দি অ্যালক্যামিস্ট
সাম্প্রতিক সময়ে আমার সাথে এক প্রবাসী তরুণের সাথে পরিচয় হয়। বয়ষ ২০ কি ২১ হবে। তার নাম মামুন হাসান। তিনিই ‘দি অ্যালক্যামিস্ট’ বইটির বাংলা অনুবাদ করেন। নিউ ইয়র্ক সিটি ইউনিভাসিটির কলেজে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছেন তিনি। তিনিই আমাকে বইটির কথা বলেন। তিনি আমাকে পুরো ইংরেজিতে অনুবাদ করা উপন্যাস টা ইমেইলে পাঠান। তাঁর বাংলা অনুবাদ টা দেখেছি। খুবই অসাধারণ। মজার ব্যাপার হলো এই পাওলো কোয়েলহো-র নাম টা আমি এর আগে শুনিই নি! বোকা বোকা মনে হলো নিজেকে....
‘দি অ্যালক্যামিস্ট’ পাওলো কোয়েলহো-র প্রতিকী উপন্যাস কথা সাহিত্যে এক অনুপম সৃষ্টি নি:সন্দেহে। পাওলো কোয়েলহো একজন ব্রাজিলিয়ান লেখক। উপন্যাসটি তিনি পর্তুগীজ ভাষায় লিখেন। ১৯৮৮ সালে উপন্যাসটি প্রকাশিত হবার পর বিশ্বের প্রায় সব ভাষাতেই অনূদিত হয়েছে। ১৫০ টি দেশে ৬৫০ কোটি কপি বিক্রিও হয়েছে বইটি। সে অর্থে বইটির পাঠকপ্রিয়তা প্রশ্নাতীত। বিশ্বে সর্বাধিক বিক্রিত উপন্যাসের তালিকায় এই উপন্যাস এতে সন্দেহ নেই।
উপন্যাসের প্রধান চরিত্র হলো স্যান্টিয়াগো। কিশোর স্যান্টিয়াগো একজন মেষপালক। সে বার বার একটি স্বপ্ন দেখে। ঐ স্বপ্নের রহস্য জানার জন্য সে এক জিপসির কাছে যায়। সে জিপসি তাকে জানায় মিশরের পিরামিডে গুপ্ত ধন আছে। জিপসি তাকে তার মেষগুলোকে বিক্রি করে মিশরে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।
স্যান্টিয়াগো যে স্বপ্নটি দেখে তা হল, ‘তুমি যদি কিছু পেতে চাও তাহলে সমগ্র বিশ্ব তোমাকে তা পেতে সহায়তা করবে।’ উপন্যাসটির দর্শন টাও আসলে তাই (আমি যদি বুঝে থাকি)।
মিশরের যাত্রা পথে স্যান্টিয়াগো প্রেম, প্রতিকূল পরিবেশ পরিস্থিতি, অনেক সুযোগ-সম্ভাবনা, বিপদ-আপদ,বিপর্যয়ের মোকাবেলা করে। এসবের মধ্য দিয়ে সে নিজেকে আবিস্কার করে। নিজের এবং পৃথিবী সর্ম্পকে জানতে শেখে, শিক্ষালাভ করে। কৌতুহলী কিশোর মেষপালক নিদিষ্ট গান্ডির মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ রাখার পরিবর্তে তার স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দিয়ে বেরিয়ে পড়ে রহস্যের সন্ধ্যানে। শেষে উপলদ্ধি করেছিলো ঝুঁকি গ্রহণ করা ছাড়া কিছুই অর্জন করা যায় না এমন কি ব্যক্তি স্বাধীনতাও না।
রহস্যময় এক রাজ্য সালেম। তার রাজার সাথে স্যান্টিয়াগোর দেখা। তিনি তাকে পৃথিবীর আত্মা সম্পর্কে বলেন।
এক ইংরেজ ভদ্রলোকের সাথে তার দেখা। সে ভদ্রলোক একজন খুব বড় রসায়নবিদ হবার স্বপ্ন দেখেন। তাই তিনি একজন বিখ্যাত রসায়নবিদের সান্নিধ্যলাভের জন্য যাচ্ছিলেন। ঐ রসায়নবিদের বয়স ২০০ . তাঁর অদ্ভূত ক্ষমতা। তিনি যে কোন ধাতুকে সোনায় পরিণত করতে পারতেন এমন গল্পও ছিলো।
এমন সব কাহিনী...এক নি:শ্বাসে পড়ে ফেলবার মত উপন্যাস। পড়ে দেখতে পারেন আপনিও।
No comments:
Post a Comment