিপরীতে খুব খুশি! আমি
অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি, মুগ্ধ চোখে।  

গ্রীস্ম পেরিয়ে বর্ষা গেলো, শরত হেমন্ত চলে
যায় ধীরে; শীত এলো ফিরে। শীতের শেষে
বসন্ত আসবে প্রকৃতির নিয়মেই... 

যে দিন যায়, একেবারেই যায়! হায়
খুশি, চলে গেছে ফিরবে না বলেই
বসন্ত আসে ফিরে ফিরে,
খুশি ফেরে না! বসন্ত আসে,
বসন্ত যায় শুধু চলে

যায় আমাদের ফেলে আসা দিন। 





স্বপ্নচূড়া...

মেঘের দেশে যদি আসো ভুল করে কোনদিন 
আমি তোমায় স্ট্যাইটান আইল্যান্ড দেখাতে নিয়ে
যা্ব। স্ট্যাইটান আইল্যান্ড যাবার জন্য হাডসন
নদী পার হতে হয়; কোনো ডলার লাগে না ওপাড়ে
যেতে! যাবার পথে হাডসন নদীতে নীলপদ্ম দেখাবো
তোমায়। নীল নীল ফুল খুব ভালোলাগে, তাই না?  


যদি এই স্বপ্নের দেশে আসো কোনোদিন, তোমায় এলিস
আইল্যান্ড আর বন্ধুত্বের মূর্ত প্রতীক স্ট্যাচু অব লিবার্টি
দেখাতে নিয়ে যাবো; তোমার হাত ধরে, তোমার পায়ের
তালে তাল রেখে হাটবো অনেক দূর; ওতে হাজার ডলার
যদি খরচও হয়, হোক; প্রয়োজনে আমার দিনের তালিকা
থেকে কফি খাওয়া আজীবনের জন্য ছেড়ে দেবো! তোমার জন্য। 

যদি আসো কোন দিন বন্ধু, কোন এক মৌন শারদ-প্রাতে আমি তোমাকে নিয়ে যাবো 'প্রিয় বাংলা'র প্রিয় এক মেলায়; দেখবে, এই যান্ত্রিক নগরীতেও বাংলার মানুষ কত রকম আমুদে নাচে, গায়, গল্প করে; কত বন্ধু আনন্দে কাটায় একটি দিন! আমি জানি, তুমি নিজেকে হারিয়েই ফেলবে বৈচিত্র্যময় মেলায় হাজারো মানুষের ভীড়ে; মনে মনে হয়ত গাইবে 'অনেক কথা..
যদি আসো কোনোদিন এই সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের দেশে, আমি
তোমায় জাতিসংঘের হেড কোয়ার্টার দেখাতে নিয়ে যাবো!
তুমি বানকি মুন এর সংগ্রামমূখর অতীত জানো নিশ্চয়ই?
অনাহারে, অর্ধাহারে মানুষ হয়েছেন তিনি। তোমার-আমার
মেয়ে একদিন এই জাতিসংঘের মহা-সচিব হবে--এমনটাই
আমার স্বপ্ন! আমার সমস্ত হিদয়-মন সেদিনের প্রতীক্ষায়..  

অহনা, আমি আমার বন্ধুদের জন্য অপেক্ষা করি; সুন্দর আগামীর
জন্য অপেক্ষায় কেটে গেলো জীবনের বেশির ভাগ সময়! তোমার
জন্য অপেক্ষা করি না আমি, একদম না, প্রতীক্ষা করি, প্রতীক্ষা...





না


কী মনে করি নিজেকে? জানতে ইচ্ছে করে? 
আর যাই মনে করি, কবি মনে করি না
কবিদের ভাল্লাগে না, পাগল পাগল মনে হয়;
তাই আমি কবিতা লিখি না, যা লিখি সবটাই
অকবিতা। সেগুলো তোমার জন্য লিখি... 

এই ত সেদিন রাতে উথাল-পাথাল করলো মন
দম বন্ধ হয়ে আসলো কেমন
আমি ঘরিতে চোখ রাখি, রাত ৯ টা,
তোমার ওখানে স্নিগ্ধ সকাল।
ভারজিয়াতে গাছ আর গাছ, লোকালয়েও
বন আর বন। গাছের দিকে তাকালেও,
আমি তোমায়দেখি!

আসলে আমার রাত আমি হিসেবে আনি না!
তোমার দিনটাই আমলে রাখি!
কেন?
জানি না ত! 
এই ত সেদিন, আমি হাটছি আর ভাবছি
আমি একা একা হাটছি কেনো?
হঠাত কেউ একজন বলল, 'একা হবে কেনো?
এই ত আমি!' আমি চমকে উঠিনি, একটুও না!
সব সময় ই ত কেউ একজন পাশে থাকে,
গা ঘেঁষে হাটে পাশে পাশে! ফিসফাস করে
কাঁচের চুড়ির আওয়াজ তুলে কথাও বলে... 

হ্যাঁ, ঐ ত সেদিনও কেউ ডাকল, 'হিমু, এ্যাই হিমু!
'আমি শুধু বললাম, 'আমি হিমু না, আমি...
-কী বলো? তুমি হিমু, তুমি হিমু...
-হিমু না, হিমু না, আমি হিমু না
-তোমার মাথা পুরোটাই গেছে, ফিডেল দাকে আজ আমি...
-হাহাহা...পাগল্টাকে আমার পিছে লেলিয়ে দিও না
-কী? ফিডেল দাকে পাগল বল্লা তুমি! তুমি একটা...
-অকবি। কবিরা সব পাগল, জর্জ, এপ্রিল, বচন, লুই, হিমেল
সবাই কবি। রুনাও কবি, টগরও কবি, রুবিও কবি

শুধু আমি কবি না...আমি একা অকবি। 

-রোদন বিয়াই? ও! সে ত জাত কবি, সে মনে মনে কবি
পুরা কবি, একদম কবি, শতভাগ কবি... 

-আমায় ছুঁয়ে দেখো, একটু ছুঁয়ে দেখো...
-দূররর...মেয়ে মানুষের হাত ছুব কেন?
-আমি মেয়ে মানুষ না
-তাহলে?
-শুধুই মানুষ, তোমার মত আমিও মানুষ ...

আমি ছুঁয়ে দেখলাম, কী হিম শীতল সে হাত!
পোড়া হিদয় আর মনটা কেমন জুড়িয়ে গেলো
মানুষের হাত ধরলে এত শান্তি লাগে, ফীল করিনি
আগে! কী অদ্ভূত ভালোলাগা... 

হুশ ফিরে এলে দেখি, একা চেয়ারে হেলান দিয়ে আছি...
আর আমার কবিতার খাতা পরে আছে টেবিলের নীচে..




বন্ধু তোমার জন্য  

বন্ধু দিবসে এক বন্ধুকে 

আমার আজো ইচ্ছে করে পাখি হয়ে আকাশনীলে উড়ি
কবিতা লিখে সকাল-বিকেল তোমায় পাগল করি!
ইচ্ছে করে রাজা হয়ে, তোমায় করি তুলনাহীনা রানী
চাঁদ-তারা সব তোমার পায়ে লুটাক, লুটাক নোবেলখানি! 

চাঁদের দেশে জমি কিনে বাড়ি করি দিই
ইচ্ছে করে চলে আসি আজ এক নিমিশেই
তোমার জন্য সাতসমুদ্র নস্যি আমার কাছে
তুমি বিনে এই পৃথিবী শুধুই মিছামিছে।

তোমায় না পেলে মনে হতো সূর্য দীঘল কালো!
তোমার পাশে বসার জন্য কী করতে হবে বলো?
তোমার জন্য যেতে পারি সাগর হিমালয়
নীলকমল হতে পারি তুচ্ছ করি মৃত্যু ভয়! 

রবি-নজরুল-জীবনানন্দ-শক্তি সবই হতে পারি!
শুধু যদি বন্ধু হও আমার, ওহে ফাজিল নারী...! 




ভালোবাসার সাতকাহন


তোমায় ভাললাগে না, এত তুমি অনেক আগেই জানো,
তবুও ঘেন্না করি না মোটেও ! টাকায় টাকা আনে, ঘেন্নাটাও 
টাকার মতই ...। তোমার অবশ্য জানবার কথা নয়, ভালো 
জানি না আমিও, বোধ করি। বইমুখের দেয়ালে নাম আসতেও  
ত  যোগ্যতা লাগে! তোমার সে রকম যোগ্যতা কী আছে?  
ফিলুবার মত নেড়ি কুকুরেরা  দেওয়াল পাহারা দেয় এখন!


নদী এখন অন্যের ঘর করে, ইচ্ছে করলেই  আার আগের মতন
তিরিং বিরিং করে জল নিয়ে আস্তে পারবে না; আর তুমি হলে 
ক্রেইজি গ্লু; তোমাকে মরুস্বারু, গীতাদের কাছ থেকে বলে কয়ে  
ছুটানো সহজ যে হবে না মোটেই, ভালো জানি; তুমি শঙকিত 
কেন এত ইদানিং? কুকুরেরা পিছু নিয়েছে বলে? অরা কামরায় না!
বিলিভ মি!বিশ্বাস রাখো হিদয়ে; ভালোবাসা মাটিতে গড়াগড়ি খায় না এ্যাখোন! 


তোমায় ভাললাগে না আমার সত্যি; কিছু খোঁজে পাই না তোমার ভেতরে  বাহিরে!
তোমার গল্প কবিতায়  হ্যামিলিয়নের বাঁশির সুর আছে মনে করাটাও ঝুঁকিপূর্ণ ঠিক
এই মুহূরতে! আর তোমার হাসি নীরুর হাসিকে স্মরণ  করিয়ে দেয়! রোম শহর পুড়ে
তবুও কেউ কেউ হাসে! মামা, তবুও তুমি তুমি-ই; ফকীর হ তুমি, তবুও ভালোবাসি...




স্বপ্ন, ফেইসবুক ও খোকা...


- মন খারাপ খুব আজ, তাই না?
- না, খারাপ না। মন এত ঠুনকো বিষয় না...
- তাইলে এত মন খারাপের গান শুনছস যে?
- শোনা নিষেধ ? না তোর কোন  অসুবিধা?
- বেশি গেজাবি না, কইলাম ...
- মানে? কই গেজাইলাম!
- চুপ কর! মন খারাপ না তোর, জাস্ট না বলবা...
- আমি ত তাই বলসি...
- মন ঠুনকো না ভারি আমি জিগাইসি? পণ্ডিত ...
- সব সময় তুই একলাইন বেশি বুঝিস ক্যান?
- তুই যা বলছিস তাই বলসি...
- অফ যা তুই, ভাগ ফাজিল কোথাকার?
- না গেলে কি করবি শুনি ?
- থাপ্পড় লাগাব?বেয়াদপ মেয়ে...
- এত নিচে নামতে পারিস তুই ?
- গাল টা মানুষের শরীলের নিচে থাকে না গাধা...
- হা হা হা হা...
- হাসবি না একদম...
- হাসব না ত কান ব? সরিল না গাধা, শরীর ...
- শরীরে এত আগ্রহ তোর?
- অসহ্য লাগছে, তুই খুব ছোট লোক, খুব ইতর ...
- কথা বাড়াবি না, ফুট, ভাগ, যা...
- কি করবি, শুনি?
- লাত্থি খাবি, বান্দর 
- তোর চরিত্র এত খারাপ!
- কী? আমার চরিত্র...
- থাপ্পড় দেয়ার গাল না হয় উপড়ে, লাথি ত নিচেই...
- আর নিচে নামাইস না আমারে...
- হা হা হা...হা হা হা...ডরাইস? হা হা হা...
- হে হে হে! কী হাসি নির্মল হাসি! একটু ভাল করে হাসতেও পারিস না?
- বাদ দাও ফাজলামো। সিরিয়াসলি, মন খারাপ?
- খুব খারাপ, অসম্ভব খারাপ, ভয়াবহ খারাপ...
- শালা, এইডা এতক্ষণ লাগলো কইতে ?
- অহনা,  তোর মত কেউ জিজ্ঞেস করে না রে! 





শাহীনা, দেখো মানুষের কান্না...


মানুষ পুড়ে, জ্বলে আগুনে পড়া লাকড়ির মতন!
তবুও কিছু অসভ্য মানুষ এর ওর দোষ খোঁজে
সময় কিছু নষ্ট কিছু ভ্রষ্টের দখলে চলে যায়...

লাশের উপর দাঁড়িয়ে কিছু রাজনীতিক জীব
হরতাল ডেকে চলে, ওরা জানে না নিজেরা
কোন ডালে বসে, করাত চালায় নির্দ্বিধায়!

শাহীনা, ১১০ ঘণ্টা লড়াই করে বেঁচে যখন ছিলে
তুমি মরবে না আর! ১৬ কোটি মানুষের প্রার্থনা
খোদা যদি না শোনে, সে খোদা পাষাণ পাথর!


তুমি ফিরবে, আমরা প্রার্থনা করি, ফিরবে?
তুমি হাজারো মানুষের বেঁচে থাকার প্রেরণা হবে
আমরা সে মুহূর্তের জন্য  প্রতীক্ষা করি।

শাহীনা, তুমি এভাবে চলে যেতে পারো না;
তুমি ফিরে এসো, অসহনশীল অসভ্য সমাজে
দেখে যাও, সংগ্রামী, সাহসী মানুষের জন্য, 
অসংখ্য মানুষের হৃদয়ভারি করা কান্না... 




'দূরের গল্প'



 কালোমেঘে কি বৃষ্টি থাকে?  
নীল মেঘে কি জোছনা?
শাদা মেঘে কি স্বপ্ন থাকে?
রঙ্গিন মেঘে কি আল্পনা? 

ভালোবাসি মেঘবৃষ্টি
সূর্যটারেও বাসি...
নীল জোছনা মুগ্ধ করে
হয় ত একটু বেশি! 

শাদা মেঘে স্বপ্ন মেখে
আকশ- গাঙে ভাসি
পাই না তারে হাতের কাছে
খুশি তবু খুশি।  

ভালোবাসি দূরের তারা
আলোয় ভরা রবি,
একটু বেশি চাঁদের আলো
হিদয় জুড়ে যার ছবি।  

রবির রশ্মি ঠিকরে পড়ে
আমার বিছানায়...
খুশি যদি শশি হত
উছলে পড়ত কি গায়?   

সূর্য - গ্রহ, চন্দ্র- তারা
আমায় পাগল করি'
হাতের গল্প, ছুটে অল্প 
আমি দূরের গল্প পড়ি...



No comments: